শাবি শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা
‘শিক্ষক হিসেবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিত’
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় লজ্জা-অপমানে বৃষ্টিতে ভিজলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বপ্নে যা কখনও ভাবিনি তাই আজ হয়ে গেছে। শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে থাকে তবে শিক্ষক হিসেবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিত। কিন্তু আমি এখনই মরছি না। তবে আমি অসহ্য মানসিক যন্ত্রণায় আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভিসি প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভূঁইয়ার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছেন তাদের পক্ষে আমার শতভাগ সাপোর্ট আছে। কারণ আমি জানি এ ভিসির সঙ্গে কোনোভাবেই কাজ করা সম্ভব নয়।’
শিক্ষকদের ওপর হামলার ব্যাপারে ভিসিকে দোষারোপ করে জাফর ইকবাল বলেন, ‘শিক্ষকদের ভিসিবিরোধী আন্দোলন শাবিকে বাঁচাতে। কোনো পদের জন্য নয়। ভিসি যদি মনে করেন এভাবে হামলা করিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে তাহলে তিনি (ভিসি) সম্পূর্ণ ভুল চিন্তা করছেন।’
প্রসঙ্গত, ভিসির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। রবিবার সকাল ৮টায় ভিসি প্রফেসর ড. আমিনুল হক ভূঁইয়ার কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ দিন সকাল ৮টা থেকে ভিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার কথা ছিল ভিসির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনকারী মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকদের। কিন্তু শিক্ষকদের আগেই ভোর ৫টা থেকে সেখানে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের দুই শতাধিক নেতাকর্মী।
সকাল ৮টায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা ভিসি কার্যালয়ের সামনে গেলে সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়েন তারা। একপর্যায়ে ভিসি আমিনুল হক ভূঁইয়া কার্যালয়ের নিচে আসেন। ভিসিকে তার কার্যালয়ে প্রবেশে বাধা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিসির পথ পরিষ্কার করতে শিক্ষকদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করেন। তারা অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে শিক্ষকদের সরিয়ে দেন।
এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হন প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের স্ত্রী পদার্থ বিজ্ঞানের প্রফেসর ড. ইয়াসমিন হক, প্রফেসর ড. মো. ইউনুস, সহকারী অধ্যাপক ফারুক উদ্দিনসহ অনেকে।
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ফারুক উদ্দিন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ যা করেছে তাতে আমরা হতবাক।’
ভিসি আমিনুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শিক্ষকদের লাঞ্ছিতের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়।’
কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১২ এপ্রিল থেকে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষকদের একাংশ।
এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা হিসেবে আখ্যা দিয়ে সরকার-সমর্থক শিক্ষকদের একটি অংশ ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নেন। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলন করছে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
দ্বিতীয় দফার বন্যায় সিলেট অঞ্চলে সাত লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি।বিস্তারিত পড়ুন
সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেঞ্চুগঞ্জে দুটি বগি লাইনচ্যুতবিস্তারিত পড়ুন
সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
গত কয়েকদিনের অবিরত হালকা ও ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি এবং ভারতবিস্তারিত পড়ুন