স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা কী?
সৌরজগতের গ্রহদের সাথে পরমাণুর কণিকাদের একটা মিল আছে। প্রতিটা গ্রহ যেমন নিজ অক্ষের ওপর ঘোরে, পরমাণুর ক্ষুদ্র কণিকারাও তেমন নিজ অক্ষের ওপর লাটিমের মতো ঘোরে। কণিকাদের এই ঘুর্ণনের প্রকৃতি বোঝানো হয় এক ধরনের সংখ্যা দিয়ে। একে বলে স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা। বেশিরভাগ কণার কোয়ান্টাম সংখ্যাই +১/২ অথবা -১/২। এছাড়া ১, ২, ৩ ইত্যাদি পুর্ণসংখার কোয়ান্টাম কণিকাও আছে।
অনেকেই এই বিষয়টাতে ভুল করে। মনে করে যেসব কণিকা ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরার পর আবার বিপরীত দিকে ঘোরে তাদের কোয়ান্টাম সংখ্যা ১ এবং যেসব কণা ৩৬০ ডিগ্রির অর্ধেক ১৮০ ডিগ্রি ঘোরার পর আবার বিপরীত দিকে ঘোরে তাদের কোয়ান্টাম সংখ্যা ১/২। কিছুটা যুক্তিসঙ্গত মনে হলেও আসল ব্যাপারটা একটু আলাদা। এভাবে হিসাব করার একটা ঝামেলাও আছে। ১, বা ১/২ কোয়ান্টাম সংখ্যার ক্ষেত্রে এভাবে হিসাবে করলে হয়তো ফল বের হতো। কিন্তু ২ বা ৩ কোয়ান্টাম সংখ্যার হিসাব এভাবে মেলাতে কঠিন হয়।
আরেকটা বড় ঝামেলাও আছে। দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকা এসব কণিকা ১৮০ ডিগ্রি কিংবা ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরার পর আবার বিপরীত দিকে ঘুরবে—এটাই অবাস্তব ধারণা। কারণ একদিকে ঘোরার পর বিপরীত দিকে ঘুরতে হলে কণাকে আগে থামতে হবে। কিন্তু কণারা যদি থেমে যায় তাহলে তাদের শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং গোটা পরমাণুরই স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। এটা অসম্ভব ব্যাপার। তাই স্থিতিশীলতা ঠিক রাখতে হলে কণাদের একই দিকে ঘুরতে হবে। এবং এর মধ্য থেকেই কোয়ান্টামের হিসাব বের করে আনতে হবে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, কণারা যখন ঘোরে, কিছুক্ষণ পর পর তাদের চেহারা পবিরর্তন হয়। তার মানে ঘুর্ণনের একেক পর্যায়ে একেক রকম দেখায় কণাগুলোকে। তবে একটা নির্দিষ্ট কৌণিক ব্যবধান অতিক্রম করার পর এরা আবার আগের চেহরায় ফিরে আসে।
ধরা যাক, একটা তাস আছে আপনার হাতে। সেটা হলো ইস্কাপনের টিক্কা। এটাকে আপনি কিছুটা ঘোরালে একই চেহারা পাবেন না। একে ঠিক আগের চেহারায় পেতে হলে পুরো ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরিয়ে আনতে হবে।
আসলে ৩৬০ ডিগ্রিতে একটা চক্র পূর্ণ হয়। কোনো কণা ঠিক একটা পূর্ণ চক্র ঘুরতে যে কবার একই চেহারায় ফিরে আসে তা-ই হলো ওই কণার স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্য। ইস্কাপনের টিক্কা যদি একটা কণা হত, তাহলে এর স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা হত ১। কারণ প্রতিটা পুর্ণ চক্রে কণাটি একবারই আগের চেহারায় ফিরে আসে।
এখন যদি কোনও কণা যদি ১৮০ ডিগ্রি ঘোরার পরেই আদি চেহারায় ফিরে আসে তাহলে তার কোয়ান্টাম সংখ্যা হবে ২। কারণ কণাটি একটি চক্র পুর্ণ করতে দুবার আদি রূপে ফিরে আসছে। এই কণাটিকে তাসের হরতনের টিক্কার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। হরতনের টিক্কাকে ১৮০ ডিগ্রি ঘোরালেই আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
কিছু কণার স্পিন সংখ্যা ৩। সেই কণা ১২০ ডিগ্রিতে পুনরায় আগের চেহারায় ফিরে আসে। ৩৬০ ডিগ্রি অর্থাৎ এক চক্র পূর্ণ করতে ৩ বার আদি চেহারায় ফিরে আসে। তাই ওই কণার স্পিন ৩।
এত গেল পূর্ণ সংখ্যার স্পিনের গল্প। ১/২ স্পিনের কণার সংখ্যাই প্রকৃতিতে বেশি। ওদের স্পিন সংখ্যার হিসাব তাহলে কেমন হবে?
ওদের হিসেবটাও একই রকম। ওই কণার আগের চেহারায় ফিরে আসতে দুবার পুর্ণ চক্র পেরিয়ে আসতে হয়। অর্থাৎ ৭২০ ডিগ্রি ঘোরার পর এসব কণা আদিরূপে ফিরে আসে। অর্থাৎ এক পুর্ণ চক্রে অর্ধেক স্পিন পূর্ণ করে। তাই এর স্পিন ১/২।
এখন বাকি থাকল কেবল ধনাত্মক ও ঋণাত্মকের ব্যাপার। আসলে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক চিহ্ন দিয়ে কণার ঘুর্ণন কোন দিকে সেটাই বোঝায়।
এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা জরুরি। যেসব কণার স্পিন ১,২,৩…বা -১,-২,-৩ ইত্যাদি পূর্ণ সংখ্যা তাদেরকে বোসন কণা বলে। আর যেসব কণার স্পিন ১/২ কিংবা -১/২ সেসব কণা হলো ফার্মিয়ন কণা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আজকের যত আয়োজন ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছেবিস্তারিত পড়ুন
মোবাইল নম্বর ঠিক রেখেই অপারেটর পরিবর্তন করা যাবে: প্রক্রিয়া শুরু
মোবাইল ফোনের নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি-এমএনপি)বিস্তারিত পড়ুন
স্মার্টফোন কিনে লাখপতি হলেন পারভেজ
নির্দিষ্ট মডেলের ওয়ালটন স্মার্টফোন কিনে পণ্য নিবন্ধন করলেই মিলছে সর্বোচ্চবিস্তারিত পড়ুন