স্কুলছাত্রকে নির্মম নির্যাতন, পুলিশের হাবিলদার আটক
রাজশাহীর বাঘায় মোবাইল চুরি অভিযোগে ৭ম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রকে পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনকারী তিনজন পরস্পর ভাই। আহত অবস্থায় স্কুলছাত্রকে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে স্থানীয়রা।
সোমবার সকালে উপজেলার নারায়ণপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে নির্যাতনকারীদের মধ্যে একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। তিনি হলেন পুলিশের হাবিলদার সদস্য হাফিজুল ইসলাম ওরফে জিল্লু (৪০)। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র মনিরুল ইসলাম (১৩) নারায়ণপুর গাঁওপাড়া গ্রামের মিঠু আলীর ছেলে এবং বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। ঘটনার পর থেকে পুলিশ অপর দুই ভাইকে খুঁজছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকছাতারী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হারান প্রামাণিকের ছেলে ব্যবসায়ী মহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন ও হাফিজুল ইসলাম নারায়ণপুর মাছ বাজারে মাছ কিনতে গিয়েছিলেন। এ সময় মহিদুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি খোয়া যায়। আর এজন্য তারা সেখানে উপস্থিত স্কুলছাত্র মনিরুল ইসলামকে মোবাইল ফোন চোর হিসেবে সন্দেহ করে তাদের মোটরসাইকেলে মনিরুলকে তুলে নারায়ণপুর বাজারের বিপ্লব আলীর স-মিলের কাছে নিয়ে যান।
সেখানে মনিরুলকে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে মারপিট করতে থাকেন ওই তিন ভাই। এক পর্যায়ে তাঁরা মনিরুলের পায়ে দড়ি বেঁধে আনোয়ার হোসেনের দোকানের বারান্দার বাঁশের আড়ার সাথে উপরের দিকে পা এবং মাটির দিকে মাথা রেখে উল্টা করে টাঙ্গিয়ে পেটাতে থাকেন। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে স্কুলছাত্র মনিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এদিকে নির্যাতনের খবর বাজারে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পরে নির্যাতনকারী জাহাঙ্গীর, হাফিজুল ও মহিদুলকে ধাওয়া দিলে দুই ভাই পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা হাফিজুল ইসলাম জিল্লুকে আটক করে পুলিশে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা তূর্য ও লুৎফর রহমানসহ অনেকে জানায়, বিক্ষুব্ধ জনতার ধাওয়া খেয়ে মোটরসাইকেল ফেলে জাহাঙ্গীর ও মহিদুল পালিয়ে যান। তবে স্থানীয়রা হাফিজুল ইসলাম জিল্লুকে মোটরসাইকেলসহ আটক করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক রায় বলেন, মনিরুলের পায়ে দড়ি দিয়ে বাঁধার এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন রয়েছে।
মোবাইল চুরির সঙ্গে ছেলে জড়িত থাকতে পারে না দাবি করে হাসপাতালে মনিরুলের মা আবেদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে নির্দোষ। কিন্তু তারা আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গিয়ে উল্টো করে বেঁধে পিটিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যেন কেউ আর শিশুদের ওপর নির্যাতন চালাতে না পারে।’
বাঘা উপজেলা কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত স্কুলছাত্র মনিরুল ইসলাম বলে, সোমবার সকালে নারায়ণপুর বাজারের মাছ বাজার থেকে ওরা তিনজন তাকে ধরে নিয়ে আনোয়ারের মোবাইলের দোকানের বারান্দার বাঁশের আড়ার সাথে উপুড় করে বেঁধে মারপিট করতে থাকে এবং মোবাইল চুরির কথা বলে। সে তাদের মোবাইল নেয়নি বলে জানালেও তারা তাকে পা বেঁধে মারপিট করে। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহমুদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। নির্যাতনকারীরা তার আগেই পালিয়ে গিয়েছিল। তবে এলাকাবাসী একজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তিনি হলেন পুলিশের হাবিলদার হাফিজুল ইসলাম ওরফে জিল্লু। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
আলী মাহমুদ আরো জানান, অভিযুক্ত হাফিজুল রাজশাহী আরআরএফে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্র মনিরুলের মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওই মামলায় হাফিজুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন