সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অপরাধকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে ছাত্রলীগ-পুলিশ
ছিনতাই চক্রের সঙ্গে জড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ ছাত্রকে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আর তারা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্কীকার করেছেন গ্রেপ্তারকৃত রাজিব বাড়ৈই ও অমিত কুমার দাস।
এদিকে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ চারজনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল ঢাকা মহানগর ম্যাজিষ্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির পরিদর্শক মো. ওহেদুজ্জমান এ রিমান্ডের আবেদন জানান।
তদন্তকারী সূত্র জানায়, টিএসসি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢোকার ফটকের ডান পাশেই রুবেলের চায়ের দোকান। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা সেখানে চেয়ার ও টেবিল পেতে মধ্যরাত অব্দি জুয়া খেলেন। এছাড়া সাবেক কয়েকজন ছাত্র নেতাও সেখানে উপস্থিত থাকেন। মূলত এই দলটিই পার্কের সব ধরনের অবৈধ কার্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। শোনা গেছে, পহেলা বৈশাখে নারীর শ্লীলতাহানীসহ পরপর যে সব অনৈতিক কর্মকান্ড ঘটেছে এর প্রত্যেকের পেছনে তাদের হাত রয়েছে।
উদ্যানের ভেতরে কমপক্ষে ১৫ টি ফুসকা-চটপটির দোকানে বসে তাদের নেতৃত্বে। প্রত্যেক দিন তাদের কাছ থেকে দোকান প্রতি ২ শ থেকে ৩ শ টাকা নেয়। আর এ সুবাধে ওই ব্যবসায়ীরা পার্কের ভেতরে ঝোপ-ঝাড়ে চেয়ার পাতিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড চালায়। পার্ককে ঘিরে তার ভেতরে কমপক্ষে ১০ ধরনের অবৈধ ব্যবসা চলে। এরমধ্যে মাদকই হলো উল্লেখযোগ্য। এর পেছনে যেমন রয়েছে ছাত্রলীগ নেতাদের হাত। তেমনি দৈনিক টাকা নিত পুলিশও।
ছাত্রলীগের এহেন কর্মকান্ডের কোন প্রতিবাদ করলেই হতে হয় লাঞ্চিত। জানা গেছে এসব অবৈধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জগন্নাথ, মহসীন, শহীদুল্লাহ, এসএম হলের কয়েকজন আবাসিক ছাত্র জড়িত। যাদের তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পাশপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রাজিব বাড়ৈ (২১)-কে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী দু’এক দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তা জানানো হবে বলে সূত্র জানায়।
গত ১৬ আগস্ট জনৈক আনছার আলী লিমন (৩০) তার বান্ধবীকে নিয়ে রাত ৮টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের ১০০ গজ পূর্ব দিকে পৌঁছামাত্র আসামিরা তাদের ঘিরে ফেলে। ওই সময় তারা লিমন ও তার বান্ধবীকে আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে আসামিরা লিমনকে মারধর করে তার কাছে থাকা দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আরও টাকা দাবি করে লিমনের কাছে থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড নিয়ে বান্ধবীকে ধর্ষণের ভয় দেখিয়ে কার্ডের গোপন পিন নম্বর নিয়ে নেয়।
এরপর তাদের মধ্যে থেকে দুইজন টিএসটি এলাকায় থাকা ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ থেকে চার দফায় পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে নেয়। এছাড়া আসামিরা লিমনের বান্ধবীর গলায় থাকা ছয় আনা ওজনের স্বর্ণের চেইনও নিয়ে নেয়। সূত্র জানায়, লিমন ও তার বান্ধবীর সর্বস্ব লুটে নেওয়ার ঘটনায় অংশ নেয় ২১ জন। এর মধ্যে ১৬ জন ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আর বাইরে ছিল ৫ জন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন