সাকার রায়ের কপি ফাঁস : জড়িতদের বিচারে ধীরগতি
এ কে আজাদ : মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের চূড়ান্ত রায়ের পর রায় পুনর্বিবেচনার দিন ধার্য হলেও তার ভুয়া রায়ের কপি ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিচারে অগ্রগতি নেই।
এক বছর সময় পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের বিচার শেষ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল রিভিউয়ের চূড়ান্ত রায়ে খালাস পেল না ফাঁসি হলো সেটা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিবেচ্য বিষয় নয়। আসামিরা সাইবার অপরাধ করেছে, ট্রাইব্যুনাল সেই বিচার করছেন।’ এত সময়ের পরও অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ করে অভিযোগ গঠন করতে না পারার জন্য আসামিপক্ষকে দায়ী করেন রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
আসামিপক্ষ কারণে-অকারণে বিলম্ব করে সময় নষ্ট করছে। এ মামলার অভিযোগ গঠনের ছয় মাসের মধ্যে এর বিচারকাজ শেষ করতে হবে মর্মে বলেন এ আইনজীবী।
রায়ের কপি ফাঁসের মামলার অন্যতম আসামি সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরীর অসুস্থতার জন্য বেশির ভাগ সময় শুনানি হয়নি। জানা গেছে, যতবার চার্জ শুনানি পেছানো হয়েছে তার অধিকাংশই পিছিয়েছে অসুস্থতার অজুহাতে। সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ মোট সাত আসামির বিচারকাজ চলছে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল (ঢাকা) বিচারক এস এম সামছুল আলমের আদালতে। আগামী ২৯ নভেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিচারপ্রত্যাশী এক আইনজীবী বলেন, ‘সাকা চৌধুরীর পরিবার বা আইনজীবীরা মানবতাবিরোধীদের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এই ঘৃণ্যতম কাজ করেছে। তাদের প্রচারিত রায়ের কপির সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের রায়ের অনেকাংশেই মিল ছিল না। যেহেতু ট্রাইব্যুনালের সাজা আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন, তাহলে রিভিউতেও রায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। দ্রুত সাকার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে বলে আমরা আশা করি।’
এ মামলার আসামিরা হলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী (জামিনে), ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (জামিনে), ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম (কারাগারে) ও তার জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসান (পলাতক), ম্যানেজার এ কে এম মাহবুবুল হাসান (কারাগারে), আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অফিস সহকারী (সাঁটলিপিকার) ফারুক হোসেন (কারাগারে), পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী (কারাগারে)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার আগেই তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সামনে রায়ের স্পাইরাল বাইন্ডিং কপি প্রদর্শন করেন, প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে যে, রায়ের কপি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘোষণার আগেই তারা পেয়েছেন। এবং ওই কপি নিয়েই তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মিডিয়ায় রায় প্রকাশ হলে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন আলী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র আইনজীবী মেহেদী হাসানের চেম্বারে যান এবং রায় কীভাবে ফাঁস হলো জানতে চান। মেহেদী হাসান তাকে জানান, রায়ের কপি তার কাছ থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার নিয়ে গেছে। তারাই অনলাইনে এ রায় ফাঁস করেন। নয়ন আলীকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেহেদী। নয়ন আলীর জবানবন্দির ভিত্তিতেই ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে মর্মে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
এ মামলায় ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট অভিযুক্ত ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ডিবির পরিদর্শক মো. শাহজাহান।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তবে রায়ের আগেই সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্য এবং আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা ‘রায়ের খসড়া কপি’ সংবাদকর্মীদের দেখান। রায় ঘোষণার পরদিন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ৪ অক্টোবর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। রাইজিংবিডি
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন