সহিংস ভিডিও গেম আগ্রাসী মনোভাব বাড়ায়
প্রযুক্তিনির্ভর এ যুগে ভিডিও গেম একটি সাধারণ বিষয়। পরিবেশিত সহিংসতার মাত্রা গেমভেদে কম-বেশি হলেও প্রতিটি গেমেই রয়েছে সহিংসতা তথা হামলা, আক্রমণ ইত্যাদি। আর এ সব গেমের ভোক্তা বা গেমার (খেলোয়াড়) সাধারণত শিশু, কিশোর ও যুবক।
এই বয়সে মস্তিস্ক সাধারণত সতেজ থাকে। এ সময়ের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ে পরবর্তী জীবনে। তাই যারা এই বয়সে সহিংস ভিডিও গেমে অভ্যস্ত তাদের অনেকেই সহিংস কিংবা আগ্রাসী আচরণ আয়ত্ত করে নেয়। যার প্রভাব পড়ে সমাজ ও পরবর্তী জীবনে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এর প্রমাণ পেয়েছেন।
তারা দাবি করেছেন, ভিডিও গেমের মাধ্যমে সহিংসতা বাড়ছে। আমেরিকান সাইক্লোজিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (এপিএ) ২০০৫ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রকাশিত এ সংক্রান্ত তিন শতাধিক গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
গবেষকরা বলেছেন, খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময়ে সহিংস ভিডিও গেম খেলার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার অভিজ্ঞতা অর্জন করে। সেটা অল্প সময় বা দীর্ঘ সময়ের হত পারে। আর এসব অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের মধ্যে আক্রমণাত্মক কিংবা আগ্রাসী প্রভাব ফেলে। সমাজে আগ্রাসী আচরণ, উগ্র মনোভাব ও আক্রমণাত্মক প্রভাব যেমন বাড়ছে, তেমনি সহানুভূতি ও সহনশীলতার মতো সামাজিক আচরণ কমে যাচ্ছে।
আবার ভিডিও গেমের পক্ষে থাকা কিছু গ্রুপ এ গবেষণা ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। গবেষণাকারী মনোবিজ্ঞানীকে তারা এন্টি-গেমার বা খেলোয়াড়বিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন। এ ছাড়া ভিডিও গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও ওই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উত্তর লন্ডনের গেমিং প্রতিষ্ঠান আর্কেডের মার্ক স্টার্কি বলেন, ‘এ ধরনের কথা আগেও বলা হয়েছে। এটা তারই পুনরাবৃত্তি। হ্যাঁ, ভিডিও গেম অতি বাস্তবধর্মী ও অতিসহিংস। কিছু উচ্চমাত্রার সহিংস গেমের প্রভাবও সমাজে পড়ে। কিন্তু সেটা সিনেমার তুলনায় কোনো কারণেই বেশি নয়। বরং সিনেমা ও গেমের সহিংসতার রেটিং সিস্টেম একই।’
অবশ্য এপিএ স্বীকার করেছে যে, বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া দরকার। বিশেষ করে, কিভাবে সহিংস গেম শিশুদের মধ্যে প্রভাব ফেলে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী ড. জেন ম্যাককার্টনি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘যদিও এটি একটি উত্তম গবেষণার ফল কিন্তু তারপরও বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া দরকার। বিশেষ করে, কিভাবে এ সব গেম যুবকদের প্রভাবিত করছে।’
এপিএ গবেষণা প্রতিবেদনে আমেরিকান গেম রেটিং সংস্থাগুলোকে রেটিং সিস্টেম পুনর্বিবেচনা করতে পরামর্শ দিয়েছে। অর্থাৎ গেমে সহিংসতার মাত্রা বা বেশিষ্ট্য এমন না হয়, যাতে সমাজে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। সেই সঙ্গে রেটিং সিস্টেমটা যেন বিশ্বমানের হয়।
আমেরিকান সাইক্লোজিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের এ গবেষণা প্রতিবেদনে সাড়া দিয়ে ইউকে ইন্টারেক্টিভ এন্টারটেইমেন্ট (ইউকেআইই) বলেছে, সর্বশেষ গবেষণায় আগের গবেষণাগুলোর মতো গেমের সঙ্গে আগ্রাসনের কার্যকর কোনো সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। তাছাড়া গেমের সঙ্গে বাস্তব জীবনের কোনো সম্পর্কও দেখানো হয়নি। আগের গবেষণাগুলোতে ভিডিও গেমের ইতিবাচক বিষয়ও বেরিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কল-কারখানায় কোনো শিশুশ্রম নেই: প্রতিমন্ত্রী
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, প্রতিষ্ঠানিকবিস্তারিত পড়ুন
বেনাপোলের কিশোরী জোনাকির মরদেহ যশোরে উদ্ধার
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়া মডেল মসজিদের পাশে একটি পুকুর থেকেবিস্তারিত পড়ুন
শিশুর স্কুল থেকে শেখা বদভ্যাস থামাবেন যেভাবে
স্কুল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুনবিস্তারিত পড়ুন