মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের অনুলিপি

দশম জাতীয় সংসদের ৯ম অধিবেশন বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয়েছে। যা আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভাষণ দিয়েছেন। প্রিয়.কম পাঠকদের মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের লিখিত প্রতিলিপি হুবহু তুলে ধরা হলো।
এর আগে বুধবার বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের ‘কার্য উপদেষ্টা কমিটি’র নবম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে কমিটির সভাপতি স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য এবং সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ
বিস্‌মিল্লাহির-রহ্‌মানির রহিম।
জনাব স্পিকার,
আসসালামু আলাইকুম।
দশম জাতীয় সংসদের ২০১৬ সালের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ প্রদানের জন্য আপনাদের মধ্যে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। জাতীয় সংসদে ভাষণ দানের এ সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ায় আমি পরম করুণাময় আল্লাহ্‌’র নিকট শোকরিয়া আদায় করছি। এ উপলক্ষে আমি আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে মাননীয় সংসদ-সদস্যবৃন্দ ও প্রিয় দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।

২।আমি আমার ভাষণের সংক্ষিপ্ত ভাষ্য এ মহান সংসদে পাঠ করছি। আমার মূল ভাষণটি টেবিলে রাখা আছে। সেটিকে পঠিত হিসাবে গণ্য করে কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, জনাব স্পিকার, আপনাকে সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।

৩।শুরুতেই আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করছি সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অমর শহীদকে, যাঁদের অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি একটি সার্বভৌম দেশ ও স্বাধীন জাতিসত্তা, পবিত্র সংবিধান ও লাল-সবুজের পতাকা। আমি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি চার জাতীয় নেতা – সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে।

৪।আমি আরও স্মরণ করছি তাঁদেরকে, যাঁরা ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং ভাষা ও সংস্কৃতির মর্যাদা সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে আত্মত্যাগ করেছিলেন। শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বাঙালির গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামের তিন মহান পুরুষ – শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে – যাঁদের অবদান আমাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।

৫।১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সংঘটিত বর্বর হত্যাযজ্ঞ ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সেদিন শাহাদাত বরণ করেছিলেন তাঁর মহিয়সী সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং তাঁর পরিবারের আরও কয়েকজন প্রাণপ্রিয় সদস্য। আমি তাঁদের সবাইকে পরম বেদনার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং পরম করুণাময় আল্লাহ্‌’র কাছে তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

জনাব স্পিকার,
৬।আমি এখানে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করছি ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের জনসভায় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে পরিচালিত গ্রেনেড হামলায় শাহাদাত বরণকারী নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ জন নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীকে, একই বছর আততায়ীর গুলিতে শহীদ জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি আহসানউল্লাহ মাস্টার এবং ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে গ্রেনেড হামলায় শহীদ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে। আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌’র কাছে তাঁদের সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

৭।গত বছর জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমরা হারিয়েছি, তাঁদেরকেও আমি এখানে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। এঁদের মধ্যে রয়েছেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও দশম জাতীয় সংসদের সংসদ-সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সৈয়দ মহসিন আলীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, প্রাক্তন মন্ত্রী, প্রাক্তন সংসদ-সদস্য, সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য, বিচারক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্পী ও সমাজসেবক। আমি তাঁদের সকলের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

জনাব স্পিকার,
৮।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সমুন্নত এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৪ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ গঠিত হয় এবং বর্তমান সরকারের ওপর দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়। গত মহাজোট সরকারের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রূপকল্প-২০২১, দিনবদলের সনদ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্য-আয়ের জ্ঞানভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধিশালী ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ নিম্ন-আয়ের বৃত্ত ভেঙ্গে ইতোমধ্যে নিম্নমধ্য-আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন জাতির দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে ২০৪১ সালের দিকে – বিশ্ব দরবারে একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়ার মানসে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সরকার উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে।
৯।সরকার দেশে আইনের শাসন সুসংহত ও সমুন্নত রাখার সর্বাত্মক উদ্যোগ ও সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী পলাতক খুনিদের আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতির প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থেকে ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার সম্পন্ন করছে এবং বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে। সম্প্রতি বিচারিক আদালত কর্তৃক বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে সিলেটের চাঞ্চল্যকর শিশু রাজন হত্যা মামলা এবং খুলনার শিশু রাকিব হত্যা মামলার বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

১০।দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে বর্তমান সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিগত মেয়াদের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে, দেশে নাশকতামূলক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করছে।

জনাব স্পিকার,
১১।বর্তমান সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করে একটি সুখী, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক, ন্যায়ভিত্তিক এবং জ্ঞান-নির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ। এ সকল লক্ষ্য অর্জনে সরকার ২০১০-২১ মেয়াদি প্রেক্ষিত ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ২০১১-১৫ মেয়াদি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অসমাপ্ত কার্যক্রম এবং Sustainable Development Goals-এ অন্তর্ভুক্ত নতুন বিষয়সমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ২০১৬-২০ মেয়াদি সপ্তম পঞ্চ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অধিকাংশ অর্জন প্রশংসিত হয়েছে।
সরকার কর্তৃক এ সকল কার্যক্রম গ্রহণের ফলে জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে এবং বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রেখে সরকার নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।

১২।বিশ্ব-অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে চলমান সঙ্কট এবং অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে উদ্ভূত নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও যথোপযুক্ত রাজস্বনীতি ও সহায়ক মুদ্রানীতির প্রভাবে দেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় রয়েছে। এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও রয়েছে সুস্হিত। গত পাঁচ বছরে মাথাপিছু জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি হয় গড়ে ৯ দশমিক তিন শতাংশ। সাময়িক হিসাব অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থ-বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক পাঁচ-এক শতাংশে, যা বাংলাদেশের ক্রমবিকাশমান জাতীয় অর্থনীতির পরিচায়ক। মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১ হাজার ১৮৪ মার্কিন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

১৩।বিশ্ব-অর্থনীতিতে বৈদেশিক বাণিজ্যের শ্লথগতি এবং উন্নত দেশসমূহের অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণে সেসব দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এর কিছুটা প্রভাব বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রতিভাত হলেও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। ২০১৪-১৫ অর্থ-বছরে আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক তিন শতাংশ, এর মধ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি প্রবৃদ্ধি ১৮ দশমিক ছয় শতাংশ। এতে প্রতীয়মান হয় যে, দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে।

১৪।২০১৪-১৫ অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৭ দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ দশমিক তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ২৭ দশমিক চার-পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা সাত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারও স্থিতিশীল রয়েছে।

১৫।প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে কর্মোদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও সেবার মান উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতে সৎ, মেধাবী, দক্ষ ও উদ্যোগী ব্যক্তিদের প্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বেতন-ভাতা এবং অবসরকালীন সুবিধাদি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করে সরকার ইতোমধ্যে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ বাস্তবায়ন করেছে। নতুন স্কেলে বেতন নির্ধারণের প্রক্রিয়াটি সহজীকরণে অনলাইন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

১৬।সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থ-বছরের রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৮ কোটি টাকা এবং আদায় হয়েছে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৭৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থ-বছরে ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৫ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি ঋণের সুদের হার ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।

জনাব স্পিকার,
১৭।গত পাঁচ বছর যাবৎ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক তিন শতাংশ, যা দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ২০১৫ সালে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে ২৪ দশমিক আট শতাংশ হয়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫৩৭টি শিল্প প্রকল্প বেসরকারিখাতে নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে। ‘বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৫’ মন্ত্রিসভা কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের আওতায় ৪৬টি সরকারি-বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।

১৮।আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারিত হওয়ায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ-কিলোমিটার এলাকায় মৎস্য আহরণে বাংলাদেশের আইনগত ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

জনাব স্পিকার,
১৯।২০০৮-০৯ সালে খাদ্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০১৪-১৫ সালে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ ১৮ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। ২ কোটি ৫ লক্ষ ৮২ হাজার ৮২৪টি কৃষক পরিবারকে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। সরকার ১০ লক্ষ মেট্রিক টনের অধিক পরিমাণ আগাম খাদ্য-সংরক্ষণ নিশ্চিত করেছে। আমন ও বোরো মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ১৪ লক্ষ মেট্রিক টনেরও অধিক পরিমাণ চাল এবং ২ লক্ষ মেট্রিক টনের অধিক পরিমাণ গম সংগ্রহ করা হয়েছে।

২০।২০১৫-১৬ অর্থ-বছর পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলে সর্বমোট ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ২ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৩৮৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বল্প কার্বন নিঃসরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন-সহিষ্ণু উন্নয়নের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে কার্বন নিঃসরণকারী বৃহৎ দেশগুলিকে এ বিষয়ে কার্যকর অবদান রাখার জন্য জোরালো আহ্বান জানান।

জনাব স্পিকার,
২১।সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়নের ফলে শ্রমজীবী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি বেগবান ও শক্তিশালী হয়েছে। সরকার ‘দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা নীতিমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করেছে। আধুনিক, জনকল্যাণমুখী ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার ও জনবান্ধব সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সকল জমির খতিয়ান ও মৌজা-ম্যাপ স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ ও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে ডাটা সেন্টার স্থাপন এবং ২০ হাজার মৌজার প্রায় দেড় কোটি স্বত্বলিপির ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হয়েছে।

২২।১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গুচ্ছগ্রামে ভূমিহীনদের পুর্নবাসনের কার্যক্রম শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। প্রথম পর্যায়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ২৫৪টি গুচ্ছগ্রামে ১০ হাজার ৭০৩টি পরিবার পুনর্বাসিত হয়েছে।

২৩।২০১৫-১৬ অর্থ-বছরে সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা মহিলাদের ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ইত্যাদি কর্মসূচিতে মোট ২ হাজার ৩ শত ৭৬ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে। নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে ‘ন্যাশনাল হেল্প লাইন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

২৪।ক্রীড়াক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমান্বয়ে সুদৃঢ় হচ্ছে। ক্রিকেটে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মত শক্তিশালী দলগুলিকে বাংলাদেশ পরাজিত করেছে। সম্প্রতি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকেও ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ তিন-শূন্য ব্যাবধানে পরাজিত করে। আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ’ দীর্ঘদিন পর পুনরায় বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ফেডারেশন কাপ আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৪ মহিলা ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

জনাব স্পিকার,
২৫।বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবসমূহ নির্বিঘ্নে, উৎসবমুখর পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদ্‌যাপিত হচ্ছে। একটি অসাম্প্রদায়িক, উদার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সুকুমার শিল্পের বিকাশে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ প্রদান করা হয়েছে।
২৬।স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী ও উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে এবং ঢাকা শহরের যানজট সমস্যার সমাধানকল্পে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শতভাগ স্যানিটেশন ও সকলের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে মহানগর, পৌরসভা, গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে পল্লী অঞ্চলে আরো প্রায় ৮০ হাজার আর্সেনিক মুক্ত নিরাপদ পানির উৎস স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

২৭।বাংলাদেশকে মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্যহ্রাস ও তাদেরকে স্বাবলম্বী করার জন্য সরকার ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করে আসছে। ২৪ লাখ পরিবারকে গত ৪ বছরে ৪০ হাজার ৪৪৫টি গ্রাম উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

২৮।বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জনমিতিক সূচকে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৪ ও ৬ ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা ৫ অর্জনের পথে রয়েছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পোলিওমুক্ত সনদ লাভ করেছে।

২৯।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ১০ জানুয়ারি ২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৬টি নতুন সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ৫টি নতুন আর্মি মেডিকেল কলেজের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

৩০।জেনেভায় অনুষ্ঠিত ৬৮তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে ‘Autism Spectrum Disorders – from Resolution to Global Action’ শীর্ষক সভায় অটিজম ও স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন ড. সায়মা ওয়াজেদ হোসেন প্রধান বক্তা ছিলেন। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক কার্যক্রম ব্যাপক প্রসংশিত হয়।

৩১।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে দক্ষ ও মেধাসম্পন্ন সুশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ার লক্ষ্যে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণসহ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কতৃক বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণার পর ২৫ হাজার ৮৩১টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, ৯১ হাজার শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়েছে।

৩২।শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধকল্পে ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে শুরু করে এসএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ কোটি ৬৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৯২৩টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ‘খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং ‘ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’ ও ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

জনাব স্পিকার,
৩৩।তথ্যপ্রযুক্তি খাত উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের সকল বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ প্রায় পঁচিশ হাজার সরকারি দপ্তরের ওয়েবসাইটের সমন্বয়ে জাতীয় তথ্য বাতায়ন নির্মাণ করা হয়েছে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় একসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে পর পর দু’বছর ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ পুরস্কার অর্জন করেছে।

৩৪।২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে। ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে তথ্য ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বিটিভি সদর দপ্তর ভবন ও ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম টিভি কেন্দ্রের আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
৩৫।বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে আইটি বিষয়ে আরো দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে উৎসাহ প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়- এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মোট ৩৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে বিনামূল্যে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে। নাগরিক সেবা প্রদানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সফল প্রয়োগের জন্য World Information Technology and Services Alliance কর্তৃক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-কে Public Sector Excellence ক্যাটাগরিতে ‘Global ICT Excellence Award-2014’ পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

৩৬।মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর নাগাদ উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে ফ্রান্সের থ্যালেছ এলিনিয়া-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে সকল সিম ও রিম নিবন্ধন করা হচ্ছে। নিরাপদে দেশে টাকা পরিবহনের লক্ষ্যে ১ হাজার ৩৪৬টি ডাকঘরে ‘পোস্টাল ক্যাশকার্ড’ নামে একটি নতুন সার্ভিস চালু করে সামাজিক সহায়তা ভাতা প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
৩৭।বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্মত বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিদ্যুতের অপরিসীম গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সরকার তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ১৪ হাজার ২৭১ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। বিদ্যুতের সুবিধাভোগী জনগণের সংখ্যা ৭৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে।

জনাব স্পিকার,
৩৮।সরকার দেশের সকল অঞ্চলের মধ্যে সুষ্ঠু ও সমম্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাওয়া-জাজিরা অবস্থানে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সড়ক অবকাঠামো ৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ নিজস্ব অর্থায়নে শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল সেতুর পাইলিং এবং নদীশাসন কাজের উদ্বোধন করেন।
৩৯।ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক-যোগাযোগ সহজীকরণ, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর এবং প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে প্রায় ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক চার কিলোমিটার টানেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই এ টানেলের নির্মাণকাজ শুরু হবে।

৪০।১১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং’ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৫৩টি নৌ-রুটে মোট ৩ হাজার ২৭৬ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ১৯ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে ‘পায়রা’ সমুদ্র বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অচিরেই বন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

৪১।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিশ্বখ্যাত বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত ১০টি নতুন উড়োজাহাজ ক্রয় চুক্তির আওতায় ২০১১ ও ২০১৪ সালে চারটি নতুন প্রজন্মের ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ সংগ্রহপূর্বক বিমানবহর আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।
৪২।সরকার পর্যটনশিল্পের প্রচার ও বিপণন কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালকে ‘পর্যটন-বর্ষ’ হিসাবে উদ্‌যাপন করার ঘোষণা করেছে। Bangladesh Economic Zone Authority-এর মাধ্যমে টেকনাফে ‘exclusive tourist zone’ গড়ে তোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যটন পুলিশ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

জনাব স্পিকার,
৪৩।পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সূচিত ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরিতা নয়’ নীতি সমুন্নত রেখেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহের সমাধানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ১৬ মে ১৯৭৪ তারিখে ঐতিহাসিক ‘স্থল সীমানা চুক্তি ১৯৭৪’ স্বাক্ষর করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টার ফলে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থলসীমানা চুক্তিটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১১ সালে একটি প্রটোকল প্রণয়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৬-৭ জুন ২০১৫ মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকালে Instrument of Ratification বিনিময়ের মাধ্যমে ‘স্থল সীমানা চুক্তি ১৯৭৪’ ও ২০১১-এর প্রটোকলটি কার্যকর করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা, বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্ব এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ও সুখ্যাতির ফলেই এই ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।

৪৪।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে রাজনীতিতে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে বাংলাদেশকে মর্যাদাপূর্ণ ‘Women in Parliament Global Forum Award, 2015’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

৪৫।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দু’টি সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিকে তৃণমূলপর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যাপক প্রসার ও এর টেকসই উন্নয়নে অভূতপূর্ব অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে International Telecommunication Union মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ‘ICTs in Sustainable Development Award’-এ ভূষিত করে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পদক ‘Champions of the Earth’-এ ভূষিত করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ সম্মাননা অর্জনের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়েছে। এই জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আবারও অভিনন্দন জানাই।

জনাব স্পিকার,
৪৬।যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ অন্যান্য চাঞ্চল্যকর ও জনগুরুত্বপূর্ণ মামলাসমূহ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অপরাধ দমনে বাংলাদেশ পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৫২ হাজার ৯১৩ জন পুলিশ-সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে আরও ৫০ হাজার পদ সৃজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ প্রায় ১ কোটি ২৮ লক্ষ ৮০ হাজার ৬৫৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এবং প্রায় ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮৫০ জন বিদেশি নাগরিককে মেশিন রিডেবল ভিসা প্রদান করা হয়েছে।

৪৭। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ তারিখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এর ধারাবাহিকতায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের আওতাধীন সকল শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। সমগ্র বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় এবং সর্বাধিক সৈন্য প্রেরণকারী দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান আজ সর্বজনবিদিত।

৪৮। ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে ২০১৫ পর্যন্ত ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত মোট ৯ কোটি ৭২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪২৫ জন নাগরিকের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অধিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য-সংবলিত স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

৪৯।সরকার দক্ষ, সেবামুখী, জবাবদিহিমূলক ও দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৫’ মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন, জনপ্রশাসন পদক প্রবর্তন, সকল ক্যাডার-কর্মকর্তাদের ডাটাবেইজ প্রস্তুত, মাঠ পর্যায়ে পদায়ন ও বদলি নীতিমালা প্রণয়ন এবং জনগণকে দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার ই-গভর্ন্যান্স কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে।

৫০।সরকার সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার পরিমাণ ৯০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকায় এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষে উন্নীত করেছে। ২০১৬-১৭ অর্থ-বছর হতে ১০ হাজার টাকা হারে মাসিক সম্মানী ভাতা প্রদান করা হবে। মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ ৬৭৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাসিক ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাসিক ২০ হাজার টাকা এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা হারে সম্মানী ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারবর্গের রাষ্ট্রীয় ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ ৪৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ১৮ হাজার টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মেধাবী সন্তান ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষা-সহায়তা ও উৎসাহ প্রদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ছাত্র-বৃত্তি’ চালু করা হয়েছে।

৫১।রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থাসমূহ কর্তৃক সিটিজেনস্‌ চার্টার প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশে ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়ন, ৩২১টি পৌরসভা ও বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড-পর্যায়ে ৪০৭টি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসাবে সরকার ময়মনসিংহ বিভাগ সৃজন করেছে। দুর্নীতিমুক্ত ও সুশাসনভিত্তিক একটি প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রণীত ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

৫২।নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা একটি স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায় অতিক্রম করছি। রূপকল্প-২০২১ এবং দিনবদলের সনদের ভিত্তিতে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং এ কার্যক্রমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ইতোমধ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এটির বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা এসব লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব।

৫৩।মহান জাতীয় সংসদ দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান সরকার রাজনীতি থেকে হিংসা, হানাহানি ও সংঘাতের অবসানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও আলোকিত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি সরকারি দল ও বিরোধী দলসহ সকলকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।

জনাব স্পিকার,
৫৪।ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে, বাঙালি জাতিকে আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে, আসুন ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।

আপনাদের সবাইকে আমি আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলাধুলায় কর্মোদ্দীপনা ও মনোবল বৃদ্ধি পায়: মাইনুল হাসান

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, ‘শারীরিকবিস্তারিত পড়ুন

দুর্গাপূজায় ভারত যাচ্ছে তিন হাজার টন ইলিশ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানি করবে কি না এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনা চলছে। এরইমধ্যে জানা গেল, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখা থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে আরও বলা হয়েছে, রপ্তানিকারকদের আবেদনের বিপরীতে নির্ধারিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো। সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর (উপসচিব, রপ্তানি-২ শাখা, কক্ষ নং ১২৭, ভবন নং ৩, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়) আবেদন করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। উল্লিখিত সময়সীমার পর প্রাপ্ত আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।বিস্তারিত পড়ুন

প্রচলিত দলগুলো জনপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে তরুণদের দল গঠন করতে হবে: ফরহাদ মজহার

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তরুণদের মাধ্যমে প্রকাশিত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দেশেরবিস্তারিত পড়ুন

  • কলেজছাত্র ইলহামের চিকিৎসায় তারেক রহমানের বিশেষ উদ্যোগ
  • সম্প্রীতি নষ্ট করতে বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে: হাসান আরিফ
  • রাষ্ট্র সংস্কার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার আহ্বানে ড. ইউনূসকে ৪ মার্কিন সিনেটরের চিঠি 
  • জাতিসংঘ অধিবেশনে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা নিরসনের প্রচেষ্টাই মূখ্য হয়ে উঠবে
  • ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে: তারেক রহমান
  • সারজিস আলম: দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সার ধরেছে
  • জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
  • বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক, শর্ত চার
  • কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর কে হবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী? আলোচনায় আছেন যারা 
  • মহানবীর আদর্শে বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব: ধর্ম উপদেষ্টা
  • নিউইয়র্কে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শেহবাজ শরিফের 
  • কাশিমপুর কারাগার থেকে পালানো যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার