‘সাইফুল নিজের মেয়েদেরকেও নির্যাতন করতো’
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পাঁচ বছরের শিশু ধর্ষক নরপিশাচ সাইফুল ইসলাম ওরফে কালা সাইফুলের সাবেক শ্বশুর ও আপন চাচা সহির উদ্দিন জানান, বিকৃত মন ও মানসিকতার মানুষ সাইফুল। তিন কন্যা ও এক পুত্রের জনক সে। স্ত্রী নার্গিসকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করতো। বিয়ে দেবার পরও বড় মেয়ে রেশমাকে (১৮) মারধর ও নির্যাতন করতো সাইফুল। বড় মেয়ের শ্বাশুড়ির সাথে অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তার মেয়ে নারগিস সাইফুলকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় মেয়ে সুজাতা (১৩) ও তৃতীয় মেয়ে সালমাকে (১১) নিয়ে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছে। তাদের একমাত্র ছেলে নাজমুলকে (৫) অন্যের বাড়িতে রাখা হয়েছে।
ধর্ষক সাইফুলের বড় ভাই সাইদুল ইসলাম (৫৫) ও ছোট ভাই সাফিউল ইসলাম (৩৫) বলেছেন, সাইফুল ইসলাম তাদের আপন ভ্রাতা হলেও মাদসাকক্ত ও দুশ্চরিত্র হওয়ার কারণে তার সাথে কোনপ্রকার সম্পর্ক রাখেননি তারা।
পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের জমিরহাট এলাকার তকেয়াপাড়া গ্রামের মেয়ে (৫) গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বাড়ীর বাইরে খেলতে গেলে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে রাত ১১ টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাঁর পিতা।
গত বুধবার ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ীর পার্শবর্তী হলুদের ক্ষেত থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে তার স্বজনরা। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে শিশুর পিতা সুবল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে একই গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী জহির উদ্দিনের পুত্র সাইফুল ইসলাম (৪২) ও আফজাল হোনের পুত্র কবিরাজকে (৪৮) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
ভিকটিম শিশুর দাদা বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয়। মাইকিং করার পর সাইফুল শিশুর বাবাকে মাইকিং করতে নিষেধ করেন এবং মেয়েকে পাওয়া যাবে বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। পরে ভোররাতে মেয়েকে হলুদ ক্ষেত থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে সে বাধা প্রদান করে এবং শিগগির সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানালে তাদের সন্দেহ হয়। পরে শিশুর কিছুটা জ্ঞান ফিরে এলে সে কালা সাইফুলের নাম উল্লেখ করে। ভিকটিমের মাসীমা আহাজারি করে বলেন, আমার নিজের কোনও সন্তান নাই। আমি আমার বোন রূপসির একমাত্র মেয়েকে নিজের মেয়ের মতোই স্নেহ করি। বুলবুলিও পাষণ্ড সাইফুলের ফাঁসি দাবি করেছেন।
জমিরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ধর্ষক সাইফুলের দ্রুত বিচারে এ ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন। এলাকার হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের দাবি কালা সাইফুলের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মোঃ মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, লোমহর্ষক এ ঘটনায় ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য সঠিক তদন্ত এ অকাট্য প্রমাণসহ স্বাক্ষ্যের প্রয়োজন রয়েছে। ওসি মাহমুদুল আলম স্বাক্ষীদের নির্ভয়ে সঠিক স্বাক্ষ্যদানের আহবান জানান। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই স্বপন কুমার চৌধুরী বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সবার সহযোগিতার দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন। আসামী সাইফুলকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার জন্য গতকাল মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ রিমান্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন