“সাচ্চা” বন্ধুর জন্য পাকিস্তানে আহাজারি থামছে না
একাত্তরের পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর হয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও মানবতাবিরোধী অপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের পর উল্লাস গোটা দেশ জুড়ে। অথচ … হাজার কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানে চলছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ।
পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল হক মুজাহিদকে ‘পাকিস্তানের সাচ্চা বন্ধু’উল্লেখ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বলেন, ‘মুজাহিদ একাত্তরের পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগীতা করায় তাঁকে হাসিনা ওয়াজেদ সরকার খুন করেছে ’l
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে এক জনসভায় সিরাজুল বলেন, ‘আজকের দিনটি একটি কালো দিন, কারণ এই দিনে ঢাকায় পাকিস্তানের এক সাচ্চা বন্ধুকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। যারা একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছে , যারা পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী ছিল এবং পূর্ব পাকিস্তানের আলাদা হওয়ার বিরোধিতা করেছিল, তাদেরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ হত্যা করছে।’
এমনকি একাত্তরে পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য স্থাপনকারী ব্যক্তিদের বিচার ঠেকাতে ইসলামাবাদকে পদক্ষেপ নিতেও উসকানি দিয়েছেন দলটির আমির।
শুধু পাকিস্তান জামায়াতের এই নেতা নয়, সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান সরকারের কর্তা ব্যক্তিরাও। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান অভিযোগ করেছেন, “বাংলাদেশে একটি ‘গোষ্ঠী’ আছে যারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে বিমুখ। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণ অতীতের তিক্ততা পেছনে ফেলে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়।”
রবিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র কাজী খলিলুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ এবং গভীর যন্ত্রণা অনুভব করছি।
এর এক দিন পর পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে এই প্রস্তাব তোলা হয়। এতে বলা হয়, পাকিস্তানের ভাবাদর্শের সমর্থকদের অব্যাহতভাবে ফাঁসি কার্যকর করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস) বিষয়টি উত্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এতে।
পাকিস্তানের এই প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে দেশটির হাইকমিশনারকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকার। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে কোন দেশের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া মেনে নেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে কাদের মোল্লার ফাঁসির পর পাকিস্তান পার্লামেন্টে একটি নিন্দা প্রস্তাবও গৃহীত হয়, যাতে জামায়াতের চাপ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরে আসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজ দেশবাসীর স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষে দাঁড়িয়ে গণহত্যায় অংশগ্রহণ ও পরিকল্পনার দায়ে মানবতাবিরোধীদের বিচার হচ্ছে বাংলাদেশে। এই বিচারের শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান। অপরাধীদের বাঁচাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে লবিংও করছে দেশটি।
একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের শাখা ছিল গোলাম আযম নেতৃত্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াত। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতায় নামার পাশাপাশি ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মুজাহিদ আল বদর বাহিনী গঠন করে l
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা মাহফুজ: সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন,“গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থেবিস্তারিত পড়ুন
বড় ব্যবধানে অ্যান্টিগা টেস্টে হারলো বাংলাদেশ
চতুর্থ দিনেই অ্যান্টিগা টেস্টের ফল কোন দিকে গড়াচ্ছে, তা নির্ধারণবিস্তারিত পড়ুন
কিশোরগঞ্জে মা-বাবা ও ২ সন্তানের মরদেহ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় একই পরিবারের চার জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেবিস্তারিত পড়ুন