সাত বছরের প্রেমে বিয়ে, আর ৪ মাস পরেই জবাই
সাত বছর প্রেমের পর বিয়ের চার মাসের মাথায় স্ত্রীকে বৈদ্যুতিক শকড ও জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে পাষণ্ড স্বামী। হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে নিহতের স্বামীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।
শুক্রবার রাতে লামা পৌরসভার স’ মিল পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
লামায় মাক্যচিং মার্মা (২৪) নামে নিহত ওই স্কুল শিক্ষিকা পৌর এলাকার বড় নুনারবিল পাড়ার উক্যেজাই মার্মার মেয়ে ও রুপসীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ঘাতক থোয়াইচি মং মার্মা (৩০) বান্দরবান সদর উপজেলার মেঘলা এলাকার তালুকদার পাড়ার চিংসাপ্রু মার্মার ছেলে এবং বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের সিঁড়ি প্রকল্পের একজন কর্মী। এদিকে ঘাতক স্বামীর ফাঁসির দাবিতে গতকাল শনিবার দুপুরে লামায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় জনসাধারণ।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘ সাত বছর প্রেমের সম্পর্কের পর গত ৪ মাস পূর্বে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় স্কুল শিক্ষিকা মাক্যচিং মার্মা ও এনজিওকর্মী থোয়াইচিং মার্মার। বিয়ের পর তারা লামা পৌরসভার স’মিল পাড়ার একটি ভাড়াটিয়া বাসার ৩য় তলায় বসবাস করে আসছিলেন। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে স্বামী থোয়াইচি মং মার্মা তার স্ত্রী মাক্যচিং মার্মাকে বৈদ্যুতিক শকড দিয়ে ও দা দিয়ে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘাতক থোয়াইচি মং মার্মাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাত ৮টার দিকে তাদের কক্ষ থেকে ঝগড়ার আওয়াজ শুনা গেছে। নিহতের নিকট আত্মীয় জানিয়েছেন, টাকার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ঘাতক থোয়াইচি মং মার্মার অন্যত্র চাকরির জন্য ১২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। সে জন্য ১৫/২০ দিন ধরে টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিয়ে আসছিল। ইতিমধ্যে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে স্ত্রী মাক্যচিং মার্মা তার স্বামীকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দেয়। গতকালও টাকার জন্য বিভিন্নভাবে অত্যাচার নির্যাতর শুরু করে। এক পর্যায়ে তাকে বৈদ্যুতিক শকড দিয়ে ও জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘাতক থোয়াইচিং মার্মাকে আটক করা হয়েছে। নিহত শিক্ষিকার লাশের সুরত হাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সুইনুমং মার্মা বাদী হয়ে লামা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা লামা থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) অভিজিত দাশ জানান, টাকার জন্যই পারিবারিক ঝগড়া-ঝাটির এক পর্যায়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক শকের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এদিকে, এ ঘটনার প্রতিবাদে ও ঘাতক স্বামীর ফাঁসির দাবিতে শনিবার দুপুরে লামা উপজেলা পরিষদ সম্মুখে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। লামামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তার উদ্দিন তপন, হলিচাইল্ড পাবলিক স্কুলের নির্বাহী পরিচালক (শিক্ষা) প্রমোদ চন্দ্র বড়ণ্ডয়া, নুনারবিল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদ সরোয়ার, আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুকুল প্রমুখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন