স্বপ্নকে তাড়া করতে বললেন মাহমুদউল্লাহ
মাহমুদউল্লাহ যেন একটা খোলা বই! কখনো নিজেই পাতা উল্টে নিজেকে পড়ার সুযোগ করে দিলেন। কখনো সেই বই থেকে পছন্দের পাতাটি খুঁজে নিলেন শ্রোতা-দর্শকেরা। ‘রিয়াদ ইন রিয়্যাল টাইম’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কাল বিকেলে কিশোর-তরুণ ক্রীড়ানুরাগীদের জন্য জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছিল ঢাকার আমেরিকান দূতাবাস। দূতাবাসের ফেসবুক পেজে সপ্তাহব্যাপী কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় এই কিশোর-তরুণদের। বারিধারার আমেরিকান সেন্টারে ঘণ্টা দেড়েকের অনুষ্ঠানে প্রথমে মাহমুদউল্লাহ বললেন ক্রিকেট নিয়ে তাঁর আবেগ-অনুভূতি আর বিশ্বকাপ অভিজ্ঞতার কথা। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব।
শুরুতে একটু নার্ভাস থাকলেও তাঁর ব্যাটিংয়ের মতোই সময় যত গড়িয়েছে, মাহমুদউল্লাহ ততই সাবলীল হয়েছেন। দেশের হয়ে খেলার অনুভূতি জানাতে গিয়ে হয়েছেন আবেগাপ্লুত, ‘অনেকে এটাতে চাপ বোধ করতে পারেন। কিন্তু আমি মনে করি এটাই আমার শক্তি। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়।’ অথচ ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন শৈশবে তাঁর ছিলই না! বড় ভাইয়ের সঙ্গে মাঠে যেতে যেতেই খেলাটার প্রতি আগ্রহ।
সঙ্গে পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়ে জীবনের এই মোড়ে এসে বুঝছেন, ক্রিকেটের সঙ্গে শিক্ষার সম্মিলন কতটা জরুরি। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয়, জীবন থেকে অর্জিত শিক্ষাও। ‘সার্টিফিকেটের জন্য তো আমরা পড়াশোনা করিই। এর বাইরেও জ্ঞানার্জন জরুরি। ক্রিকেট খেলায় শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে’—বলছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
বক্তৃতায় এল স্বপ্ন দেখার কথাও। ‘মানুষ তাঁর স্বপ্নের সমান বড়’ কথাটাই অন্য ভাষা পেল মাহমুদউল্লাহর কথায়, ‘স্বপ্নকে তাড়া করতে হবে। স্বপ্ন পূরণ না হলেও তাহলে অন্তত স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি যাওয়া যায়।’ খেলার জন্য কখনো কখনো কেমন ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সেটির উদাহরণ হিসেবে বললেন নয় দিনের শিশুপুত্রকে রেখে জিম্বাবুয়ে সফরে যেতে হওয়ার কথা। খারাপ সময়ে কীভাবে পরিবার আর একমাত্র সন্তান প্রেরণার নাম হয়ে দাঁড়ায়, বললেন সেটিও। স্বাধীন দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশও বাদ থাকল না।
প্রশ্নোত্তর পর্বটা ছিল উন্মুক্ত। তাতে কুইজ প্রতিযোগিতা থেকে আসারা যেমন অংশ নিয়েছেন, কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে প্রশ্ন করেছেন আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তারাও। তাঁদেরই একজন জানতে চাইলেন, শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তগুলোতে কীভাবে স্নায়ু ঠিক রাখেন ক্রিকেটাররা? তিনি নিজে নাকি ও রকম মুহূর্তে টেলিভিশনই বন্ধ করে দেন! মুখে হাসি ছড়িয়ে মাহমুদউল্লাহর উত্তর, ‘আমরাও অনেক সময় নার্ভাস হয়ে যাই। হাত ঘামতে থাকে। তবে মাঠে সবার মাথায় একটা চিন্তাই থাকে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং যা-ই করি না কেন, আমার কাছে বল এলে আমি আমার এক শ ভাগ দিয়ে কাজটা করব। আপনি কত ভালোভাবে চেষ্টা করলেন, সেটাই আসল।’
কেউ জানতে চাইলেন বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির অনুভূতির কথা; কারও প্রশ্ন, ক্রিকেট খেলা ছাড়া আর কী করতে ভালোবাসেন, কারও বা আগ্রহ খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুম নিয়ে। সাধ্যমতো সবারই কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করলেন মাহমুদউল্লাহ। তবু সময়ের কাছে একসময় তো হারতেই হয়! মাহমুদউল্লাহকে চেনা-জানার পর্বটাও শেষ হয়ে গেল একটা পর্যায়ে এবং সেটা অনুমিত শেষ দৃশ্যের মতোই। প্রিয় তারকাকে ঘিরে উঠতে লাগল একের পর এক সেলফি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন