সাগর-রুনীর হত্যাকারীদের ধরতে আল্টিমেটাম

সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যাকারীদের ধরতে ১ মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিকেরা।
সাগর-রুনী হত্যার ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে এ আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন ডিআরইউর সভাপতি জামাল উদ্দিন। সমাবেশের শুরুতে সাগর-রুনী স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আগামী ১ মাসের মধ্যে সাগর-রুনী হত্যাকারীদের না ধরলে গণস্বাক্ষর অভিযান, মিছিল ও সমাবেশের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা লজ্জা পাই, যখন সাধারণ মানুষ বলে সাংবাদিক মারলে কিছু হয় না। আমরা নিরাশ নই। তবে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবেই। সরকার যতোই ক্ষমতাবান হোক না কেন, সাংবাদিকদের দাবির কাছে সরকারকে মাথা নত করতে হবে।’
সাগর-রুনী হত্যাকারীদের বিচার যতোদিন না হবে ততোদিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাংবাদিক নেতারা। যে কোন মূল্যে সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের বিচার চান তারা।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন হত্যাকারীদের ধরতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। সে সময়কার আইজিপি হত্যাকাণ্ডের মামলায় অগ্রগতির কথা বলেছিলেন। কিন্তু কার ইশারায়, কোন নীতিতে হত্যার ৪ বছরেও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়নি।’
সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে পার পাবেন না এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এই কাহিনী, সেই কাহিনী আর কতকাল? যতোদিন হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা না হবে ততোদিন আন্দোলন চালিয়ে যাব। এ আন্দোলন দাবিয়ে রাখা যাবে না। যারা নিজের স্বার্থে আন্দোলন থেকে সরে গেছেন, সাগর-রুনীর সাথে বেঈমানি করেছেন ইতিহাস তাদেরকে ক্ষমা করবে না। যতোদিন এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলন না হবে ততোদিন সবাই ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন।’
সকলকে যৌক্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে গাজী বলেন, ‘তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলন গড়ে তুলে আমরা সরকারকে বিচার করতে বাধ্য করবো।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, ‘আমাদের নিরাশ হলে চলবে না। হত্যাকারীরা যতোই শক্তিশালী হোক, আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করতে পারবো। বিচার হতেই হবে।’
ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘সাগর-রুনী হত্যার পর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তাদের সন্তান মেঘের দায়িত্ব সরকার নেবে। কিন্তু এই চার বছরে ১ বারও মেঘের খোঁজ নেওয়া হয়নি।’
প্রতি মাসে অন্তত ১ বার সাগর-রুনী হত্যার বিচারের দাবিতে কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ মধুসূধন মণ্ডল বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া এ বিচার পাওয়া সম্ভব না। প্রতি মাসে অন্তত ১ বার প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে জানিয়ে দিতে হবে, যে কোন মূল্যে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না বলে জানান ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ।
এ বিচারেরর দাবিতে আন্দোলনটা জোড়ালো করা দরকার উল্লেখ করে ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ আকন বলেন, ‘খুনীরা ধরা পড়বে না এ শঙ্কা থেকেই আমরা শুরু থেকে আন্দোলনটা চালিয়ে আসছি। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ৪৮ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও খুনীরা শনাক্ত হয়নি। কোন সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি, আদৌ এ হত্যার বিচার হবে কি না সন্দেহ।’
ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম লাভলু বলেন, ‘কাক কাকের মাংস খায় না। কিন্ত আমরা সাংবাদিকরা সাগর-রুনি হত্যার পর তাদেরকে নিয়ে পরকীয়া তত্ত্ব ও প্রভাবশালী তত্ত্ব আবিষ্কার করেছি। এই তত্ত্ব তাদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করেছে।’
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাগর-রুনি দম্পতির একমাত্র সন্তান মাহিন সারোয়ার মেঘ, রুনির ভাই নওসের আলম, ডিআরইউর দফতর সম্পাদক মেহেদী আজাদ মাসুম, অর্থ সম্পাদক কামরুজ্জামান কাজল প্রমুখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন