সর্বশক্তি দিয়ে ‘গণতন্ত্র ফেরাবে’ বিএনপি
স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ‘গণতন্ত্র নেই’ দাবি করে বিএনপি নেতারা বলেছেন, গণতন্ত্র ফেরাতে সব দলমতকে এককাতারে আনতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন।
এজন্য অপশক্তিকে পরাজিত করতে নেতাকর্মীদের ‘দৃঢ় সংকল্পচিত্তে’ শপথ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের ‘কাজী বশির মিলনায়তনে’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তারা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘৪৫ বছর পার হয়ে গেছে, অথচ এখনও দুর্ভাগ্য ও হতাশার সঙ্গে বলতে হয়, নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না। ক্ষমতাসীনরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে গোটা জাতিকে বিকৃত ইতিহাস দিচ্ছেন।’
নেতাকর্মীদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পড়ার পাশাপাশি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বায়োগ্রাফি পড়ার পরামর্শ দেন তিনি।
গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সেই বাংলাদেশ দেখছি না, যার জন্য যুদ্ধ করেছি। সেই দেশ ঘৃণ্য এক দেশ হয়ে গেছে। স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গেছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অসহায় আদিবাসী সাঁওতালদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ। ধিক, এই লজ্জা রাখার জায়গা নেই। কারণ একাত্তরে ঘৃণ্য হানাদার বাহিনী ঠিক এভাবেই বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। ওদিকে নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটিও এই সরকারের আমলে।’
জিয়াউর রহমানকে নিয়ে ‘বিকৃত মন্তব্যকারীদের’ সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কুৎসিত কথা বলে, তারা কুৎসিত মানুষ। আমরা কুৎসিত নই। সত্যের পূজা দিয়ে অসুন্দরকে পরাজিত করব। কারো কথায় চলব না। আমরা আমাদের কথায় চলব।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে নেতাকর্মীদের শপথ নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাবি করে, অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল গণতন্ত্র, কথা বলার স্বাধীনতা। এখন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সের মধ্যে বন্দি। এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে বিএনপিকেই দায়িত্ব নিতে হবে। দলমত নির্বিশেষে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো রাজনীতি নেই, আছে দলনীতি। এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে এর পরিপন্থী কাজ করে। স্বাধীনতার চেতনা কি একদলীয় শাসন?
‘দেশে গণতন্ত্র আসবে’- প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপি এই নেতা বলেন, ‘এইদিন শেষ নয়। ধৈর্য ধরতে হবে। গণতন্ত্র অবশ্যই ফিরে আসবে। গণতন্ত্র ফিরে আসার পথ কেউ রোধ করতে পারবে না। একদলীয় নীতি বেশি দিন চলবে না। সব রাজনৈতিক দল-মত-শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে।
এ সময় বিএনপির রাজনীতি সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান দলটির এই নীতিনির্ধারক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক মোস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মামুন আহমেদ, বিএনপি ঢাকা মাহনগর নেতা কাজী আবুল বাশার, শ্রমিক দলের সভাপতি নুরুল ইসলাম খান নাসিম, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যালবার্ট ডি কস্টা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন