সালমান শাহর মৃত্যু: ‘বিব্রত’ বিচারক রায়ের জন্য পাঠালেন অন্য আদালতে
চিত্রনায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর কারণ পুনঃতদন্তের নির্দেশের ঘটনায় এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে তার রায় ঘোষণার দায়িত্ব অন্য একজন বিচারককে দিয়েছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।
‘বিব্রত’ বোধ করে তিনি ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ মো. ইমরুল কায়েসের আদালতে মামলার নথি পাঠিয়েছেন।
এ আবেদনের ওপর ১১ মে আদেশ হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানোর পর সালমানের একদল ভক্ত আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। আদেশ না হওয়ার জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবুকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন সালমান স্মৃতি সংসদের সদস্যরা।
সালমান শাহের (চৌধুরী মো. ইমন) মা নীলা চৌধুরী ও সালমান স্মৃতি সংসদের সদস্যদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বাদীপক্ষের পরিবর্তে আসামিদের পক্ষ নিয়েছেন।
ওই বিক্ষোভের পর ১৭ মে এক আদেশে রায় ঘোষণার জন্য মামলাটি অন্য আদালতে পাঠাতে বলেন বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পেশকার ফয়েজ আহমেদ বৃহস্পতিবার বলেন, “মিছিল ও সংবাদ সম্মেলনের কারণে বিচারক বিব্রত বোধ করে অন্য বিচারকের কাছে মামলা পাঠিয়ে দিয়েছেন।”
গত ১১ মে আদেশ লেখা পুরোপুরি শেষ হয়নি ঘোষণা দিয়ে বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা রায়ের জন্য আগামী ৩০ মে নতুন দিন রেখেছিলেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইস্কাটন রোডে নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ওই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা সালমান শাহের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনাকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা উল্লেখ করে পুলিশ অপমৃত্যু মামলা করলেও সালমানের পরিবার বিষয়টিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করে। ঘটনার পর দীর্ঘ সময়ে বেশ কয়েকবার একে আত্মহত্যা বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হলেও সালমানের পরিবার তাতে নারাজি আবেদন করে পুনঃতদন্ত চায়।
প্রায় ২০ বছর আগের এই মৃত্যুর কারণ হত্যা না আত্মহত্যা- তা নির্ধারণে গত জানুয়ারি মাসে মামলাটি আবারও আদালতে ওঠে।
ওই আবেদন শুনে মহানগর হাকিম ওয়ায়েজ কুরুণী খান ঘটনাটি র্যাবকে দিয়ে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিলে বাহিনীটির এএসপি ইয়াসিন আরাফাত তদন্তে নেমেছিলেন বলে নথিপত্র সূত্রে জানা যায়।
এরইমধ্যে গত ৬ এপ্রিল পিপি আবদুল্লাহ আবু ওই মামলায় হাকিমের পুনঃতদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন আবেদন করেন, যাতে আটকে যায় পুনঃতদন্ত।
সালমানের মা নীলা নারাজি আবেদনে হত্যার অভিযোগ এনে আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
অন্য ১০ জন হলেন- সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা হক, সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহপরিচারিকা মনোয়ারা বেগম।
পিপির ভূমিকা নিয়ে নীলা চৌধুরীর আইনজীবী মাহফুজ মিয়া বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ কোনোদিন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেতে পারে না। অথচ পিপি এরকম আবেদন করে সেরকম ভূমিকা রাখলেন। তার ভূমিকা উদ্দেশ্যমূলক, প্রশ্নবিদ্ধ ও বেআইনি।”
নীলা চৌধুরীর আরেক আইনজীবী ফারুক বলেন, “এর আগে শুনানির সময় রেজভী আহমেদ নামে একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
“জবানবন্দিতে রেজভী বলেছিলেন, সালমানকে হত্যা করা হয়। তিনি অন্য আসামিদের সাহায্য করার জন্য হত্যার সময় সালমানের পা চেপে রেখেছিলেন। সালমানের স্ত্রী সামিরা, সামিরার মা, ডন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে সম্পৃক্ত করে অপর একটি মামলায় সালমানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে রেজভী ওই জবানবন্দি দেন সেসময় একজন হাকিমের কাছে।”
রিভিশন আবেদনের বিষয়ে পিপি আবদুল্লাহ আবু বলছেন, “সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার বাদী ছিলেন তার বাবা কমরউদ্দিন চৌধুরী, যিনি মারা গেছেন। নীলা এই মামলার বাদী নন। এই অব্স্থায় নীলা চৌধুরী মামলার বাদী হিসেবে নারাজি দিতে পারেন না।”
তার এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে নীলা চৌধুরীর আইনজীবী মাহফুজ মিয়া বলেছিলেন, সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছিল পুলিশ। সালমানের বাবা ঘটনার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ হিসেবে পুলিশের তদন্তে নারাজি দিয়ে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করতে আদালতে আবেদন করেছিলেন।
“সালমানের বাবার নারাজির প্রেক্ষিতে কোনো তদন্তে ঘটনাটি হত্যা বলে বের হয়ে আসলে এই অপমৃত্যুর মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হত। সালমানের বাবা কমরউদ্দিন মারা যাওয়ার পর এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে করা বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন বিপক্ষে গেলে তার মা নীলা চৌধুরী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ হিসেবে নারাজি দিয়েছিলেন।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

‘বাজি’ দিয়ে ফিরলো কোক স্টুডিও বাংলা
“বাজি” গান দিয়ে এক বছরেরও বেশি সময়ের বিরতি কাটিয়ে অবশেষেবিস্তারিত পড়ুন

বর্ষার পর এবার সিনেমা ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনন্ত জলিলের, কারণ জানালেন নিজেই
ব্যবসায়ী থেকে একসময় সিনেমায় অভিনয় করা শুরু করেন অনন্ত জলিল।বিস্তারিত পড়ুন

শাহরুখ-দীপিকার বিরুদ্ধে থানায় এজাহার
প্রতারণার অভিযোগে বলিউড কিং শাহরুখ খান ও অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনেরবিস্তারিত পড়ুন