সবুজের বুকে লাল সে তো উড়বেই চিরকাল
দেশমাতৃকার বন্দনার জন্য যে গান সেই গান দেশাত্মবোধক গান। এ গানের অনেক রূপ। উদ্দীপনা গান, জাগরণী গান, দেশপ্রেমমূলক গান, দেশের গান এমনই নামে বিশেষায়িত। মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণার উৎস ছিল দেশাত্মবোধক গান। গানের বাণী আর সুর যুদ্ধক্ষেত্রে যোদ্ধাদের যুদ্ধজয়ের মন্ত্রে করেছিল উদ্বুদ্ধ। গেরিলা যোদ্ধাদের শত্রু নিধনে জুগিয়েছিল অপ্রতিরোধ্য শক্তি। সে সবের পর অন্য দেশাত্মবোধক গানগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন সেলিম কামাল
আসিফের গাওয়া ‘সবুজের বুকে লাল, সে তো উড়বেই চিরকাল’ গানটি এ প্রজন্মের শিল্পীদের গাওয়া উল্লেখযোগ্য একটি দেশাত্মবোধক গান। ‘লাল সবুজ’ চলচ্চিত্রের জন্য গাওয়া হলেও গানটি দেশাত্মবোধক গান হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের এটি গাইতে উদ্বুদ্ধ করে।
একাত্তরে শুরু হল স্বাধীনতা যুদ্ধ। কোনো আপস নেই এ সংগ্রামে। মৃত্যুপণের যুদ্ধ। যুদ্ধের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ মুক্তি সেনাদের জন্য রচিত হল গান। স্বাধীনতার সূর্যটাকে ছিনিয়ে আনার। সংগ্রামের রূপ পেল গানের বাণীতে ও সুরে- পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে/রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল। শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠের এ গানের রচয়িতা গোবিন্দ হালদার, আর সুরকার সমর দাস। জর্জ হ্যারিসন গেয়েছিলেন ‘বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মর্মস্পর্শী গান।
মুক্তিযুদ্ধে গণসঙ্গীত যেমন বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে, তেমনি মকুন্দ দাস, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের দেশাত্মবোধক গানও মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে জোরালো ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের প্রবীণ-নবীন অনেক শিল্পীই আমাদের সঙ্গীতের এ শাখাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
শিল্পী আবদুল জব্বারের কণ্ঠে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ কিংবা ‘হাজার বছর পরে’, আপেল মাহমুদের কণ্ঠে ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ কিংবা ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবোরে’, স্বপ্না রায়ের কণ্ঠে ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলবো না’, সর্দার আলাউদ্দিনের কণ্ঠে ‘জগৎবাসী একবার আসিয়া’ মোকসেদ আলী সাঁইয়ের লেখা ‘সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের শ্মশান করেছে কে’, গাজী মাজহারুল ইসলামের লেখা ও আনোয়ার পারভেজের সুর করা ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ প্রাণ জুগিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে।
এ ছাড়াও শহিদুল ইসলামের লেখা ও সুজেয় শ্যামের সুরে ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ফেরদৌস হোসেন ভূঞার লেখা ‘হায়রে কিষাণ’, আবুল কাশেম সন্দ্বীপের লেখা ও সুজেয় শ্যামের সুরে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, আখতার হোসেনের লেখা ও অজিত রায়ের সুরে ‘স্বাধীনতা স্বাধীন, দিকে দিকে’, জীবনানন্দ দাশের ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’, সত্যেন সেনের লেখা ও অজিত রায়ের সুর করা ‘আজি সুপ্ত সাগর ওঠে উছলিয়া’, তোরা শুনতে কি পাস’ মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে।
শহিদুল ইসলামের লেখা ও সুজেয় শ্যামের সুরে ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’ গানটিতে অজিত রায়ের সঙ্গে কোরাসে কণ্ঠ দিয়েছিলেন ফকির আলমগীর। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গানের প্রতি অনীহা দেখাননি। তাদের অনেকের কণ্ঠেই আমরা পেয়েছি দারুণ সব গান। রুনা লায়লার ‘আমায় গেঁথে দাওনা মাগো’, ‘স্মৃতি ঝলমল সুনীল মাঠের কাছে’, সৈয়দ আবদুল হাদীর ‘সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি’, সাবিনা ইয়াসমীনের গাওয়া ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না’ প্রভৃতি। খুরশিদ আলম, এন্ড্র– কিশোর, খালিদ হাসান মিলু, কুমার বিশ্বজিৎ, তপন চৌধুরী, কনক চাঁপা, সামিনা চৌধুরী, বশির আহম্মদ, রফিকুল আলম, বেবী নাজনীন, শাম্মী আকতার, ফকির আলমগীর, ফাহমিদা নবী, ফেরদৌস ওয়াহিদ, আবিদা সুলতানা, বারী সিদ্দিকী, ফাতেমা-তুজ জোহরা, আইয়ুব বাচ্চু, জেমস, ফরিদা পারভীন, মমতাজ, শাকিলা জাফর, আলম আরা মিনু, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, ইয়াসমিন মুশতারী, কিরণ চন্দ্র রায়, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, মনির খান, আজম খান প্রমুখ গেয়েছেন বেশক’টি দেশের গান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন