সিটি করপোরেশন কর্মকর্তা প্রহৃত, পুলিশের সাফাই
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাশকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়েছে পুলিশ। শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করার কথা জানানো হয়েছে।
ওই আদেশে বলা হয়, বিকাশ চন্দ্র পুলিশের থামার সংকেত অমান্য করে রাস্তার ওপর মোটরসাইকেল রেখে পালানোর চেষ্টা থেকে এ ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার ভোরে মীরহাজরীবাগ পিটুনিতে আহত বিকাশকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ডিএমপি কমিশনার বলছেন, তিনি ‘সামান্য’ আহত হয়েছিলেন।
আদেশে বলা হয়, যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মো. আরশাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি ছিনতাই প্রতিরোধ টিম মীরহাজীরবাগ এলাকায় টহলরত অবস্থায় রাত অনুমানিক সাড়ে ৪টায় একটি মোটরসাইকেল ওই এলাকা দিয়ে একাধিকবার যাতায়াত করে।
এতে পুলিশ সদস্যদের সন্দেহ হলে তারা মোটরসাইকেলটিকে থামার সংকেত দিলে ‘আরোহী সিগন্যাল আমান্য করে এগিয়ে গিয়ে রাস্তার উপর মোটরসাইকেল রেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে’।
“এ সময় ছিনতাই প্রতিরোধ টিমের সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে এবং তার গতিরোধ করার জন্য পিছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে।”
তবে বর্তমানে ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন বিকাশের স্বজন (স্ত্রীর ভাই) চন্দন দাশ পুলিশ কমিশনারের ওই বক্তব্য নাকচ করেছেন।
তিনি সন্ধ্যায় বলেন, “সরকারি লোককে পুলিশ মোটরসাইকেল থামাতে বললে সে থামাবে না এটা কি বিশ্বাস করা যায়?
“ওই রাতে পুলিশ বিকাশকে মোটরসাইকেল থামাতে বলার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার উপর হামলা করে।”
বিকাশের ওপর হামলা সম্পর্কে চন্দন বলেন, “পুলিশের লাঠির আঘাতে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন বিকাশ। ওই এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা জানিয়েছে, পুলিশ বন্দুকের বাট দিয়ে বিকাশের কপালে আঘাত করেছে। তার মুখে, ঘাড়ে কিল-ঘুষি দিয়েছে।”
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া (ফাইল ছবি) পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া (ফাইল ছবি) ঘটনার পর প্রথম এক পরিচ্ছতাকর্মী বিকাশের মোবাইল থেকে ফোন করে তার ওপর হামলার কথা পরিবারকে জানায় বলে চন্দন দাস জানান।
“এরপর দয়াগঞ্জের বাসা থেকে মীরহাজীরবাগ গিয়ে দেখি রাস্তায় একটি ভ্যানে বিকাশকে শুইয়ে রাখা হয়েছে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়।”
বিকাশের উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানানোর পর শুক্রবার রাতেই তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়।
“বিকাশ ভালভাবে কথা বলতে পারছেন না। তার মুখ-চোখ ফুলে গেছে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা।”
বিকাশ সুস্থ হওয়ার পর পুরো ঘটনা জেনে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।
মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) বনোজ কুমার মজুমদার নেতৃত্বাধীন কমিটিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পূর্ব) মাহবুব আলম, পুলিশের ওয়ারি বিভাগের উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলামকে রাখা হয়েছে।
তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে।
ওই ঘটনার পর উপ-পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনী শংকর কর জানিয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন