সুর করে ক্রেতাদের ডেকে চলেছেন রমরমা মাদক–ব্যবসা
‘মামা, আসেন, নিয়া যান। ১০ টাকার না ২০ টাকার?’ এভাবে সুর করে ক্রেতাদের ডেকে চলেছেন তাঁরা। সংখ্যায় প্রায় ৩০-৪০ জন। রেল লাইনের বস্তির ঘরের সামনে ডালা সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা। ক্রেতারাও যাচ্ছেন অনেকে। টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছেন ডালায় সাজিয়ে রাখা পণ্য। কাগজের মোড়কের ভেতর রাখা এ জিনিসের নাম গাঁজা। সোজা কথায় যা মাদক দ্রব্য।
প্রকাশ্যে ডালা গাজা সাজিয়ে এভাবে মাদক দ্রব্য বিক্রির রমরমা ব্যবসা চলছে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সলগ্ন রেললাইন বস্তিতে।
দূর থেকে মনে হবে, এটা কোনো সাধারণ হাট-বাজার। সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করছেন তাঁরা। কাছে ভিড়লেও অনেকে টের পাবেন না। কেবল মাদকসেবী ক্রেতাদের কাছেই এর মাহাত্ম্য জানা।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসংলগ্ন রেললাইন এলাকায় গেলে মাদক দ্রব্য বেচাকেনার এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
একটি ঘরের সামনে ডালাভর্তি গাঁজা নিয়ে লোকজনকে ডাকছিলেন এক নারী। পাশে তাঁর শিশু সন্তান। জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ‘আগে গার্মেন্টসে চাকরি করতাম। যা পাই পোষায় না। তাই গাঁজা বিক্রি করি।’ ছবি তুলতে গেলে এ নারী ডালা ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলেন। বলেন, ‘এমনি দেখেন, ছবি তুইলেন না।’
ওই ঘরের পাশে ডালা সাজিয়ে গাঁজা বিক্রি করছিলেন তিন-চারজন নারী। পাশে এক ব্যক্তি। কাছে গেলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সাংবাদিক? ছবি তুইলা কোনো লাভ নাই। থানা-পুলিশ ম্যানেজ করা আছে।’
এ পেশায় কেন—জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আপনি আমারে চাকরি দিলে পাঁচ হাজার টাকার বেশি বেতন দিতে পারবেন না। কিন্তু আমি গাজা বেইচা মাসে ৫০ হাজার টাকা কামাই।’
এখানেও ছবি তুলতে গেলে এক নারী তেড়ে এসে বলেন, ‘খবরদার ছবি তুলবেন না। এখান চলে যান। সবাই মিলে ধরলে বাঁচতে পারবেন না।’ কয়েকজনের নাম পরিচয় জানতে চাইলে এক নারী ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘কী করবেন। পেপারে ছাপাইবেন। যান, ছাপান। কেউ কিছু করতে পারবে না।’
স্থানীয় কয়েকজন দোকানদার বলেন, এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চলছে। তবে কিছুদিন থেকে এভাবে ডালা সাজিয়ে প্রকাশ্যে মাদক দ্রব্য বিক্রি শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে, কয়েক দিন পর মাদক ব্যবসায়ীরা দোকান খুলে বসবেন।
এভাবে ডালা সাজিয়ে মাদক বিক্রির বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘কী বলেন! এভাবে মাদক বিক্রি হচ্ছে!’
ওসি বলেন, ‘আমরা এ মাদক দ্রব্যের ব্যবসা বন্ধ করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত এক মাসে মাদক দ্রব্য বিক্রির দায়ে ১৯৫ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। অর্ধ শতাধিক মামলাও হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘আমরা এখন সাধারণ পোশাকে টহল দিতে পারি না। ফলে পুলিশ গেলে সবাই সবকিছু লুকিয়ে ফেলে। আমি এক্ষুণি পুলিশের একটি দল পাঠাচ্ছি।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন