স্বরূপকাঠীতে চাঁই বিক্রি করে স্বাবলম্বী অনেক পরিবার, রয়েছে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধার অভাব
এম. ডি. ইউসুফ, পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীতে বাঁশ দিয়ে তৈরী মাছ শিকারের চাঁই বিক্রি করে আর্থিকভাবে বহু পরিবার স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। উপজেলার বিন্না, জিলবাড়ী ও খেজুরবাড়ী এলাকায় চাঁইয়ের মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার চাঁই তৈরি করে স্বরূপকাঠীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব চাঁই নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বেপারীরা আগে থেকে যোগাযোগ করে তৈরির জন্য অর্ডার দিয়ে গেছে বলে চাঁই প্রস্তুতের সাথে নিয়োজিতরা। বেপারীরা বর্ষার মৌসুমে নৌকা, ট্রলার ও রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে এসব চাঁই নিয়ে যাচ্ছে। মাছ শিকারের চাঁই তৈরির পর বিক্রি করে কারিগররা লাভবান হলেও বেপারীরা বলছেন লোকসানের কথা।
চাঁই শিল্পীরা জানান, কার্তিক-অগ্রহায়ণ থেকে শুরু করে বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্যমাসই হলো চাঁই উৎপাদন ও বিক্রয়ের প্রধান মৌসুম। এসময় কাজ ফেলে অন্য কিছুর চিন্তা করার সুযোগ নেই। তাই দিনভর এসময় চাঁই তৈরীতে আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। স্থানীয়ভাবে তুলনামূলক দাম বেশি বিধায় উপজেলার স্বরূপকাঠী ও আটঘর কুড়িয়ানা থেকে বাঁশ সংগ্রহ করেন অনেকে।
প্রতিটি বাশ গড়ে ১০০ টাকা দরে ক্রয় করে তা থেকে ১০/১২ টি চাঁই তৈরী করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তারা। প্রতি ১ জনে প্রতিদিন গড়ে ২/৩টি এবং পরিবারের সবাই মিলে কাজ করলে প্রতিটি পরিবার ২০/২৫টি চাঁই তৈরী করতে পারে। আর এসব চাঁই স্থানীয় মিয়ারহাট, শ্রীরামকাঠী ও বৈঠাকাটা বাজারে বিক্রী হয়ে থাকে।
স্থানীয় বাঁশ সহজলভ্য হওয়ায় উপজেলার বালিহারী, বরছাকাঠী, বাইজোড়া, শ্রীরামকাঠীসহ নাজিরপুরের কয়েকটি গ্রাম থেকে বাঁশ সংগ্রহ করেন স্থানীয়রা। উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, চাঁই তৈরি নিয়ে ব্যস্ত চাঁই শিল্পীরা। কথা হয় খেজুবাড়ী এলাকার মিস্ত্রিবাড়ীর চাঁই তৈরিকারক নিতেশ মিস্ত্রীর সাথে। তিনি জানান, বাপ দাদার আমল থেকে আমরা চাঁই তৈরি করছি। আগে মুলি, বেত, বাঁশের দাম কম ছিল। এখন বেত তো নেই। আর মুলি ও বাশের দাম অনেক বেশি। বালিহারী, বরছাকাঠী, বাইজোড়া, শ্রীরামকাঠী থেকে বাঁশ এনে এসব চাঁই তৈরি করতে হচ্ছে। যার কারণে আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না। একটি চাঁই ১০০/১২৫ টাকা করে আমরা পাইকারি বিক্রি করছি।
একই গ্রামের চাঁই তৈরিকারক বিপুল মিস্ত্রী (৪০) জানান, আমি ১০ বছর যাবৎ চাঁই তৈরীর সাথে সম্পৃক্ত আছি। পারিবারিকভাবে চাঁই তৈরি করে আমি বর্তমানে স্বাবলম্বী। ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছি। তার স্ত্রী জানান, এখন আমাদের চাঁই তৈরির মৌসুম।
অমিল্য মন্ডল(৬০) জানান, বাপ-দাদার আমল থেকে এই চাঁই তৈরি করে আসছি। এসব চাঁই ১১০-১২৫ টাকায় বর্তমানে বিক্রী করছি। তবে ভাল মানের চাঁইয়ের জন্য প্রতি ১০০টি চাঁইয়ের মূল্য ৩০০০০ টাকা। তিনি তার চাঁই তৈরীতে ১০/১২ জন শ্রমিক খাটান যারা প্রতিটি চাঁই বেধে মূল আকার দেয়ার জন্য ১০ টাকা করে পান। এসব শ্রমিক দিনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন ।
চাঁই উৎপাদন ও বিক্রী ও পরিবহনকে কেন্দ্র করে শত শত পরিবার সাবলম্বী হচ্ছে। তবে যথেষ্ঠ ঋণ সুবিধার বিষয়ে অভিযোগ করে একাধিক ব্যক্তি বলেন, এসব এলাকায় ঋণ সুবিধা আশাব্যঞ্জক নয়। স্থানীয় মহাজনদের নিকট থেকে সুদের বিনিময়ে টাকা পাওয়া গেলেও সুদের হার আকাশ ছোয়া। কেউ কেউ আবার পুঁজি না থাকায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চাঁই তৈরির উপকরণ কিনছে। এদিকে সরকারিভাবে এদেরকে ঋণ দিয়ে সহায়তা দিলে তারা এ চাঁই শিল্পকে সুন্দরভাবে ধরে রাখতে পারতো এবং চাঁই শিল্পের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে বলে দাবি চাঁই তৈরীর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সিরাজগঞ্জে প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করল স্কুলের নৈশ প্রহরী
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলেরবিস্তারিত পড়ুন
বখাটে ছেলে রুবেলকে পরকিয়া প্রেমিক ও বন্ধু সহ গনধোলাই দিয়েছে স্থানীয় জনতা
স্বরুপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ডুবী গ্রামের আবুল কালামেরবিস্তারিত পড়ুন
ইন্দুরকানীতে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগী
এম.ডি. ইউসুফ, পিরোজপুর প্রতিনিধি: ইন্দুরকানীতে বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয়বিস্তারিত পড়ুন