সব হত্যার দায় সরকারকে নিতে হবে : খালেদা জিয়া
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান, তাঁর বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় ও কারারক্ষী রুস্তম আলীকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ‘তাভেলা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব রাব্বী তনয় এবং রুস্তম আলী পর্যন্ত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তা, মানুষের অধিকার, ভোটাধিকার, নির্বাচন, গণতন্ত্র, শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা এখন লাশবাহী গাড়িতে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার সহিংস রক্তপাত ঘটানো ছাড়া তাদের টিকে থাকার অন্য কোনো পথ খোলা নেই। দেশ পরিচালনায় যেহেতু জনগণের সমর্থন নেই সেহেতু খুন-জখম টিকিয়ে রাখাকেই তারা পরিত্রাণের পথ মনে করছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে যেকোনো হত্যাকাণ্ডকে নিজেদের স্বার্থে অতি অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনী রচনা করা আওয়ামী লীগের স্বভাবধর্ম। কিছুদিন ধরে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায় ও বিদেশি হত্যার ঘটনাগুলোতেও তারা একের পর অপপ্রচার চালিয়েছে। বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। ভোটারবিহীন সরকারের এই সমস্ত অপকৌশল মূলত প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া ও আসল অপরাধীদের আড়াল করা। সরকারপ্রধান যতই উচ্চস্বরে বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করুন না কেন, তাভেলা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে জুলহাজ মান্নান, মাহবুব রাব্বী তনয় ও রুস্তম আলী পর্যন্ত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে।’
বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আরো বিপজ্জনক। দেশের মানুষ এক ভয়াল নৈঃশব্দের মধ্যে আতঙ্কে দিনযাপন করছে। ব্যাংকার, শিক্ষক, এনজিওকর্মী, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, ছাত্র, নারী, শিশুসহ অনেককেই রাষ্ট্রযন্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে জীবন দিতে হয়েছে। সরকার সর্বক্ষেত্রে একচেটিয়াত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ভারসাম্যকেও চরমভাবে ভেঙে ফেলেছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের সব অঙ্গ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। সুতরাং চারদিকে অরাজকতারই জয়জয়কার। দেশে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত, অপহরণ, গুম, মুক্তিপণ আদায়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড প্রচণ্ড আধিপত্য বিস্তার করেছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘সুস্থ পরিবেশে গণতন্ত্র চর্চা এখন কেবল কবরেই সম্ভব। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণেই ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র ক্যাডাররা উৎসাহিত হয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে, ব্যালট পেপারে বেপরোয়া সিল মারে এবং অস্ত্রের মুখে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়; খুন-জখমসহ নানাবিধ অনাচারে লিপ্ত থেকে দেশকে অতল গহ্বরের দিকে ঠেলে দেয়। তাই দেশে শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ এখন আর স্বাভাবিক মৃত্যুর আশা করে না।’
মির্জা ফখরুলের নিন্দা প্রকাশ
অপর এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গোটা দেশবাসী ঘরে-বাইরে আজ আর নিরাপদ নয়। রাষ্ট্রক্ষমতা জোর জবরদখলকারীরা বিরোধী দল দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করার কারণেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ায় বিভিন্ন অপকর্ম ও হত্যাকাণ্ডে সন্ত্রাসীরা আরো বেশি মাত্রায় উৎসাহিত হচ্ছে। দেশকে সন্ত্রাসবাদের কবল থেকে রক্ষা করতে জনগণের ঐক্যের বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত জুলহাজ মান্নান, মাহবুব রাব্বী তনয় ও রুস্তম আলীর হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জানান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন