শুভ জন্মদিন সবার আদরের ‘আরহাম’
খানিকটা ইতস্তত হয়ে শট খেলতে গিয়েও ছেড়ে দিলেন তামিমের অনুপস্থিতিতে ইনিংস ওপেনের দায়িত্ব পাওয়া মোহাম্মদ মিথুন। পরের বলটাও ঠিক একই লেন্থে পড়ে তীক্ষ্ণ ইনসুইং করে ভেতরে ঢুকে গেলো। আউটসুইং ভেবে ব্যাট রেডি করে রাখা মিথুনের এই ডেলিভারীতে করার ছিলো খুব অল্পই। যা হবার তাই হলো। প্লাম্ব এলবিডব্লিউ হয়ে দলীয় শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরত চলে গেলেন মিথুন।
পরের ওভারে কুলসেকারার নিরীহ দর্শন এক ডেলিভারী বুঝতে না পেরে শর্ট কভারে ক্যাচ তুলে দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে গেলেন অন্য ওপেনার সৌম্য সরকারও।
টসে জিতে ব্যাট নেয়ার সিদ্ধান্তটা ভুল প্রমাণিত হওয়া ঠেকাতে উইকেটে আসলেন মুশফিকুর রহিম। অপর প্রান্তে ছিলেন পরিস্থিতির শিকার হয়ে তিন নাম্বার ব্যাটসম্যান থেকে ওপেনার বনে যাওয়া সাব্বির রহমান। কুলসেকারার দ্বিতীয় ওভার থেকে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান তুলে মুশীর সাথে মিলে পাল্টা আক্রমণের জন্য নিজেকে প্রস্তুত ঘোষণা করলেন সাব্বির রুম্মান।
কিন্তু বিধিবাম!
পরের ওভারেই দুইজনের ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে দলীয় ২৬ রানেই প্যাভিলিয়নে চলে গেলেন মুশফিকুর রহীম। ম্যাচের পঞ্চম ওভারেই মাত্র ২৬ রানে তৃতীয় উইকেটের পতনে ব্যাটিং বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দেয় বাংলাদেশ শিবিরে। এমতাবস্থায় উইকেটে এলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
এর আগেও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০তে অনেকটা এমন পরিস্থিতিতেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দিয়েছিলো সাকিব-সাব্বির জুটি। আবারো সেই একই পরিস্থিতস্থিতে এই সাকিব-সাব্বির জুটিতেই আশার আলো দেখছিলো বাংলাদেশ দল। এবারে দায়িত্ব নিজের কাধেই তুলে নিলেন সাব্বির রুম্মান। বড়ভাই সাকিবও সিঙ্গেল নিয়ে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন ছোটভাই সাব্বিরকে।
স্কোরবোর্ড ব্যাটিং বিপর্যয়ের হুমকি দিলেও পাল্টা আক্রমণ করতে সামান্যতম ভয় পাচ্ছিলেন না সাব্বির। পাওারপ্লে’র শেষ ওভার ওভার থেকে দারূণ এক কাভার ড্রাইভ সহ আবারো তিনটি চার মেরে রানরেটটাকে কিছুটা সামাল দিলেন তিনি। অন্যদিকে সাকিবও দেখে শুনে রানের চাকা ঘোরাচ্ছিলেন নিয়ম মতো।
১৩তম ওভারে আসলেন পার্ট-টাইম স্পিনার শেহান জয়াসুরিয়া। স্লগ সুইপে দারূণ এক ছয় মেরে নিজের ফিফটি তুলে নিলেন সাব্বির। দলীয় সংগ্রহ তখন শুধু মাত্র ৭৩! ৫০ করেই থামতে রাজি ছিলেন না সাব্বির। আক্রমণের ধাঁর আরো বাড়িয়ে দিলেন পঞ্চাশ পেরুনোর পরেই। বাদ যাবেনা কোনো বোলার নীতিতে প্রায় প্রতি ওভারেই একাধিক বাউন্ডারী হাকাচ্ছিলেন তিনি।
১৬ তম ওভারের শেষ বলে যখন আউট হলেন, দলীয় সংগ্রহ তখন ১০৮। আর সাব্বিরের রান? সাব্বিরের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিলো ৮০! তাও সবেমাত্র ৫৪ বল থেকে। ধ্বংসস্তুপে নিমজ্জিত হতে থাকা ব্যাটিং লাইন-আপ এর বিপর্যয় সামাল দিয়ে পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে দলের সিংহভাগ রান একাই করলেন সাব্বির। দলকে পৌছে দিলেন মোটামোটি সম্মানজনক একটী স্কোরে।
তবে এখানেই কাজ শেষ হবার ছিলো না। সাব্বির আউট হওয়ার পরে উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবং ইনিংসের অবশিষ্ট ২৪ বলের মধ্যে ১২ বলে স্ট্রাইক পেলেন তিনি। নিজের খেলা ১২ বল থেকে ২৭ রানের টর্ণেডো ইনিংস খেলে দলকে পৌছে দেন ১৪৭ রানের লড়াই করার মতো সংগ্রহে।
জ্বী হ্যাঁ, এতোক্ষণ বলছিলাম ২০১৬ এশিয়া কাপের শ্রীলংকার বিপক্ষের ম্যাচের কথা। তারপরের গল্পটুকুও সবার জানা। গুরু মাশরাফির অধিনায়কত্বের জন্য ২০ ওভারে ১৪৭ রান ছিলো ঢের রান। সকলের সম্মিলিত ভালো বোলিং এর ফলস্বরূপ ২৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ দল। একই সাথে করে টূর্ণামেন্টের শুভ সূচনাটাও।
ওহ হ্যাঁ, দিনটা ছিলো ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬! জাতীয় দলের সত্যিকারের ‘ভাতিজা’, জাতির ভাতিজার পুত্র আরহাম ইকবাল খানের প্রথম জন্মদিন। প্রথম জন্মদিনে বাবা তামিম ইকবাল ‘কালা না পারা’র দরুন কিছু উপহার না দিতে পারলেও, চাচা সাব্বির রুম্মান ঠিকই অসাধারণ এক জয় উপহার দিয়েছিলো ভাতিজা আরহাম কে।
শুভ জন্মদিন ভাতিজা ।
বাবার মতোই মেতে থাক ‘কালা পারা না’র জগতে।-খেলাধুলা
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন