সাফাতের বাবাও চরিত্রহীন বললেন পিয়াসা
জন্মদিনের পার্টির কথা বলে বনানীর একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ‘ধর্ষণের’ মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকদের একজনের ছেলে। মাসখানেক আগের এ ঘটনায় শনিবার বনানী থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়। তাদের মধ্যে সাফাত আহমেদ (২৬) আপন জুয়েলার্সের মালিক চার ভাইয়ের একজন দিলদার আহমেদের বড় ছেলে বলে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন জানিয়েছেন।
দুই তরুনীকে ধর্ষণের আলোচিত ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী
দিলদার হোসেনের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন টেলিভিশন উপস্থাপিকা ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা। এই উপস্থাপিকা ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি সাফাতের সাবেক স্ত্রী।
পিয়াসা বলেন, ‘দুই বছর প্রেমের পর ২০১৫ সালে সাফাতকে আমি বিয়ে করি। ওকে বিয়ের ব্যাপারে অনেকে আমাকে সতর্ক করেছিলেন। সাফাত মানুষ ভালো নয়। ওর বাবা আরো খারাপ, চরিত্রহীন একজন মানুষ। ওর পরিবারে অর্থ-বিত্ত থাকলেও মানমর্যাদা বলতে কিছু নেই। শুধু ভালোবাসার টানে সাফাতকে বিয়ে করেছিলাম। ’
তিনি আরও বলেন, ‘পচে যাওয়া মন কোনোদিন বদলায় না। সাফাত ছোট থেকে বড়ই হয়েছে নোংরা পরিবেশে। ওর বাবা প্রচণ্ড বদরাগী আর বাজে একটা মানুষ। স্ত্রীকে তিনি সকাল-বিকেল ‘প্রস্টিটিউট’ বলে গালি দেন, মারধর করেন। এমন পরিবেশে কোনো মানুষই মনুষত্ব, বিবেকবোধ নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে না। ’
গণমাধ্যমে আলোচিত এই মামলা নিয়ে ‘ছেলের স্বপক্ষে সাফাই’ দিয়ে ঘটনার নেপথ্যে ছেলের সাবেক স্ত্রীকে দায়ী করেছিলেন দিলদার হোসেন। ব্যবসায়ী দিলদার অভিযোগ ছিল তার ‘ছেলের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী প্রতিহিংসা করে দুই মেয়েকে দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করিয়েছেন।
দিলদার হোসেন আরো জানিয়েছিলেন, দুই বছর আগে টেলিভিশন উপস্থাপিকা পিয়াসাকে সাফাতের বিয়েটি তারা মেনে নেননি। পরে বউয়ের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে ছেলে তাকে তালাক দেয়। প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এই উপস্থাপিকাই ষড়যন্ত্র করে ওই দুই মেয়েকে দিয়ে সাজানো মামলা করিয়েছে। ’
অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার পর এবার সেই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে নিজের ক্ষোভের কথা জানালেন ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ওরফে লামিয়া আশা (২৫)। ফারিয়ার বাবার নাম মাহবুব আলম। তিনি ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় বসবাস করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলাপকালে তিনি জানান, তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে দিলদার হোসেন অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
সাবেক শ্বশুরের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় পিয়াসা জানান, ‘চলতি বছরের ৮ মার্চ সাফাত বিনা কারণেই আমাকে ডিভোর্স করেছিল। তার দুই সপ্তাহ পার না হতেই তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সাফাত আমাকে বিয়ের আগেও একবার বিয়ে করেছিল। ’
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে নিজের প্রতিক্রিয়ায় পিয়াসা জানালেন, ‘ওই মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হওয়ার সময়ও জানত না সাফাতের সঙ্গে আমার ডিভোর্স হয়েছে। তাই তারা আমার কাছেও অভিযোগ করেছিল সেসময়। তবে আমি এ বিষয়ে তাদের শুধু বলেছি আমার সঙ্গে সাফাতের ডিভোর্স হয়ে গেছে। এ জন্য আমি তাদের এ বিষয়ে কোন সাহায্য করতে পারব না। ’
প্রসঙ্গত, এই মামলার অপর আসামিদের মধ্যে নাঈম আশরাফ (৩০) ও সাদমান সাকিফ (২৪) নামে দুজন সাফাতের বন্ধু এবং বিল্লাল (২৬) তার গাড়িচালক। অপরজন সাফাতের দেহরক্ষী, মামলায় তার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
মামলা ও বিভিন্ন সূত্রমতে, অভিযুক্ত নাঈমের বাবা একজন ঠিকাদার এবং তিনি একটি টেলিভিশন স্টেশনের বিজ্ঞাপন বিভাগে কর্মরত। আর ‘পিকাসো’ নামের একটি রেস্তরাঁর মালিকের ছেলে সাদমানও একটি টেলিভিশন স্টেশনে কর্মরত। ‘ধর্ষিতা’ দুই ছাত্রীর একজনের দায়ের করা ওই মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে সাফাত ও নাঈমের বিরুদ্ধে। অন্য চারজন তাদের সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ আছে। আর সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ঘটনার ভিডিও করেছেন বলে অভিযোগ।
মামলার সময় থানায় ঘটনার শিকার ওই দুই তরুনীর সঙ্গে পিয়াসার উপস্থিত থাকার ‘অভিযোগ’ তুলে সাফাতের বাবা দিলদারে অভিযোগ ছিল এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তবে দিলদারে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন পিয়াসা।
পিয়াসা আরো বলেন, ‘বনানী থানার ওসি ও সাফাতের বাবা তার ছেলের অপরাধকে ঢাকতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে ওই মেয়েদের করা মামলার এজাহারে আমার নাম জুড়ে দিয়েছে। যেন মূল ঘটনাটা আড়ালে গিয়ে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। ’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন