শিক্ষকের ফাঁসি দাবিতে হরতাল-অবরোধের হুমকি হেফাজতের
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের ‘কঠোর শাস্তির’ দাবিতে সরকারকে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ শাখা।
এর মধ্যে দাবি না মানলে হরতাল-অবরোধসহ ‘কঠোর কর্মসূচি’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
শুক্রবার বাদ জুমা নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় ‘সর্বস্তরের মুসলিম জনতা’ ব্যানের ‘আল্লাহ ও মুসলিম জাতি নিয়ে কটূক্তিকারী প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কঠোর শাস্তি ও ফাঁসির দাবি’তে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এই হুমকি দেওয়া হয়।
বৃষ্টি উপক্ষো করে বিভিন্নস্থান থেকে মিছিল নিয়ে মুসল্লিরা সমাবেশে অংশ নেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার শ্যামল কান্তি ভক্তকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার দুপুরের আগে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও শহরের ডিআইটি রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ‘তাহরিকে নবুয়্যতে বাংলাদেশ’র আমির সায়্যেদ এনায়েতপুরী আব্বাসী জৈনপুরী, হেফাজতে ইসলামীর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির, জেলা ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আবুল হাশেম, মুফতি আব্দুল লতিফ, দেলোয়ার হোসেন ও হারুন অর রশিদ।
সমাবেশে রিফাত নামে একজনকে হাজির করে দাবি করা হয়, সে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সমাবেশে সে তাকে মারধর ও ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিচার দাবি করে।
শ্যামল কান্তি ভক্ত ‘আল্লাহ ও মুসলিম জাতিকে কটূক্তি করেছেন’- সমাবেশে এমন অভিযোগ করে সরকারকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে হেফাজত নেতা আউয়াল বলেন, “এই সময়ের মধ্যে তার বিচার করা না হলে গণজমায়েত করে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
“একই সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে দেওয়া হবে। সরকার হিন্দু বাবুদের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে বসিয়েছেন, এখন তারাই মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে।”
ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার লতিফ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে একদল লোক মারধোর করে। পরে তাকে কান ধরিয়ে উঠ-বস করান স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
দেশজুড়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচার দাবির মধ্যে ওই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে স্কুল কমিটি বাতিল করে শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্বপদে পুনর্বহাল করে সরকার।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ওই শিক্ষকের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা কোনো সভ্য দেশে বা সভ্য সমাজে গ্রহনযোগ্য নয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যারা এ অপরাধে জড়িত তাদের শাস্তি পেতে হবে।
তবে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, এ জন্য তিনি কারো কাছে ক্ষমা চাইবেন না।
সমাবেশে আইনমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করে হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বলেন, “আপনারা নাস্তিক শ্যামল কান্তি ভক্তের পক্ষ নিয়েছেন এবং তাকে স্বপদে বহাল করেছেন।”
এসময় তিনি শ্যামল কান্তিকে তার পদ থেকে বহিষ্কারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
সমাবেশে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ‘নাস্তিক’ হিসেবে উল্লেখ করে ‘তাহরিকে নবুয়্যতে বাংলাদেশ’র আমির বলেন, “নাস্তিক, ব্লগার, বামপন্থিরা নাস্তিক শ্যামল কান্তি ভক্তের পক্ষ নিয়েছেন।”
বামপন্থিদের সতর্ক করে তিনি বলেন, “তোমরা সাবধান হয়ে যাও। সারাদেশে যত বামপন্থি আছে, নারায়ণগঞ্জে তার চেয়ে বেশি নেড়ি কুত্তা আছে। শ্যামল কান্তির বিচার না হলে দেশ অচল করে দেওয়া হবে।”
এসময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদ বিলুপ্ত করার দাবিও জানান ‘তাহরিকে নবুয়্যতে বাংলাদেশ’র আমির।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন