সেমির লড়াইটা কেমন হবে?
নিজেদের প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতে সবার আগে ষষ্ঠ টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের খেলা নিশ্চিত করেছিল নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ ‘ওয়ান’ থেকে কিউইরা পায় শেষ চারের টিকিট। দ্বিতীয়বারের মতো সেই মওকাটা মিলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। গ্রুপ ‘টু’ থেকে প্রথম তাদের জায়গা হয় সেমিতে। ২৬ মার্চ রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০ রানে জয় তুলে নিয়ে গ্রুপ ‘টু’ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে টুর্নামেন্টের শেষ চারে নাম লেখায় ইংল্যান্ড। আর তাতে কপাল পুড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। শেষ লড়াইয়ের আগেই সমীকরণে বাদ পড়ে প্রোটিয়ারা। বলার অপেক্ষা রাখে না যে শ্রীলঙ্কার বিদায়টা অবধারিত হয়ে গেছে।
বাকি ছিল গ্রুপ ‘ওয়ান’-এর ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’! সেই লড়াইয়ে রোববার মোহালিতে মুখোমুখি হয় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ‘কোয়ার্টার ফাইনালে’ অসিদের বিপক্ষে ৫১ বলে ৯টি চার ও দুটি ছক্কায় অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি। তার অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে ভারত পায় ৬ উইকেটের দাপুটে জয়। এদিন অসিদের হতাশ করে টিম ইন্ডিয়া জায়গা করে নেয় ঘরের মাঠে চলমান বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে।
এবার ঠিক হয়ে গেল ষষ্ঠ টি২০ বিশ্বকাপের সেমির লাইন আপ। ৩০ মার্চ প্রথম সেমিতে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাচটি গড়াবে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায়। দ্বিতীয় সেমির লড়াইয়ে স্বাগতিক ভারতের প্রতিপক্ষ গেইল-স্যামিদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩১ মার্চ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। দুটি ম্যাচই সম্প্রচার করবে গাজী টিভি, মাছরাঙা টিভি, বিটিভি, স্টার স্পোর্টস ১ ও ৩। চার সেমিফাইনালিস্ট থেকে জয়ী দুই দল উত্তুঙ্গস্পর্শী ফাইনালে মুখোমুখি হবে আগামী ৩ এপ্রিল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে।
এদিকে চার ম্যাচে জিতে নিউজিল্যান্ড শিবিরে আত্মবিশ্বাসের পারদ আকাশস্পর্শী। দলে রয়েছে বেশ কয়েক ভালো স্পিনার। উপমহাদেশীয় উইকেটে যা খুবই কার্যকর। সেটা প্রমাণিত হয়েই বিগত চারটি ম্যাচেই। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তো ঠিকমতো দাঁড়াতেই পারলেন না। কিউই শিবিরে রয়েছে দ্রুতগতির কয়েকজন বোলার। যারা পিচের চিত্র বদলালে জ্বলে উঠতে পারেন। আদায় করে নিতে পারেন সুবিধা। তাই ইংল্যান্ডকে নামতে হবে কঠিন পরীক্ষায়। যে পরীক্ষায় ইংলিশদের আশার আলো দেখাতে পারেন জস বাটলার, অলরাউন্ডার মঈন আলী, অধিনায়ক ইয়ান মরগান, আদিল রশিদ ও জো রুট। তার জন্য অবশ্য অ্যালেক্স হেলসকে ওপেনিংটা ভালো করে দিতে হবে।
দুই দলের মধ্যে এখনো বিশ্বকাপ জিততে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তাই কোমরে গামছা বেঁধেই নামবেন উইলিয়ামসন-টেলররা। যে করেই হোক সেমিফাইনালে জিতে শিরোপার খুব কাছাকাছি চলে যেতে হবে। শুধু টি২০ নয়, ওয়ানডে বিশ্বকাপও জেতা হয়নি তাদের। ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায়। কিউই শিবিরে যেভাবে ছন্দ বিরাজ করছে, তাতে আরেকটি ফাইনাল খেলার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তাদের। তবে ইংল্যান্ডও চাইবে ২০১০ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে। ওই বছর ক্যাবিরীয় দ্বীপে শিরোপা উল্লাসে মেতেছিলেন ইংলিশরা। এবারও তাদের চাওয়া থাকবে, নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়ে কিউই বাধা পেরিয়ে ফাইনালের টিকিট সংগ্রহ করা।
অপর সেমিতে স্বাগতিক ভারতকে সমস্যায় ফেলতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই দলের দুই ক্রিকেটার রয়েছেন আলোর পাদপ্রদীপে। ক্যারিবীয়রা যেমন ক্রিস গেইলকে নিয়ে বাজি ধরবে। তারা চাইবে, ভারতের বিপক্ষে তিনি ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালের টিকিট এনে দেবেন। অপরদিকে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করা বিরাট কোহলিকে তুরুপের তাস বানাবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। টিম ইন্ডিয়া তাকিয়ে থাকবে কোহলির দিকে। স্বাগতিকরা চাইবে, অসিদের বিপক্ষে যেমন ৮২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে দলকে পাইয়ে দিয়েছেন সেমির টিকিট, তেমনি সেমিতে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে কোহলি নিশ্চিত করবেন ফাইনালের টিকিটও।
দু’দলই গ্রুপ পর্বে হারের মুখ দেখেছে। ভারত হেরেছে উড়তে থাকা নিউজিল্যান্ডের কাছে। আর গেইলবিহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ রানে হেরেছে আফগানিস্তানের কাছে। তাই ক্যারিবীয় শিবিরে গেইলের কতটা প্রয়োজন, তা স্পষ্ট বোঝা গেছে গ্রুপ পর্বের ওই শেষ ম্যাচেই। হারের ধকল সামলে দু’দল যখন মেসিতে, তাই শেষ চারে তাদের লড়াইটা হবে সেয়ানে সেয়ানে। এটা কাগজে কলমে লিখে রাখা যায়। দু’দলের স্পিন অ্যাটাকও ভালো। ভারত শিবিরে যেমন রয়েছেন জাদেজা-অশ্বিনরা, তেমনি ক্যারিবীয় দলের ‘গোডাউনে’ জমা আছে বদ্রি-বেনরা। সুনীল নারিন থাকলে ক্যারিবীয়রা এগিয়ে থাকত আরেক ধাপ। ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস অ্যাটাকও সমমানের। নেহরা-বুমরা-হার্দিকের বিপরীতে রয়েছেন ব্রাথওয়েট- ব্রাভো-স্যামি-রাসেলরা। ব্যাটিংয়ের সমতালের লড়াইয়ের কথা না-ই বা বললাম। সব মিলে কারো চেয়ে কেউ কম নয়, তাই মুম্বাইতে এক জমজমাট লড়াইয়ের প্রত্যাশা করতেই পারেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এখন দেখার বিষয় ইডেনের টিকিট পায় কোন্ দু’দল? আর ফাইনাল শেষে কোন্ দলের হাতে ওঠে ষষ্ঠ বিশ্বকাপের ট্রফি, ২০০৭ সালে শিরোপাজয়ী ভারত, ২০১০ সালের ইংল্যান্ড, ২০১২ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ নাকি প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের? উত্তরটা অবশ্য সময়ই বলে দেবে!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন