শাকিবের মেকআপম্যান কে? জানলে অবাগ হবেন আপনিও..!

সবুজ ছোটবেলায় একটি মাদ্রাসায় পড়তেন। সবুজের এলাকার এক বড় ভাই, নাম ফারুক, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সবুজ প্রায়ই বিএফডিসিতে যেতেন। ফারুক খাবারের ব্যবসা করতেন বিএফডিসিতে। ফারুকই সবুজকে পরিচয় করিয়ে দেন চলচ্চিত্রের মেকআপম্যান জাবেদের সঙ্গে। জাবেদ আবার কাজ করতেন মেকআপম্যান মান্নানের সঙ্গে। জাবেদ আর মান্নানের কাছ থেকেই একসময় শিল্পীদের মেকআপের কাজটি শিখে নেন সবুজ। এভাবেই শুরু, মেকআপম্যানের সহকারী থেকে এখন বাংলাদেশের তারকা নায়ক শাকিব খানের প্রধান মেকআপম্যান। পুরো নাম সবুজ খান। তাঁর সহকারী মেকআপম্যান হিসেবে আছেন আরো ১১ জন।
চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমার বাড়ি শরীয়তপুর। সায়েদাবাদে একটি মাদ্রাসায় পড়তাম, তখন আমার বয়স ১৩-১৪ বছর। আমার এলাকার এক বড় ভাই আছেন যে শুটিংয়ে খাবার দেয়, নাম ফারুক ভাই। উনার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই এফডিসিতে আসতাম। এখানের শুটিং দেখতে খুব ভালো লাগত। ফারুক ভাইকে একদিন বললাম, আমাকে এখানে কোনো কাজ দিতে। তিনিই আমাকে মেকআপম্যান জাবেদ ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। উনি আমাকে ওস্তাদ মান্নান স্যারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন থেকেই মেকআপ সহকারী হিসেবে কাজ করা শুরু করি। এটা ১৯৯৮ সালের দিকের ঘটনা।’
শাকিব খানের সঙ্গে কীভাবে পরিচয় জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘মান্নান স্যার অনেক সিনিয়র, তিনিই সব তারকার মেকআপ করতেন। আমি ছিলাম তাঁর সহকারী। সেখান থেকেই ভাই আমার কাজ দেখে পছন্দ করেন। বিভিন্ন পরিচালককে বলতেন, আমাকে যেন ছবিতে রাখা হয়। হঠাৎ একদিন শাকিব খান আমাকে ডেকে বললেন, আমি পার্মানেন্ট কাজ করব কি না। শুনেই আমি আকাশ থেকে পড়লাম, এটা ২০০২ সালের ঘটনা। আমি রাজি হয়ে যাই।’
শাকিব খান সম্পর্কে সবুজ বলেন, ‘আমি যখন সহকারী ছিলাম, তখন থেকেই শাকিব ভাই আমাকে তাঁর সঙ্গে রাখতেন। বিভিন্ন জায়গায় আমাকে মেকআপের ওপর ট্রেনিং করিয়েছেন তিনিই। বিভিন্ন স্টাইল সম্বন্ধে জানিয়েছেন। দেশ-বিদেশে তাঁর সঙ্গেই ঘুরেছি। না হলে আমার এত দেশ দেখা কিছুতেই সম্ভব হতো না। অপু দিদিও (অপু বিশ্বাস) আমাকে অনেক পছন্দ করেন, বলতে গেলে আমাকে হাতে ধরিয়ে কাজ শিখিয়েছেন তাঁরা।’
শাকিবের সঙ্গে কোন কোন দেশ ঘোরা হয়েছে—জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘অনেক দেশ ঘুরেছি। থাইল্যান্ডেই গিয়েছি ৩৩ বার, ব্যাংকক ৩৯ বার। এ ছাড়া মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কিছুদিন আগে লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল, পারিবারিক ঝামেলার কারণে যেতে পারিনি। আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে।’
কেমন লাগে এই দেশ-বিদেশ ঘুরে কাজ করতে—জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘অবাক লাগে কারণ, আমি যে পরিবার থেকে এসেছি তাতে এত দেশ ঘোরার চিন্তা করাটাই পাগলামি। তা ছাড়া বাংলাদেশের ছবি গানের শুটিংয়ের জন্য দেশের বাইরে যায়, বিশেষ করে বিগ বাজেটের ছবিগুলো। আর শাকিব খান মানেই বিগ বাজেটের ছবি। সে ক্ষেত্রে ভাই ছবিতে আছে মানে আমি আছি। কারণ, এফডিসিতে অনেক মেকআপম্যান আছে, তাঁদের কয়জন আসলে এভাবে কাজ করতে পারে?’
সবুজ শাকিব খানের প্রধান মেকআপম্যান হলেও তাঁর আছে আরো ১১ জন সহকারী। এতজন সহকারীর কাজ কী, সে সম্পর্ক সবুজ বলেন, ‘আমি যে শুধু শাকিব ভাইয়ের মেকআপ করি, তা-ই নয়। এখন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন, নাটক থেকেও আমার কাছে লোক চায়। তখন তাঁদের সহযোগিতা করতে হয়। আবার এখন রমজান মাস, প্রতিটা টিভিতেই এখন ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে। সেখানে মেকআপের কাজ করি। আমার সহকারীদের পাঠাই।’
পরিবারে কে আছে—জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘আমার চার বছরের ছোট একটি মেয়ে আছে। তাকে ঘিরেই আমাদের সুখের সংসার, এরই মধ্যে তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। কারণ, আমার বাবার ইচ্ছা ছিল আমি মাদ্রাসায় পড়ব। আমি যেহেতু পারিনি, তাই নিজের সন্তানকে দিয়ে আশা পূরণ করছি।’
চলচ্চিত্রে মেকআপ করা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই সবুজের। তিনি সারা জীবনই শাকিব খানের মেকআপম্যান হিসেবে কাজ করে যেতে চান। সবুজ মনে করেন, এটাই তাঁর স্বপ্নপূরণের জায়গা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

‘বাজি’ দিয়ে ফিরলো কোক স্টুডিও বাংলা
“বাজি” গান দিয়ে এক বছরেরও বেশি সময়ের বিরতি কাটিয়ে অবশেষেবিস্তারিত পড়ুন

বর্ষার পর এবার সিনেমা ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনন্ত জলিলের, কারণ জানালেন নিজেই
ব্যবসায়ী থেকে একসময় সিনেমায় অভিনয় করা শুরু করেন অনন্ত জলিল।বিস্তারিত পড়ুন

শাহরুখ-দীপিকার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার
প্রতারণার অভিযোগে বলিউড কিং শাহরুখ খান ও অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনেরবিস্তারিত পড়ুন