স্বামীকে না পেয়ে গৃহবধূর পা ভাঙলেন এসআই!
ইটভাটা শ্রমিক স্বামীর বিরুদ্ধে নাশকতার কোনো মামলা নেই। তবু প্রতিপক্ষের লোকজন নিয়ে মধ্যরাতে বাড়িতে অভিযান চালান শিক্ষানবিশ এক উপপরিদর্শক (পিএসআই)। শ্রমিককে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক পিটিয়ে পায়ের হাড় ভেঙে দিয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার হয়ে গৃহবধূ আছিয়া খাতুন বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
রাতে বাড়িতে হানা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, আছিয়ার স্বামী আবদুল খালেক একটি নাশকতার মামলার আসামি। তিনি পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাঁর ঘরে যায়নি। মারপিট করার প্রশ্নই ওঠে না।
হামলার শিকার আছিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘গভীর রাতে আমার স্বামী আবদুল খালেক ও ছেলে আসাদুল ইসলাম পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ আমার ঘরে ঢুকে একা পেয়ে বেপরোয়াভাবে মারপিট করে। আমি চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি করলেও তারা শোনেনি।’
পুলিশের মারপিটে আছিয়ার ডান পায়ের উরু সন্ধির হাড় ভেঙে গেছে। তাঁকে ফেলে রেখে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে রাতেই শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। শ্যামনগর হাসপাতাল থেকে আছিয়াকে আজ শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, আছিয়ার পায়ে অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়েছে।
হাসপাতাল থেকে আছিয়ার স্বামী আবদুল খালেক বলেন, ‘আমি কোনো নাশকতা মামলার আসামি নই। গোপালগঞ্জের ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে আমাকে একটি মামলায় আসামি করা হলেও আমি জামিনে রয়েছি।’
আবদুল খালেক বলেন, ‘সরকারের দেওয়া সাড়ে চার বিঘা খাসজমিতে ৪০ বছর ধরে ধান ও মাছ চাষ করে আসছি। সম্প্রতি এই জমি দখল করে নেয় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি মিজানুর রহমানের আত্মীয় গোবিন্দপুর গ্রামের আজিজুল ও আরিফুল। আমি এর বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নিলে আদালতের আদেশে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। তা সত্ত্বেও তারা ফের দখল করলে আমি কালীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের শরণাপন্ন হই। তিনি শ্যামনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দিতে।’
আবদুল খালেক আরো বলেন, ‘পুলিশ মিজানুর রহমান কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে এই নির্যাতন চালায়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্যামনগর থানার ওসির দায়িত্ব পালনকারী এসআই আসাদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’
রাতে হানা দেওয়া পুলিশ দলের প্রধান পিএসআই আমিনুর রহমান দাবি করেন, ‘আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে। তাঁকে না পেয়ে কোনো নারীকে মারধর করার প্রশ্নই ওঠে না।’
গভীর রাতে এত লোক নিয়ে অভিযান চালানো প্রসঙ্গে আমিনুর রহমান বলেন, ‘ওরা আসামিকে দেখিয়ে দিতে গিয়েছিল।’
যোগাযোগ করা হলে শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আকবর কবির বলেন, আবদুল খালেক জাতীয় পার্টির লোক। তাঁর বিরুদ্ধে নাশকতার কোনো মামলা নেই। তিনি জানান, পুলিশের দলটি ইটভাটা শ্রমিক সরদার মিজানুরের পক্ষ নিয়ে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে নির্দয়ভাবে মারপিট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আকবর কবির আরো জানান, পুলিশ যদি দোষী না হবে তাহলে প্রেসক্লাবে এসে কেন সাংবাদিকদের কাছে তদবির করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন