শিক্ষা সফরে ছাত্রীর সঙ্গে ছবি : শিক্ষকের জরিমানা
রাজশাহীর তানোরে ছাত্রীর সঙ্গে পাশাপাশি ছবি তুলে ফেসবুকে দেয়ায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এক স্কুল শিক্ষককে। লজ্জায় ও ক্ষোভে ১০ দিন ধরে ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। জরিমানার টাকা এখনো ওই ছাত্রীর পরিবারকে দেয়া হয়নি। উল্টো সরকারদলীয় নেতারা টাকা পকেটে রেখে দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ৭ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ শিক্ষা সফরে যায় তানোর উপজেলার নারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ঘুরে দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে যায়।
এ সময় সহকারী শিক্ষক নবিউল ইসলাম নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একা পেয়ে তার সঙ্গে পাশাপাশি বসে কয়েকটি ছবি তোলেন। পরদিনই সেই ছবিটি তার ফেসবুকে পোস্ট করেন নবিউল। ওই দিনই ফেসবুকে শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর ছবি দেখে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তারা শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্কুল ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
তবে এ ঘটনার পরপরই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক, প্রধান শিক্ষক আইউব আলী ও বাধাইড় ইউপির যুবলীগ সভাপতি গণেশের নেতৃত্বে অফিস কক্ষেই সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে সহকারী শিক্ষক নবিউল ইসলামকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা তাদের হাতে দিয়েছেন নবিউল।
ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, তিনি কোনো টাকা নেননি। তবে এ ঘটনার পর তার মেয়ে লজ্জায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এলাকায় কানাঘুষা হওয়ায় বাড়ির বাইরেও যেতে পারছে না। তবে তিনি ওই শিক্ষকেরও অপসারণ দাবি করেছেন।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নবিউল ইসলামের দাবি, তিনি প্রতিহিংসার শিকার। কারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক পবিত্র। অভিভাবক ও বন্ধুর মতোই। আর ছবি তোলার বিষয়টি তেমন কোনো ঘটনাই নয়। অসংলগ্ন বা খারাপ উদ্দেশ্যেও ছবি তোলা হয়নি। কয়েকজন ব্যক্তি এ ঘটনাকে পুঁজি করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। জরিমানা করে তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলেও দাবি নবিউলের।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, শিক্ষকের কাছে একজন ছাত্রী মেয়ের মতো। স্বাভাবিক অবস্থায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একসঙ্গে ছবি তুলতেই পারেন। এতে অপরাধ হয়েছে বলে মনে করি না। তবে কিছু লোকজন বাড়াবাড়ি করেছে। তাদের কারণেই জরিমানার সিদ্ধান্ত হয়। তবে জরিমানার টাকা নিতে ছাত্রীর বাবা অস্বীকারও করেন।
এদিকে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক জানান, এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর সেই জরিমানার টাকা ছাত্রীর বাবাকে দেয়া হবে। কারণ সে গরিব মানুষ। ভবিষ্যতে মেয়ের কাজে লাগবে। তবে টাকা না দিয়ে থাকলে আজকালের মধ্যেই দিয়ে দেয়া হবে।
তানোর উপজেলার মাধ্যমিক অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে ঘটনাটি শুনেছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন