শিক্ষক যখন লম্পট
নাজমুল শাহাদাৎ ( জাকির), সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করার সুবিধা নিয়ে একের পর এক ছাত্রীদের ব্লাকমেইলকারী নারীলোলুপ লম্পট আসাদুজ্জামান অবশেষে এক ছাত্রী (এনজিও কর্মী)সহ ধরা খেয়েছেন। লম্পট শিক্ষক সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান এবং সহযোগী অধ্যাপক। তার বাড়ি যশোর জেলার বাগআঁচড়ায়। ইতিপূর্বে এই শিক্ষক অসংখ্য ছাত্রীর সাথে অশ্লালীন আচরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ছাত্রী।
লম্পট আসাদুজ্জামন ২ সন্তানের জনক। তার কন্যা উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং পুত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার স্ত্রী বাগআঁচড়াতেই থাকেন। আর সেই সুযোগে আসদুজ্জামান একের পর এক বিভিন্ন মেয়ের সর্বনাশ করে যাচ্ছেন। এই আসাদুজ্জামান তার ঘনিষ্ঠদের নিজের মোবাইলে থাকা বিভিন্ন মেয়ের ছবি দেখিয়ে বলেন, “ আমিতো প্লে-বয়, আমার ৬০/৬২টা ডার্লিং সবসময় থাকে। শনিবার সকাল ১১.৩০টার দিকে আসাদুজ্জামান এক ছাত্রী ও এনজিও কর্মী-কে নিয়ে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল খুলনা রোড মোড়ের কেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৫ম তলার চিলেকোঠায় ভাড়া করা রুমে নিয়ে ফূর্তি করছিলেন। ইতিপূর্বেও ওই শিক্ষক সেখানে অনেক মেয়েকে নিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। একে একে বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকজন সাংবাদিক সেখানে হাজির হন। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানা থেকে পুলিশও ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দেয়।
এদিকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কলেজের শিক্ষক পর্ষদের সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন শিক্ষক মটচর সাইকেলযোগে বেলা ২টার দিকে কেয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে ক্ষিপ্রতার সাথে আটক শিক্ষক ও মেয়েটিকে নিয়ে পুলিশ পৌছানোর পূর্বেই সরকারি কলেজে চলে আসেন। এই মুহুর্তে লম্পট শিক্ষক ও তার লাম্পট্যের শিকার ওই তরুণীকে নিয়ে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর লিয়াকত পারভেজেরে রুমে বৈঠক চলছে।
কয়েক শিক্ষার্থী ফোনে অভিযোগ করেন, কলেজ প্রশাসনের কিছু পদস্থ শিক্ষকের প্রশ্রয়েই লম্পট আসাদুজ্জামান তার লাম্পট্য চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও ওই লম্পটকে পুলিশে সোপর্দ না করে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রী জানান, কিছুদিন আগে লম্পট আসাদুজ্জামানকে ছাত্রীকে তার বাসায় গিয়ে ঘর-বাড়ি একটু গুছিয়ে দিতে বলেন। ওই ছাত্রী প্রথমে অস্বীকার করলে আসাদুজ্জামান তাকে ইনকোর্সের নম্বরের ভয় দেখান। এরপর ওই ছাত্রী আসাদুজ্জামানের বাসায় গেলে আসাদুজ্জামান জোরপূর্বক তার শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। লজ্জ্বায় এ ঘটনা ওই ছাত্রী কাউকে জানাতে না পেরে এক পর্যায়ে কলেজে আসাই বন্ধ করে দেন।
সচেতন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা লম্পট আসাদুজ্জামানের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর লিয়াকাত পারভেজ জানান, আমরা আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখব।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, “মেয়েটি সম্পর্কে আমার নাতনি হয়। সে সাতক্ষীরার এসেছিল বেড়াতে। আমি একটু রেস্ট নেয়ার জন্য তাকে আমার রুমে নিয়ে এসেছিলাম। বিষয়টি এর বেশি কিছুু নয়।”
বিশিষ্ট নারী নেত্রী নাসরিন খান লিপি বলেন, সন্তানতুল্য মেয়েদেরকে যে শিক্ষক ব্লাক মেইল করে, যৌন হয়রানি করে সে শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক।” তিনি ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
নারী নেত্রী ও অতিরিক্তি পিপি শাহনাজ পারভীন মিলি বলেন, ঘটনা শুনে আমি লজ্জ্বিত। প্রিন্সিপাল স্যারকে আমি বলেছি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। যে শিক্ষকের কাছে সন্তানতুল্য ছাত্রীরা নিরাপদ না তাকে শিক্ষকরুপে আমরা দেখতে চাই না। প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে কথা দিয়েছেন ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষকে লিখবেন।”
এদিকে লম্পট আসাদুজ্জামানকে উদ্ধার করতে যাওয়া সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ শিক্ষক পর্ষদের সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবুল কালাম আজাদ বলেন, “অধ্যক্ষ স্যার আমাকে ফোনে একাধিকবার অনুরোধ করেন শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে কলেজে নিয়ে আসার জন্য। আমি জানতামই না সে কি ধরনের বিপদে আছে। তবে যেহেতু আমার অধ্যক্ষ স্যার বারবার আমাকে আদেশ করেছেন তাই আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমি ঘটনা সম্পর্কে এর আগে কিছুই জানতাম না।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরাবিস্তারিত পড়ুন
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী একত্রে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
কোটি টাকার স্বর্ণসহ ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৯ পিছ স্বর্ণের বারসহবিস্তারিত পড়ুন