শিশু রাকিবকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মানববন্ধন
পৈশাচিকভাবে শিশু রাকিবকে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার এবং ফাঁসির দাবিতে এখনও উত্তাল খুলনা। গতকাল বৃহস্পতিবার এ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। রাকিবকে হত্যার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক। মেশিন দিয়ে মলদ্বারে হাওয়া ঢোকানোর ফলে পেটের ভেতর রক্তক্ষরণে রাকিব মারা গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ
করা হয়েছে। এদিকে, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বিউটি বেগমকে রিমান্ডে নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ রাকিবের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছেন এই বিভাগের প্রভাষক ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন। তিনি জানান, আগামী শনি অথবা রোববার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ডাকযোগে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
তিনি জানান, মেশিন দিয়ে মলদ্বারে হাওয়া ঢোকানোর ফলে পেটের ভেতর রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে রাকিব মারা গেছে। ময়নাতদন্তের সময় রাকিবের মলদ্বারে রক্ত ও মলদ্বার ফাটা, দুই হাতের ১০টি আঙুল ও দুই পায়ের গোড়ালিতে রক্ত জমা দেখতে পান তিনি। এ ছাড়া পেটের নাড়ি ও ক্ষুদ্রান্ত ফেটে যাওয়া এবং ফুসফুস চুপসে যাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। তবে বিভিন্ন পত্রিকায় ফুসফুস ফেটে যাওয়ার কথা লেখা হলেও বাস্তবে বাতাসের চাপে ফুসফুস চুপসে যায়।
এদিকে, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি বিউটি বেগমকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগর হাকিম মো. ফারুক ইকবালের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই কাজী মোস্তাক আহমেদ। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানির সময় বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। সংস্থার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম জানান, বর্বরোচিত এই মামলার আসামিপক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এর পর বিউটি বেগমকে খুলনা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে কেএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খুলনা থানার ওসি এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পর্যায়ক্রমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাজী মোস্তাক আহমেদ জানান, অপর দুই আসামি গ্যারেজ মালিক শরীফ ও কর্মচারী মিন্টু খান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন। সুস্থ হলে তাদের আদালতে পাঠিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধন :রাকিব হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সকালে ডিসি অফিসের সামনের সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে নগরীর টুটপাড়া এলাকাবাসী। এ ছাড়া তারা পিটিআই মোড়ে মানববন্ধন করেন।
একই দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), খুলনা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৫টায় নগরীর রয়্যাল মোড়ে মানববন্ধন করেন।
সংবাদ সম্মেলন :শিশু রাকিবকে হত্যার মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানিয়েছে শিশু ফোরাম। এ ছাড়া হত্যাকারীদের ফাঁসিসহ ৫ দফা দাবি জানায় সংগঠনটি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনায় শিশু রবিউল ইসলাম ও নিশাত আরা মিম।
জেলা পরিষদের অনুদান :খুলনা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বিকেলে রাকিবের পরিবারকে সেলাই মেশিন, ভ্যান ও নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ এবং খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান রাকিবের বাবা-মায়ের কাছে এসব অনুদান হস্তান্তর করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
খুলনায় তিন কেন্দ্রে ব্যালট বই ছিনতাই, গণসিল, মহিলার কারাদণ্ড
খুলনার ফুলতলা উপজেলার দুটি ভোট কেন্দ্রের তিনটি বুথে ব্যালট বইবিস্তারিত পড়ুন
৪ হাজার কোটির খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রস্তুত
ট্রেন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুনবিস্তারিত পড়ুন
খুলনায় ছাত্রদলকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
খুলনা ব্রজলাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র ও ছাত্রদলকর্মী আবদুল্লাহবিস্তারিত পড়ুন