সেই আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী জামায়াত নেতার ছেলে

রাজশাহী: রাজশাহীর বাগমারা আহমেদিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তারেক আজিজ (২২) চাঁপাইনবাবগঞ্জের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ও জামায়াত নেতার ছেলে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলাবার (৭ জুন) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার নিসারুল আরিফ এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনের পুলিশ সুপার জানান, তার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার রূপনগর গ্রামে। বাবার নাম আবু সালেক (৫৫)। পুলিশ তাদের বাসা থেকে বাবা ও ছেলের পাসপোর্ট এবং সাংগঠনিক বই উদ্ধার করেছে। এতে দেখা গেছে, আবু সালেক জামায়াতের রোকন ছিলেন। রাজশাহীর তানোরের কালিগঞ্জে তাদের একটি বাগানবাড়ি রয়েছে।
পুলিশ তারেক আজিজের মা তাসলিমা খাতুনকে আটক করেছে। পুলিশ জানায়, গোদাগাড়ী থানায় জিজ্ঞাসাবাদে তার মা স্বীকার করেছেন, ছেলের মারা যাওয়ার খবর তিনি জানেন। তবে ভয়ে প্রকাশ করেননি।
এ আগে, মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় সহযোগী জামাল উদ্দিন (২৫) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার ফরাদপুর এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হন। জামাল শিবগঞ্জ উপজেলার কালিনগর লক্ষীপুর এলাকার তফজুলের ছেলে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি কলেজে বিএসসিতে পড়ালেখা করত বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তবে জামাল উদ্দিন জেএমবি সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশের দাবি। জামালের কাছ থেকেই আত্মঘাতী হামলাকারী তারেক আজিজের পরিচয় পান পুলিশ।
মঙ্গলাবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার নিসারুল আরিফ জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে গোদাগাড়ীর বাবু ডাইংয়ের দুর্গম এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনকে আটক করা হয়। রাত তিনটার দিকে পুলিশ জামাল উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে গোদাগাড়ীর ফরাদপুর এলাকায় তার এক সহযোগীকে আটক করতে যায়। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জামালের সহযোগীরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। সেখানেই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জামাল নিহত হন। পুলিশের তিন সদস্যও আহত হয়। পরে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি পিস্তল, একটি রামদা ও দুটি গুলি উদ্ধার করেছে।
পুলিশ সুপার বলেন, জামালের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ তারেক আজিজের বাড়িতে গিয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, মসজিদে আত্মঘাতি বোমা হামলাকারী যুবক তারেক আজিজ এবং তার সহযোগী জামাল উদ্দিন দুজনেই আগে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল। পরে তারা জেএমবি’র সদস্য হিসেবে যোগ দেয়। তার পরিবারের সদস্যরা এখনো জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় যুবক তারেক নিহত হলেও তার সহযোগী জামাল ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল। ওই ঘটনার পর হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হতে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে স্পেশাল কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে মসজিদে আত্মঘাতি বোমা হামলাকারী দলের দুই সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত হয়। তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রাখে। অবশেষে সোমবার রাত ১১টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবুডায়িং এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে জুমার নামাজ চলাকালীন সৈয়দপুর ইউপির চকপাড়া গ্রামে আহমেদিয়া মুসলিম জামাত জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় নিহত হয় বোমা বহনকারী তারেক আজিজ। সময় আরো কয়েকজন মুসল্লি আহত হন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন

স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন