সন্ধ্যা নামলেই চন্দ্রিমা উদ্যানে দেহ ব্যবসা!
চন্দ্রিমা উদ্যান (জিয়া উদ্যান) সম্পর্কে নানা ধরণের কথা প্রচলিত রয়েছে। রাজধানী ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র সংসদ ভবনের পাশে অবস্থিত এ উদ্যানটি। এই পর্যটক স্থান নিয়ে লেখার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই রয়েছে। এখানে নাকি সন্ধ্যে নামার সাথে সাথে রমনীদের পদচারণা বেড়ে যায়। সন্ধ্যা আরেকটু গভীর হলে শুরু হয় অনৈতিক কাজ।
আসলে কি হচ্ছে এই মনোরম পরিবেশের অন্তরালে? ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা। একটি বিশেষ টিম হাজির চন্দ্রিমা উদ্যানে।কোথায় সেই রমনীরা, তাদের পাবো কিভাবে? নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের টিমকে। উদ্যানের ভিতরে বসে পানি ও সিগারেট বিক্রি করছে এক প্রবীণ মহিলা। পানি নেওয়ার নাম করে মহিলার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো ‘ব্যবস্থা আছে নাকি?’ সাথে সাথে মহিলা উত্তর দিলো একটু অপেক্ষা করেন চলে আসবে। শুরু হলো আমাদের অপেক্ষার পালা। চলছে ঘড়ির কাটা। তখন সন্ধ্যা ৬টা।
হাঁটতে হাঁটতে উদ্যানের ভিতরে চলে গেলাম। সব জায়গাতেই কিছু না কিছু অনৈতিক কাজ হচ্ছেই। গাছের আড়ালে, ঝোঁপের ফাঁকে র্নিবিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে অসামাজিক কর্মকাণ্ড।এখন মূল কথায় আসা যাক। এখানে রাতের আধারে টাকার বিনিময়ে চলে দেহ ব্যবসা। চলে মাদক বিক্রিসহ নানা অনৈতিক ও অসামাজিক কাজ।
উদ্যানের পরিবেশ রক্ষায় আনসার নিয়োগ করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তারাই নাকি টাকার বিনিময় এই অনৈতিক কাজ করার সুযোগ করে দেয় উদ্যানের মধ্যে। বনের মধ্যে একটু এগিয়ে দেখা গেলো জোড়ায় জোড়ায় প্রকাশ্যে চলছে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। দেখেও যেন কিছু বলার নেই।
ঢাকা শহরের উদ্যানগুলির মধ্যে এটি অন্যতম একটি উদ্যান। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী এখানে ঘুরতে আসেন। এখানে প্রায়ত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর থাকায় দর্শনার্থীদের ভীড় চোখে পড়ার মতোই। আর এতো মানুষের ভীড়ে এই ধরনের অনৈতিক কাজ আসলেই অবাক হওয়ার মতো।
ঘড়িতে ৭টা। হঠাৎ এক বোরকা পরা নারী পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলে উঠলো ‘বসবা নাকি’। আমাদের টিম তার পিছু নিল। কে এই নারী? একটু পরেই এক খদ্দের তার সাথে বসে গেলেন নির্জন স্থানে। পাশ দিয়েই ঘোরাফেরা করছে আনসার বাহিনীর সদস্যরা। আনসার সদস্যদের ওই খদ্দের টাকা দেয়ার কারণে তারা চুপ হয়ে গেলেন। ২০মিনিট অতিবাহিত হবার পর ফিরে এলেন ওই নারী। এরপর আমরা তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম। অনেক অনুরোধের পর ১শ টাকার বিনিময় আমাদের সাথে কথা বলতে রাজি সেই নারী। আগে টাকা তারপর কথা।এরপর টাকা দিয়েই কথা বলা শুরু হলো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই নারী জানালেন আসল তথ্য। কোন ধরণের মেয়েরা এখানে আসে আর কেনই বা এই পেশায় তারা।তিনি জানান,‘আমার একটি ছেলে ও মেয়ে আছে। আমি ২০০ টাকা করে নেই। আমার বাড়ি ঢাকাতেই। পেট আছে তাই এই কাজ করতে হয়। এখানে অনেক মেয়ে আছে। কেউ আসে পরিবারের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে। আর অনেকের আছে নানান কষ্ট…। অনেকে আসে অভাবের তাড়নায়। কেউ আসে নিছক আনন্দ….। ২-৩ মিনিটি কথা বলার পরই ওই নারী বললো ভাইয়া এখন আমাকে একটু যেতে হবে। আজ শুক্রবার কাষ্টমার বেশি। এখন একটু কাষ্টমার ধরি আপনারা পরে এক সময় আইসেন কথা বলবো। এখন যাই।’ এই বলে চলে গেলেন তিনি।
এখানে দায়িত্বরত আনসাররা ফাঁদ পেতে বসে থাকেন। কখন একটা মক্কেল (ব্যক্তি) জুটবে। টাকা দিলে ভালো না দিলে, ওই ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোবাইল-মানিব্যাগ হাতিয়ে নেয়। সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই সবকিছু হারিয়ে চলে যায়। বিডি টোয়েন্টিফোর লাইভ ডটকমের টিম ওই নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় দুইপাশ থেকে তাদেরকেও ঘিরে ফেলেছিল আনসার সদস্যরা।
সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর সেখান থেকে সটকে পড়েন তারা। কথা বলতে চাইলেও রাজি হন নি আনসার সদস্যরা। অনেকে আবার দৌঁড়ে পালিয়েছেন।তবে রাজধানীর উদ্যানেগুলোতে এধরনের অনৈতিক কার্মকাণ্ড চলার কারণে সেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেতে পারেন না বলে অভিযোগ উদ্যানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন