সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে জানেন না অধিকাংশ পুলিশ!
দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে সাইবার ক্রাইমও। প্রতিদিন হাজারো মানুষ সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন। চলমান সাইবার ক্রাইমের এমন হাজারো চিত্র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। নিজস্ব প্রতিবেদক আদনান রহমান ও জসীম উদ্দীনের পাঁচ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আজ থাকছে এর তৃতীয় পর্ব।
দেশে তথ্যপ্রযুক্তিগত উন্নতির প্রধান বাধা ‘সাইবার অপরাধ’। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশলে সাইবার অপরাধ করছে অপরাধীরা। কিন্তু সাইবার ক্রাইম কি সে সম্পর্কে অধিকাংশ পুলিশ সদস্যের নেই ধারণা। সে কারণে ভুক্তভোগীরা মামলা করলেও তাৎক্ষণিক কোনো পুলিশী সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলা তদন্ত নিয়ে সাধারণত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। থানা পুলিশের অধিকাংশ এসআই কিংবা পরিদর্শক পদের কর্মকর্তারা সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলা তদন্তে আগ্রহী নন। এছাড়া মামলাই যেন না হয়, সেজন্য থানা পুলিশের মধ্যে একটা গাছাড়া ভাব দেখা যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগে সে বিষয়টিও উঠে এসেছে। এছাড়া স্পেশালাইজড জনবল, তথ্যপ্রযুক্তিগত ইন্সট্রুমেন্ট না থাকায় থানা পুলিশের কিছু করারও থাকে না।
থানা পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি তথ্য প্রযুক্তিগত কিছু জ্ঞান অর্জন করা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পুলিশে আসছে। কিন্তু বেশির ভাগ পুরাতন পুলিশ কর্মকর্তাদেরই এ সংক্রান্ত সঠিক কোনো ধারণা নেই। আর সে কারণে মামলার তদন্তভার যেমন তারা নিতে চান না। তেমনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে তদন্তভার নিলেও সে তদন্ত সফল হয় না কিংবা দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের সাইবার অপরাধ দমন টিমের এক পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ডিবি পুলিশের জনবল ও তথ্যপ্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই বললেই চলে। সাইবার অপরাধ দমনে ডিবি পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার। যে পরিমাণ অভিযোগ ও মামলা হয় তার ৮০ শতাংশই নজর দিতে পারে না ডিবি পুলিশ।
পুলিশের মধ্যে অপরাধ ও তদন্ত সংস্থা (সিআইডি) একমাত্র সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে কাজে আসছে। সিআইডি ব্যতীত এক্সপার্ট অপিনিয়ন অন্য কোনো বাহিনী কিংবা সংস্থাও দিতে পারেন না। র্যাব পিবিআই ও কাউন্টার টেরোরিজমের একটি করে টিম সম্প্রতি ভালো কাজ শুরু করলেও সবাইকে সিআইডির কাছ থেকে এক্সপার্ট অপিনিয়ন নিতে হয়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাজে এটাও একধরণের বাধা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণ মানছেন অনেকেই।
সিআইডির মতে, দেশে সাইবার অপরাধ সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষের ধারণা নেই। জেনে না জেনে অনেকেই অপরাধ করছেন। যারা সাইবার অপরাধের মামলা দায়েরের পর প্রাথমিকভাবে তদন্তভার পান সেই থানা পুলিশেরও সাইবার অপরাধ সম্পর্কে নেই ভাল ধারণা। যে কারণে অপরাধ ও অপরাধী কোনটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সিআইডির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এএসপি নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, হ্যাকাররা খুবই এক্সপার্ট, কৌশলী ও বুদ্ধিমান। তারা প্রতিনিয়ত কৌশল পরিবর্তন করে থাকে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ অপরাধীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখে। তাদের সনাক্তকরার ক্ষেত্রে নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। তাদের ধরতে গেলে আমাদের আরও বেশি দক্ষ ও এক্সপার্ট হতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে থানা পুলিশে এ সংক্রান্ত মামলা তদন্ত করার মতো জনবল খুবই কম।
তবে তিনি বলেন, সিআইডি সব মামলা তদন্ত করে না। জনবল ও যন্ত্রাংশ, অত্যাধুনিক ল্যাব থাকায় সিআইডিই একমাত্র সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম। মামলা দায়েরের পর অটোমেটিক্যালি বেশির ভাগ সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলা সিআইডিতে চলে আসে। যদি থানা পুলিশে দক্ষ জনবল থাকতো তাহলে সাইবার অপরাধে জড়িতরা কেউই নিস্তার পেতো না।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর এসপি আহসান হাবিব পলাশ বলেন, পিবিআই প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে স্বল্প পরিসরে হলেও সাইবার অপরাধ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু স্পেশালাইডজ এ ক্ষেত্রটিতে যারাই কাজ করবেন তাদের বদলি নির্দেশনা সীমিত করা উচিত। নইলে নতুনদের নিয়ে নতুন করে আবারো ট্রেইনাপ করতে হয়। এতে করে সময় ও অর্থ খরচ বেশি হয়। সুযোগ পেয়ে অপরাধীরা আড়ালে চলে যায়।
র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব সাইবার অপরাধীদের সনাক্ত, গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনতে এক্সপার্ট ও দক্ষ জনবল অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি র্যাব এই অপরাধ দমনে আরও বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে। জাগো নিউজ
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন