সীমান্ত হত্যার ৯৫ শতাংশ গরু চোরাচালানে: বিজিবি প্রধান

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহতদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই মারা পড়ছে গরু চোরাচালান করতে গিয়ে। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির প্রধান আজিজ আহমেদ বলেছেন, গরু চোরাচালান বন্ধ না হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা যাবে না।
সকালে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিজিবি প্রধান। জানান, গরু চোরাচালান বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা করতে বিএসএফকে অনুরোধ করেছেন তিনি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লীতে অনুষ্ঠিত বিজিবি ও বিএসএফের সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বলে জানান আজিজ আহমেদ।
বিজিবি প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশেও গরু চোরাকারবারির হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই এই ধরনের চোরাচালান বন্ধ হবে।’
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রায়ই বাংলাদেশিদের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে কাটা তারের বেড়া কাটা বা নিচ দিয়ে যাওয়ার পথে গুলি করে বিএসএফ। কখনও কখনও আবার ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয় বাংলাদেশিরা।
সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, গত এক দশকে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি মারা গেছে সীমান্তে। সংখ্যাটা এত বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও তীব্র প্রতিক্রিয়া আছে। সে দেশের একটি মানবাধিকার সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশনও দায়ের করেছে।
নানা সময় দুই দেশের সরকারি পর্যায় বা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনাতেও সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। দুই পক্ষই সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার অঙ্গীকারের কথা বলেছে একাধিকবার। এমনকি বিএসএফ গুলি করলে রাবার বুলেট ব্যবহারের কথা বলেও তা রাখেনি।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিবি প্রধান বলেন, বিএসএফের সঙ্গে সবশেষ সম্মেলনে এই প্রশ্নটি তিনি বিএসএফ প্রধানকেও করেছিলেন। তিনি দাবি করেছেন, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার না করলে চোরাচালানকারীরা তাদের ওপর হামলা করে। আর এই হামলায় তিন জন বিএসএফ জওয়ান নিহত এবং দেড়শতাধিক আহত হয়েছে।
বিজিবি প্রধান জানান, বিএসএফ প্রধানের এমন বক্তব্যের জবাব তিনি ওই সম্মেলনেই দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, আক্রান্ত তো আমরাও হই মাঝেমধ্যে। কিন্তু আমরা গুলি করে ‘হিট লেভেলের’ নিচে। বুক বা মাথায় না। এ কারণে আমাদের গুলিতে কারও প্রাণহানির ঘটনা বিরল। আপনারা কেন মাথায় বা বুকে গুলি করেন।’
আজিজ আহমেদ বলেন, তার এই প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ প্রধান বলেছেন, তারাও বুকে বা মাথায় গুলি করতে চান না। কিন্তু রাতের আঁধারে বিপুল সংখ্যক গরুসহ চোরাচালানিরা যখন সীমান্তে আসে তখন অল্প সংখ্যক বিএসএফের কাছে অন্য কোনো উপায় থাকে না।
বিজিবি প্রধান জানান, এমন বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্যের পর ওই সম্মেলনে দুই পক্ষ আবারও যে কোনো ভাবে গরু চোরাচালন বন্ধে উদ্যোগ এবং সীমান্ত হত্যা যত সম্ভব কমিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়েছে।
আজিজ আহমেদ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে গরু চোরাচালান বন্ধের তাগিদ দিলেও বিজিবিও যে পরোক্ষভাবে এই চোরাচালানকে বৈধ করার ব্যবস্থা করেছে সে বিষয়ে কিছু বলেননি। ভারত থেকে চোরাচালান করে আনা গরুগুলোকে বৈধ করতে একটি পদ্ধতি চালু করেছে।
সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান করে আনা গরু একটি নির্দিষ্ট এলাকায় রাখা হয়। তারপর প্রতিটি পশুর বিপরীতে শ পাঁচেক টাকা নিয়ে সেগুলোকে বৈধ করে বিজিবি। এ বিষয়ে অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে কিছু বলেননি বিজিবি মহাপরিচালক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন