বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

সিরিয়ায় রুশ-মার্কিন উত্তেজনার আড়ালে তুরস্কের ‘গোপন মিশন’

সিরিয়ায় রুশ-মার্কিন পাল্টাপাল্টি বোমা হামলার উত্তেজনার আড়ালে সেখানে ‘গোপন মিশন’ পাঠাচ্ছে তুরস্ক। এই মিশনে সিরিয়ায় এরই মধ্যে ১০০০ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। এর সাংকেতিক নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন ইউফ্রেটিস শিল্ড’।

তুর্কির এই ‘গোপন মিশন’ সিরিয়ার রক্তাক্ত যুদ্ধের অনেক হিসাব-নিকাশ বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি আঙ্কারা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে উত্তেজনার বৃদ্ধি ও একই সময়ে এরদোগান-পুতিন সম্পর্কে বরফ গলা শুরু পরপরই এই ঘটনা ঘটছে।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক বিশেষ প্রতিবেদনে সিরিয়ায় চালাতে যাওয়া তুরস্কের ‘গোপন মিশনের’র তুলে ধরেছে। তুর্কি সেনাবাহিনীর স্থল ও বিমান বাহিনীর পাশাপাশি স্পেশাল ফোর্সের এক হাজার সেনা সিরিয়া প্রবেশ করেছে। এই বাহিনী সীমান্ত জুড়ে সিরিয়ার বিরোধী যোদ্ধাদের স্থান বরাবর একটি ‘নিরাপত্তা জোন’ স্থাপন করেছে এবং সিরিয়ার আরো ভেতরে প্রবেশ করছে।

অপারেশন ইউফ্রেটিস শিল্ডকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের রুক্ষতা ‍ বৃদ্ধি ও মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণতর করার রেখা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তুর্কি বাহিনী সিরিয়ায় কুর্দিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে; যারা যুক্তরাষ্ট্রের ঘণিষ্ঠ মিত্র এবং আইআইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আর একই সময়ে সিরিয় প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ বাহিনী নিরাপদ করতে বোমা ফেলছে রাশিয়া। সেই সাথে উত্তর সিরিয়ার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগানকে কাজের জন্য মৌন অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কুর্দি পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ইউপিজে) ও সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস(এসডিএফ) যারা সিরিয়ান আরব ও কুর্দিদের মিত্র দাবি করে, এদের উপর হামলার না চালাতে আঙ্কারাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ওয়াশিংটন।

কিন্তু তুরস্ক সেটা আমলেই নেয়নি। বরং হামলা চালিয়ে এই দুই সংগঠন ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির হাত থেকে মাজবি শহর দখল করে নিয়েছে তুর্কি বাহিনী। এই শহরটি আইআইয়ের কাছ থেকে দখল করেছিল ওই দুই সংগঠন। ইউফেটিস নদীর পাড় হয়ে কুর্দি প্রভাবিত বাউন্ডারিতেও ঢুকে পড়েছে তুর্কি সেনারা।

এই চলমান সংঘর্ষ আইএসের সাথে ‘শেষ’ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। সিরিয়ায় অধিকাংশ দখলী জমি হারিয়ে আইএস এখন কথিত রাজধানী রাক্কা রক্ষায় প্রাণপণ যুদ্ধে ব্যস্ত।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি কুর্দি পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ইউপিজে) ও সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) সঙ্গে নিয়ে রাক্কা অভিযানে যায়, তাহলে আমরা সেখানে যাব না বা সাহায্য করবো না। তবে এই দুই সংগঠনকে ছেটে ফেলে যদি অপারেশন করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যাব।’

কুর্দিদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করে এরদোগান বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন ইউপিজে ও এসডিএফকে সঙ্গে নিয়ে আইএসকে ধ্বংস করতে চান সেটা পারবেন না।’

এরদোগানের ভাষায় সন্ত্রাসীদের জন্য কোবানিতে কয়েকদিন আগেই তিন প্লেন অস্ত্র ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইনের কাছে সে বিষয়টি তুলেও ধরেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক বৈঠকে আঙ্কারাকে জানিয়েছে, আইএসআইসের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় ইউপিজে ও এসডিএফ খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

দুই সংগঠনের পক্ষে কথা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তিনি বলেছেন, আইএসের হাত থেকে রাক্কাকে সত্যিকারভাবে উদ্ধারের জন্য আরব ও কুর্দি মিত্রদের অবশ্যই সমর্থন দিতে হবে।’

ইউপিজে ও এসডিএফের পক্ষে কথা বলেছেন মার্কিন মিলিটারি জয়েন্ট চিফের চেয়ারম্যান জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড।

এটা শুধু সিরিয়া না যা নিয়ে আমেরিকার সাথে তুরস্কের বিতর্কের শুরু হয়েছে। তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর ধর্মীয় নেতা ফতেহউল্লাহ গুলেনের প্রত্যাবর্তন নিয়ে দুদেশের সম্পর্কে শীতলতার বেড়ে যায়। ওই অভ্যুত্থানের পেছনে গুলেন কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ এরদোগানের।

গুলেন ইস্যুতে মার্কিন কিছু কর্মকর্তা বলছেন, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। তবে গুলেনকে প্রত্যাবর্তনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দেয়া তুর্কি প্রমাণাদি নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

গত নভেম্বরে একটি যুদ্ধবিমান ভূ-পাতিত করা ঘটনায় রাশিয়ার সাথে তুরস্কের সম্পর্ক বেশ খারাপ পর্যায় গিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক যত খারাপ হচ্ছে রাশিয়ার সাথে সম্পর্কটা ততই উষ্ণ হচ্ছে তুরস্কের। অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার পর গত মাসে মস্কো সফরে পুতিনকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছেন এরদোগান।

সিরিয়া নীতিতে রুশ-তুর্কি সৌহার্দ্য অব্যাহত রয়েছে। এই সম্পর্কের ব্যাপারে এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহীম কালিন প্রতিষ্ঠিত থিংকট্যাঙ্ক সংগঠন ‍‘সিইটিএ’র সিনিয়র সদস্য তালহা কোসি বলেন, ‘তুরস্ক উত্তর সিরিয়ায় যা করছে তাতে আপত্তি করছে না রাশিয়া। তারা (রাশিয়া) এখন আলেপ্পো নিয়ে ব্যস্ত। তাছাড়া তুরস্ক তো রাশিয়ার কোনো স্বার্থে আঘাত করছে না। তুরস্ক দেখছে সিরিয়ায় কিভাবে আমেরিকা তাদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করছে।’

ডেমোক্রেসি ডিফেন্সের বিশ্লেষক মারভি তাহিরগলু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের সাথে সম্পর্ক তিক্ত করে তুলেছে। এটা ইউপিজে ও এসডিএফের সাথে মার্কিনিদের অতি বেশি মাখামাখিতে। তুরস্ক এখন সিরিয়ায় যা করছে, ইউপিজে ও এসডিএফের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক গাঢ় হওয়ায় সেটা আরো স্বাধীনভাবে করবে। তবে দৃশ্যটা দিনদিন জটিল হচ্ছে এবং এর পরিণতি মস্কো-আঙ্কারার নতুন হটলাইনের উপর নির্ভর করছে।’

সিরিয়ার ভেতরে তুরস্ক যে ‘নিরাপদ জোন’ স্থাপন করেছে এটা অনেকদিন ধরেই চাইছিল তারা। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা অন্য শক্তিগুলো এতে বাধা দিয়ে আসছিল। ‘নিরাপদ জোনের’ কথা উল্লেখ করে এরদোগান বলেছেন, ‘অপারেশন ইউফ্রেটিস শিল্ড’র আওতায় এ পর্যন্ত ৯০০ বর্গকিলোমিটার ‘সন্ত্রাস’ মুক্ত হয়েছে। আমরা এটা ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত বাড়াতে পারি।’

আইএস জঙ্গির সরে যাওয়ার পর আলাদা আলাদাভাবে জারাবলুস শহরের দখল নিয়েছে ফ্রি সিরিয়ান আর্মি ও তুর্কি বাহিনী। একইভাবে তুর্কি বাহিনী নিরাপদ জোনের নামে এবং কুর্দি প্রবেশ ঠেকাতে দখলের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। এই কুর্দিরাই তুর্কি ভূ-খন্ডে স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের পরের টার্গেট আইএস নিয়ন্ত্রিত আল-বাব। যদিও মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব অ্যাস্টন কার্টার বলেছেন, আল-বাবে তুর্কি বা ফ্রি সিরিয়ান আর্মি কাউকে দেখতে চায় না তারা। ইউপিজেও আল-বাব দখলে নিতে চায়। আর এটাকেই কুর্দি প্রতি মার্কিন সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে দেখছে তুরস্কর।

আল-বাব অসাধারণ কৌশলগত ও প্রতীকী তাৎপর্যপূর্ণ একটি শহর। এটাই সেই জায়গা যেখান থেকে আসাদ সরকারের বিরোধী প্রথম আওয়াজ উঠেছিল। সেসময় এই শহর দখল করেছিল আল-কায়েদার সাথে সংশ্লিষ্ট জাবহাত আল-নূসরা বাহিনী। পরে তাদের কাছ থেকে শহরটি দখল করে নেয় আইএসআই। এখন এই শহরের দখল দৌড়ে সামিল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তি এবং তুরস্ক।

আল-বাবের অর্থ হলো প্রবেশদ্বার। এটাকে এখন দেখা হয় আইএসআইয়ের খিলাফতের প্রবেশদ্বার হিসেবে। এই প্রবেশদ্বারের দারোয়ান হওয়ার দৌড় শুধু আইএসআইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না। এই দৌড় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সাথে তুরস্কের সম্পর্কেরও।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল

আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন

ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত

গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন

  • বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
  • একদিনে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৫৭ ফিলিস্তিনি 
  • কানে ব্যান্ডেজ নিয়ে সম্মেলনে ট্রাম্প
  • ওমানে বন্দুকধারীর হামলায় মসজিদের কাছে   ৪জন নিহত
  • ট্রাম্পকে গুলি করা ব্যক্তি দলের নিবন্ধিত ভোটার
  • প্রেসিডেন্ট মাসুদকে সতর্কতা ইরানিদের 
  • ভারতের সঙ্গে চুক্তিতে দেশের মানুষের আস্থা প্রয়োজন
  • ভারত আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু, চীন উন্নয়নের : কাদের
  • ইসরায়েলে মুহুর্মুহু রকেট হামলা ইসলামিক জিহাদের
  • প্রথম বিতর্কের পর ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছেন দোদুল্যমান ভোটাররা!
  • রেবন্ত রেড্ডি এবং চন্দ্রবাবু নাইডু বৈঠক নিয়ে নানা জল্পনা
  • স্টারমারের দুঃখ প্রকাশের পরও বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ক্ষোভ