সেই হিজাব পরিহিত কলেজছাত্রী এখন পুলিশ হেফাজতে

নিউইয়র্কের ১৮ বছর বয়সী সেই মুসলিম কলেজছাত্রী ইয়াসমীন সিউয়িদকে গ্রেফতার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ। ট্রেনে চড়ে কলেজে যাবার পথে গত ১ ডিসেম্বর ৩ মদ্যপ যুবক তার হিজাব কেড়ে নিয়ে সন্ত্রাসী হিসেবে গাল-মন্দ করে বলে পুলিশকে অভিযোগ করেছিলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ইয়াসমীন।
শুধু তাই নয়, এর ঠিক ৭ দিন পর ৮ ডিসেম্বর ইয়াসমীনের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে আরও জানানো হয়, ইয়াসমীনকে পাওয়া যাচ্ছে না। নিউইয়র্কসহ সারা আমেরিকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হামলার শিকার কলেজ ছাত্রী নিখোঁজ হবার সংবাদ। পুলিশ, এফবিআই, হেইট ক্রাইম টাস্ক ফোর্সসহ সব ধরনের প্রশাসন হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে ইয়াসমীনের হিজাব খুলে নিয়ে অপদস্তকারী ৩ যুবককে এবং পরবর্তীতে নিখোঁজ ইয়াসমীনকে উদ্ধারের জন্য। কিন্তু একদিন পরই ইয়াসমীনের বাবা সাঈদ (৫৫) পুলিশকে জানান, তার কন্যা অক্ষত অবস্থায় বাসায় ফিরেছেন।
নিউইয়র্ক সিটির বারুক কলেজের ছাত্রী ইয়াসমীনের ওপর ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হামলার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তে কোন আলামতই উদঘাটিত হয়নি। ইয়াসমীনকে ট্রেনের কামরায় আক্রমণ করা হয় এবং সে সময় অন্য যাত্রীর কেউই তার পক্ষে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। ঘটনাস্থল তথা রেল স্টেশনের সিসিটিভি পরীক্ষা করে ইয়াসমীনের গতিবিধিতে আক্রান্ত হবার কোন চিহ্ন পায়নি পুলিশ। এছাড়া, তার নিখোঁজ হওয়া এবং একদিন পর আবির্ভূত হবার ঘটনাও পুলিশকে ভাবনায় ফেলে। অবশেষে ১৪ ডিসেম্বর নিউইয়র্ক পুলিশের ডিটেকটিভ ইউনিট ইয়াসমীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে সময়ই ইয়াসমীন স্বীকার করেছেন, হিজাব খুলে নিয়ে তার সন্ত্রাসী হিসেবে গালমন্দ করার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামোচ্চারণ কোনকিছুই সত্য ছিল না। সবটাই বানানো ঘটনা। ইয়াসমীনের উদ্ধৃতি দিয়ে ডিটেকটিভ ইউনিট গণমাধ্যমকে আরও জানিয়েছে, মুসলিম পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি আমেরিকান স্টাইলে চলাফেরা করতে চান। ১ ডিসেম্বরও কয়েক বন্ধুর চক্করে পড়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। সে অবস্থায় বাসায় ফিরলে মা-বাবার চোখ রাঙানিসহ উচ্চবাচ্য থেকে বাঁচার জন্যে ওই গল্পের অবতারণা করেছিলেন। নিখোঁজ হবার মধ্যেও একই কারণ।
জনমনে ভীতির সঞ্চার ঘটে-এমন অবান্তর ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনকে হয়রানি করার অভিযোগে পুলিশ ইয়াসমীনকে গ্রেফতার করেছে।
ট্রাম্পের মুসলিম বিদ্বেষমূলক কিছু বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নিউইয়র্কসহ সারা আমেরিকায় মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। মসজিদও বাদ যাচ্ছে না। এমনি ভীতিকর অবস্থার মধ্যে লং আইল্যান্ডের নিউ হাইড পার্কে বসবাসরত পাকিস্তানি পরিবারের সন্তান ইয়াসমীনের বানোয়াট ঘটনার অবতারণার কঠোর সমালোচনা হচ্ছে সর্বমহলে। এ কারণে পরবর্তীতে সত্যিকারের অভিযোগও সহজে আমলে না নেয়ার মনোভাব তৈরি হতে পারে পুলিশ প্রশাসনে-এমন অভিমত পোষণ করেছেন বিশিষ্টজনেরা।
অপরদিকে, মুসলিম-আমেরিকানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স’ তথা কেয়ারের আইনজীবী এলবার্ট কান এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা বিব্রত। তবে এই একটি মিথ্যাচারের কারণে যেন আরও বহুসংখ্যক ঘটনা তলিয়ে না যায়। কারণ, ৮ নভেম্বর নির্বাচনের দিন থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচরণের ঘটনা অনেক বেড়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে স্বৈরাচারী শাসক বললেন ট্রাম্প
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন