সৌদিতে দুর্বৃত্তদের হাতে বাংলাদেশি যুবক খুন

স্বদেশ ছেড়ে সৌদি আরবে ১২ বছর ধরে কাজ করছিলেন কুমিল্লার কামরুল হাসান (৩০)। আগামী মাসেই দেশে ফিরে বিয়ে করার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই আশা আর পূর্ণ হলো না। দেশের ফিরে আসার কিছু দিন আগেই দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হলো কামরুলকে।
রোববার (১৭ এপ্রিল) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডে ভাইয়ের এই অস্বাভাবিক মৃত্যর ব্যাপারে অভিযোগ করতে এসে এমনটাই জানালেন বাবুল হাসান। আজ তিনি ভাইয়ের লাশ আনার ব্যাপারে এবং হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সৌদিস্থ দূতাবাসে চিঠি দেন।
বাবুল হাসান বাংলামেইলকে জানান, কুমিল্লার বুড়িরচং উপজেলার আবিদপুর গ্রামের আবু তাহের ভূইয়ার ছেলে কামরুল। ২০০৪ সালে জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরব পাড়ি জমান তিনি। প্রায় ১২ বছর ধরে দেশটির তাবুক শহরের মুনতাজা এলাকায় একটি মুদি দোকানে ব্যবসা করতেন কামরুল। আগামী মাসেই দেশে ফিরে বিয়ে কথা ছিল তার। এজন্য স্বর্ণের গহনা ও টাকাও জমিয়েছিলেন কামরুল। কিন্তু পাথরের পৃথিবীতে সেই সুখ আর তার কপালে সইলো না।
বাবুল বলেন, ‘আমরা গত ১৩ এপ্রিল জানতে পারি কামরুল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ১২ এপ্রিল রাতে তাকে তার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হামরা থানা পুলিশ। সেখানে থাকা অন্য বাঙ্গালিরা জানায়, পুলিশ তাদেরকে কামরুলের রুমের জিনিসপত্র নিয়ে যেতে বললে কয়েকজন তার রুমে ঢুকে। তারা জিনিসপত্র অনুসন্ধান করতে গিয়ে বক্সের ভিতরে রাখা জমাট বাঁধা রক্ত দেখতে পান। পরে তারা লাশ তল্লাশি করে দেখেন কামরুলের গলায় কাটা দাগ। এছাড়া যে দড়িতে কামরুল ঝুলন্ত ছিল সেটা খুবই দুর্বল ও ছোট।’ এ থেকে কামরুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভাই বাবুল হাসান।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর জন্য ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ব্যাপারে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মামলা করার ব্যাপারে সেখানকার থানায় গিয়েছিল সেদেশে বসবাসরত কামরুলের চাচাতো ভাই আজাদ। কিন্তু সৌদি পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করে। পুলিশের মধ্যে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখা যায়।’
এ ব্যাপারে আপনারা কাকে সন্দেহ করছেন?- উত্তরে বাবুল বলেন, ‘আজাদসহ সেখানকার বাঙ্গালিরা আমাদের জানিয়েছেন, তার বাসার পাশেই গরিব কিছু সৌদি নাগরিক বসবাস করতো। তারা কামরুলকে প্রায়ই ফলো করতো। তাদের ওপর সন্দেহটাই বেশি। কেননা আমার ভাইয়ের সেখানে কোনো শত্রু ছিল না। এছাড়া তাকে হত্যা পর তার জমানো ২০ ভরি স্বর্ণ ও ৪০ লাখ টাকা পাওয়া যায়নি। যেটা সে তার বিয়ের জন্য জমা করেছিল। হত্যাকারীরা মূলত এসব নেয়ার জন্যই কামরুলকে হত্যা করেছে।’
এদিকে কামরুলের লাশ বর্তমানে তাবুকের কিং খালেদ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। খুব দ্রুততার সঙ্গে লাশ দেশে আনাসহ সঠিক বিচারের দাবি জানিয়েছে কামরুলের পরিবারের।
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়টির অধীনস্ত দপ্তর ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহকারী পরিচালক জাহিদ আনোয়ার জানান, আমরা এ অভিযোগ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। পরবর্তীতে চিঠিটি যাচাই করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসে পাঠানো হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

যে কারনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সম্মেলন স্থগিত
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশক্রমে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশে যুক্তরাজ্য বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন

ইউরোপ থেকে অবৈধ বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বাড়ছে চাপ !
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফিরিয়েবিস্তারিত পড়ুন

বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার শ্রমিক নেবে সৌদি আরব
চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পেশার প্রায় ৩ হাজারবিস্তারিত পড়ুন