এক পুরুষ যৌনকর্মীর স্বীকারোক্তি!
শরীরযাপন: আমি যেখানে যাই, যৌনতা ধাওয়া করে
ধীরে ধীরে নেমে গেল গাউন। তার পরে খুলতে শুরু করলেন শার্ট। ক্রমশ অনাবৃত হচ্ছে পিঠ। এবার কোমর থেকে সরছে পোশাক। নিতম্ব জুড়ে শুধুই দাগ, দাগ আর দাগ। একটা দাগ দেখে স্পষ্ট বুঝলাম, কামড় পড়েছিল এখানে।
ব্ল্যাকমেল পর্ব থেকে নিষ্কৃতি পেতে আমি দার্জিলিংয়ে। মহাকাল মন্দিরের সেই অন্ধকার সন্ধেয় আমার দেখা তার সঙ্গে। আমার যাবতীয় সাহায্য খারিজ করে বৃষ্টির মধ্যেই সে এগিয়ে গেল অন্ধকার ম্যালের দিকে। অতঃপর…
আমি পিছু নিলাম। প্রায় দৌড়ে পৌঁছে গেলাম একেবারে পাশে। কনুইয়ের কাছটা চেপে ধরে বললাম, ‘‘আর একটিও শব্দ নয়। আমার সঙ্গে আসুন। এই রাতে একটা বিপদে পড়বেন নাকি?’’
ধীরে উত্তর এল, ‘‘আমি বিপদের ভয় পাই না।’’
‘‘ভাল কথা। কিন্তু আমি পাই। প্রচণ্ডরকম ভয় পাই। এইবারে চলে আসুন। আপনাকে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন। আপনার কোনও ক্ষতি করব না।’’
‘‘সেটা আমি বুঝেছি। কারণ…’’
‘‘কারণ?’’
বৃষ্টির মধ্যে অন্ধকার চিরে দু’জন এগিয়ে চলেছি পাশাপাশি। দু’জনেই ভিজে গিয়েছি। জানি না, জ্বর-টর আসবে কি না। গন্তব্য আমার আস্তানা। কারণটা অবশ্য উনি বললেন না। ওই অন্ধকারে কানে এল দীর্ঘশ্বাস।
হোটেলের ঘরে ঢুকে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিলাম, ‘‘চলে যান। ওই যে বাথরুম।’’
‘‘কিন্তু কী পরব?’’
ভিজে শরীরটা কাঁপছে তির-তির করে। ঠোঁটে জমা বিন্দু বিন্দু জল। হাঁটুর কাছে জিন্স-এ কাদা। এতক্ষণে মুখটা ভালভাবে দেখতে পেলাম। পাহাড়ি মুখ নয়। ফর্সা মুখ, গাল দুটো লালচে। চোখ গভীর। তবে একটি কথা বলতে পারি, এমন ঠোঁট আমি ইতিপূর্বে দেখিনি।
এগিয়ে গেলাম কাবার্ডের দিকে। বের করে আনলাম নিজের নাইট ড্রেস। এগিয়ে দিলাম— ‘‘আজ রাতে এটা দিয়েই চালিয়ে নিন। রুম সার্ভিস ডেকে নিচ্ছি। কেচে শুকিয়ে দেবে।’’
হাত বাড়িয়ে সে নিয়ে নিল। চলে গেল বাথরুমে। ঘষা কাচের দরজার ওপারে দেখলাম পর্দা টেনে দেওয়া হল। আর কিছু দেখা যাচ্ছে না এখন। আমার শরীর ফুটতে শুরু করেছে একটু একটু করে। রুম সার্ভিসে ফোন করার ঠিক দে়ড় মিনিটের মধ্যে হাজির হল ছোকরা। ভিজে জামাকাপড় দিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘‘কল সুবহা তক শুখা সকেগা?’’
‘‘জি শাব।’’ (‘স’-টা ওইরকমই শোনায় এঁদের মুখে, বেশ মিষ্টি লাগে কিন্তু)
‘‘ঠিক হ্যায়। রাত কে খানে মে ফ্রায়েড রাইস অউর চিলি চিকেন দে দো। ড্রাইওয়ালা।’’
‘‘জি শাবজি।’’
‘‘অউর…রুকো থোড়া…’’
চলে গেলাম বাথরুমের কাছে। দরজায় টোকা দিলাম।
‘‘বলুন।’’
গলাটা অনেক স্বাভাবিক মনে হল।
‘‘আপনি ড্রিংক করেন?’’
‘‘বলে দিন।’’
‘‘কী খাবেন?’’
‘‘যা খুশি।’’
চলে এলাম দরজায়।
‘‘স্কচ লে আনা। সাথ মে চিকেনওয়ালা কুছ লানা।’’
‘‘জি শাবজি।’’
এর পরে স্কচ এল, বাথরুম থেকেও সে বেরিয়েছিল।
আমার নাইট ড্রেস আর গাউন ওই শরীরে সুন্দরভাবে বসে গিয়েছিল। ঝকঝকে একটা মুখ আমার সামনে। ঠোঁট একটু একটু করে চুমুক দিচ্ছে দামী স্কচে।
‘‘জানেন, আমার নাম কী?’’
‘‘না। এখনও বলেননি।’’
নাম বললেন।
‘‘আচ্ছা।’’
‘‘আমার বাড়ি কলকাতায়।’’ জায়গাটাও বলে দিলেন।
‘‘ও।’’
এইবারে শুরু হল এমন এক পর্ব, যা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বলে চললেন, ‘‘জানেন, কেন আপনাকে আমার ভয় করছে না? কারণ আপনার মতো আরও অনেকজনের সঙ্গে আমি রাত কাটিয়েছি। আমার গোটা শরীর ছিবড়ে করে দিনের পর দিন তারা ফেলে দিয়েছে। আপনাকে আর ভয় কী?’’
দেহব্যবসায়ী! আমার মতো!!
প্রশ্নটা করা যায় না কারণ এঁর চালচলন, কথাবার্তায় এমন একটি আভিজাত্য রয়েছে যে, চট করে ‘‘আপনি কি এসকর্ট’’-গোত্রের প্রশ্ন করলে বিপদ হতে পারে। বরং অপেক্ষা করা যাক। ততক্ষণে তিনটে ‘লার্জ’ গলাদ্ধকরণ করেছেন। কথা জড়ায়নি, তবে ‘লালচে’ ভাব এসেছে।
বলে চললেন, ‘‘জানেন, একবার একটা বুড়ো লোক, নামজাদা কর্পোরেটের কর্তা, রাতভর আমার শরীর নিয়ে কামড়াকামড়ি করেছিল। ভ্যাজাইনা রক্তারক্তি হয়ে গিয়েছিল সে দিন। বুকে এমন আঁচড়ে দিয়েছিল যে ঠিক করে ব্রেসিয়ার পরতে পারিনি কত দিন।’’
শুনে চলেছি। মনে মনে ভাবছি সেই অত্যাচারের রাতগুলোর কথা। আমার সঙ্গেও যে প্রায় এমনই অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে।
ওদিকে ভাষা যেন বাঁধ ভেঙেছে, ‘‘আরও একবার জানেন, এই যে দেখুন (হাঁটুর ঠিক উপরে কাপড় উঠে গেল, একটা গভীর দাগ) অ্যানালে রাজি হইনি বলে কাচের গ্লাস ভেঙে চালিয়ে দিয়েছিল আর একজন। সে-ও বুড়ো।’’
বলেন কী ইনি! আমার বুক দুরুদুরু করছে। আচমকা উঠে গেলেন। দরজা বন্ধ কি না, ভাল করে পরীক্ষা করলেন। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। আমরা বসে রয়েছি বাইরের ঘরে, যেটা একেবারে ড্রয়িং রুম। সোফায় আমার পাশে বসলেন। ধীরে ধীরে নেমে গেল গাউন। তার পরে খুলতে শুরু করলেন শার্ট। ক্রমশ অনাবৃত হচ্ছে পিঠ। এমন নিটোল কাঁধের গড়ন দেখা যায় না। ঠান্ডায় তাতে কাঁটার রেশ দেখতে পাচ্ছি। একটা হালকা কাঁপুনি টের পেলাম শরীরে। বুকের কাছটা ক্রমশ দলা পাকিয়ে উঠছে। আমার বাঁধ ভাঙছে।
‘‘উফ্!’’ এক ঝটকায় গলা দিয়ে বেরিয়ে গেল আর্তনাদ! চোখ সরিয়ে নিলাম।
‘‘বন্ধ করুন, বন্ধ করুন প্লিজ! আমি আর পারছি না!’’ চোখে হাত দিয়ে একেবারে উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়েছি আমি। এ দৃশ্য দেখা যায় না। সহ্য করা যায় না।
পিঠে এত দাগ! চিনতে অসুবিধে হয় না, এই দাগ নির্মম অত্যাচারের। কোমর পর্যন্ত নেমে গিয়েছে সেই সব চিহ্ন।
‘‘দেখুন না, দেখুন।’’
এবার কোমর থেকে সরছে পোশাক। নিতম্ব জুড়ে শুধুই দাগ, দাগ আর দাগ। একটা দাগ দেখে স্পষ্ট বুঝলাম, কামড় পড়েছিল এখানে।
‘‘আপনি প্লিজ ঢাকুন। আমি পারছি না।’’
‘‘ভয় পেলেন?’’
‘‘প্লিজ!’’
এর পরে আর মাত্র কয়েকটা কথা। যা শোনার পরে আমি পুরোপুরি উদভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ধাক্কা সামলাতে বহু দিন লেগে গিয়েছিল। কথাগুলো আজও স্পষ্ট মনে রয়েছে। আজীবন থাকবে। হুবহু তুলে দিচ্ছি—
‘‘এই দাগগুলোর জন্য দায়ী কে জানেন? আমার বাবা। হ্যাঁ, আমার বাবা। এই সব লোকগুলোর মুখে আমাকে ঠেলে দিয়েছে ওই লোকটা। একটা কাপুরুষ! কেরিয়ারের জন্য আমার মা-কে একসময়ে এই লোকগুলোর মুখে ফেলে দিয়েছিল। এরাই ভোগ করেছে আমার মা-কে। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। এদেরই কারও ঔরস থেকে আমার জন্ম। মা একদিন মৃত্যুর রাস্তা বেছে নিয়েছিল। তখন আমি ক্লাস ইলেভেন। মা ততদিনে সব বলে দিয়েছে আমাকে। তার পরে আমি। আমি কিন্তু আত্মহত্যা করিনি। বরং ইংরেজিতে এমএ করেছি। তার পরে পালিয়ে এসেছি অনেক সহ্য করার পরে। চলে এসেছি এখানে। স্কুলে ইংরেজি পড়াই।’’
‘‘আগেও তো পালাতে পারতেন।’’
‘‘না। এমএ-টা করা দরকার ছিল। সঙ্গে প্রতিটি ঘটনার প্রমাণ রেখেছি। এইবার আমার প্রত্যাঘাত করার পালা। আমি পাল্টা দেব। আর বলে রাখি, এটা আমার লড়াই। দয়া করে শরীর ভোগ করার জন্য মেকি সহানুভূতি দেখাবেন না। আমার কাউকে চাই না।’’
‘‘জানি।’’
এর পরে খাবার এসেছিল, একসঙ্গে খেয়েছি। আড্ডা দিয়েছি।
পর দিন সকালে যখন দরজা খুলে বাইরের একফালি ছোট্ট বাগান-কাম-উঠোনে এসে দাঁড়ালাম, তখন কোথায় মেঘ! ঝকঝক করছে আকাশ। তার কোলে একটা সুন্দর, গোল সূর্য।
ঝরঝর করছে শরীর। হ্যাংওভার একটা রয়েছে, কিন্তু সেটা নিশ্চিতভাবেই মদের নয়।
ও, আর একটা কথা। সূর্যটার গাল দুটো কেমন যেন লালচে।
কে বলেছে, সূর্য পুরুষ?
(দার্জিলিং পর্বের ইতি)
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন