শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হল না তনুর
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, তার মেয়ে তনুর শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে ছিল, সেজন্য সে পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি করত। কিন্তু ঘাতকরা তার স্বপ্ন পূরণ হতে দিল না।
আজ শনিবার বিকেল ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে কাজ সেরে রাত সোয়া ১০টায় বাসায় ফিরি। তনুর মা বলল, তনু বাসায় ফেরেনি। টর্চলাইট নিয়ে মেয়ের খোঁজে বের হই। বাসার কাছেই একটি কালভার্ট। কালভার্টের পাশে দেখি তনুর একটি জুতা পড়ে আছে। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। তারপর আমার ছোট ছেলে আনোয়ার হোসেন রুবেলও বাসা থেকে বেরিয়ে আসে। কিছু দূরে ওর মোবাইল ফোনটা পড়ে থাকতে দেখি। একটু উঁচু জায়গায় জঙ্গলের মধ্যে তনুকে পেলাম। মাথার নিচটা থেঁতলে আছে। ওর মুখে রক্ত আর আঁচড়ের দাগ। কয়েকজন মিলে ওকে সিএমএইচে (সামরিক হাসপাতাল) নিয়ে যাই।
তনু দুটি টিউশনি করত। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাসা থেকে বের হতো। ওর মা আনোয়ারা বেগম এগিয়ে দিত। রাতে ফেরার পথেও ওর মা এগিয়ে নিয়ে আসত। যেখানে টিউশনি করত তার দূরত্ব বাসা থেকে ২০০ গজ। হত্যাকাণ্ডের স্থল বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে। আমি এখানে ৩১ বছর চাকরি করি। আট বছর ধরে কোয়ার্টারে থাকি। সেনানিবাসের সুরক্ষিত এলাকায় কারা ওকে মেরেছে, জানি না। আল্লাহ দেখেছেন। আমি তনুর হত্যাকারীদের কঠিন বিচার চাই। রাইজিংবিডির কাছে এভাবেই কন্যাশোকের কষ্ট চেপে কথাগুলো বলেন নিহত তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।
কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন বলেন, তনু শিক্ষক হতে চেয়েছিল। তাই সে টিউশনি করত। বলত, টিউশনি করলে পড়াশোনাটা জানার মধ্যে থাকে।
তনুর বড় ভাই নাজমুল হোসেন জানান, আমরা ভাই-বোনেরা বন্ধুর মতো ছিলাম। তার নেতৃত্ব দেওয়ার একটা হবি ছিল। স্কুল-কলেজে সে ক্লাস ক্যাপটেন হতো। তার ইচ্ছে ছিল শিক্ষক হওয়ার। বাবা একদিন তাকে বলেছিল- মা, তোমাকে বিয়ে দিতে চাই। তোমার কোনো পছন্দ আছে কিনা। সে বলেছিল, তার পছন্দ নেই। তবে অনার্স শেষ করার পর সে বিয়ে করবে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবদুর রব বলেন, ২১ মার্চ তনুর বাবা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ২১ মার্চ আমরা সিএমএইচ থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করি। তনুর লাশে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমরা সেনানিবাসের ভেতরে হত্যাকাণ্ডের স্থান পরিদর্শন করেছি। আশা করছি শিগগিরই খুনিরা শনাক্ত হবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম জীবন জানিয়েছেন, তনুর হত্যার বিচার দাবিতে তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন
চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রিলাক্স পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশেরবিস্তারিত পড়ুন
টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেন স্বামী, অতঃপর…
কুমিল্লায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে তিন ধর্ষকের হাতে তুলেবিস্তারিত পড়ুন