ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
শত প্রাণ নিয়ে শেষ হলো ষষ্ঠ ধাপের ভোট..!
সহিংসতা, প্রাণহানি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, জাল ভোট আর অনিয়মের মধ্য দিয়েই আজ শেষ হয়েছে ষষ্ঠ অর্থাৎ শেষ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। গত ২২ মার্চ প্রাণহানির মধ্য দিয়ে নবম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছিল। আজ শনিবার সেই প্রাণহানির মধ্য দিয়েই শেষ হলো নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ছয়টি ধাপের ভোটযজ্ঞ। এর মধ্যে চার হাজার ৮৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের লড়াইয়ের ময়দানে ঝরে গেছে শতাধিক প্রাণ।
আজ সকাল ৮টা থেকে সারা দেশে একযোগে ৬৯৮টি ইউপিতে ভোট শুরু হয়। টানা ভোট চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। শেষে একটু বিরতি দিয়ে শুরু হয় ভোট গণনা। নিজ নিজ কেন্দ্র থেকেই গণনা শেষে নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করবেন সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।
আজ ভোট শুরুর দুই ঘণ্টা পর ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরভৈরব তোফায়েল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপির সমর্থক ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. নাসির (১৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো চার ব্যক্তি। আহত হয়েছেন পুলিশের তিন সদস্য।
শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ শুরুর কিছু সময় আগে শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয় ১০ জন। নিহতের নাম মো. ফারুকের (৩৫)। শেষ ধাপের নির্বাচনে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন ২৪ জন, যাঁরা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। এর বাইরে বিভিন্ন স্থানে ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ছিল সবেচেয়ে বেশি সহিংসতাপূর্ণ। প্রাণহানির দিক থেকে অতীতের যে কোনো নির্বাচনকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের নির্বাচন। পাশাপাশি এবারের নির্বাচনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের ‘হিড়িক’। এর আগে আর কোনো নির্বাচনে এত বেশি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়নি। এবারের নির্বাচনে দুই শতাধিক প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ ‘কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন গোলযোগের ঘটনা’ ঘটলেও এ নির্বাচনকে ‘শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু’ বলে উল্লেখ করেছে। অপরদিকে বিএনপির দাবি, বর্তমান সরকারের হাতে কোনো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন যে হতে পারে না, ইউপি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও তা প্রমাণিত হয়েছে।
প্রথমবারের মতো দলভিত্তিক এ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, জাল ভোট, ব্যালট ছিনতাইসহ সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে কঠোর অবস্থান না নেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকারও ব্যাপক সমালোচনা করেছে বিএনপির পাশাপাশি দেশের সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা।
এর আগে প্রথম ধাপে ৭১২, দ্বিতীয় ধাপে ৬৩৯, তৃতীয় ধাপে ৬১৫, চতুর্থ ধাপে ৭০৩ ও পঞ্চম ধাপে ৭১৭ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনিয়ম ও সহিংসতার কারণে কিছু ইউপির নির্বাচন আংশিক বা সম্পূর্ণ বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত বৃহস্পতিবার র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল শুরু করেছেন। তাঁরা থাকবেন ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে রয়েছে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন