স্বামীকে নিয়ে গেছে, দুই ছেলেকে পুড়িয়েছে, এখন গেল শেষ সন্তানও
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডুর টাউনশিপের উত্তর জানবুনিয়া গ্রামে বাড়ি ছিল নূর বেগমের। প্রায় ২০ দিন আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অন্যদের মতো তাঁদের ঘরবাড়িও পুড়িয়ে দেয়। পুড়িয়ে হত্যা করে দুই ছেলেকে। ধরে নিয়ে যায় স্বামী জামাল হোসেনকে। এরপর ছয় মাস বয়সী ছোট ছেলে জানে আলমকে নিয়ে শুরু করেন যাত্রা।
অসুস্থ সেই শিশুটি আজ শনিবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মারা গেছে। এর পর থেকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নূর বেগম। অনাহারে থাকতে থাকতে তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
লেদা ক্যাম্পের বাসিন্দা ইলিয়াছ মাঝি এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ ছাড়া এ সংক্রান্ত আটটি ছবি পাওয়া গেছে।
ইলিয়াছ মাঝি জানান, আরাকানের মংডুর টাউনশিপের উত্তর জানবুনিয়া গ্রামে নূর বেগমের সুখের সংসার ছিল। প্রায় ২০ দিন আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে। গ্রামের অন্য রোহিঙ্গা মুসলমানদের মতো তাঁদের ঘরবাড়িও পুড়িয়ে দেয় সেনাবাহিনী। চোখের সামনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নূর বেগমের দুই ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করে। নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ছয় মাসের শিশু জানে আলমও। সেনাবাহিনী তার ছোট্ট শরীরেও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। নূর বেগম হাতে-পায়ে ধরে শিশুর জীব্ন রক্ষা করেন। কিন্তু যাওয়ার আগে সেনাসদস্যরা তাঁর স্বামী জামাল হোসেনকে ধরে নিয়ে যান। এরপর ছোট্ট জানে আলমকে নিয়ে নূর বেগম অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পালাতে থাকেন। শুরু হয় হাঁটা। হাতে কোনো অর্থকড়ি ছিল না। রাত হলে ঝোপ-জঙ্গলে থাকতেন। থেকেছেন অর্ধাহারে, অনাহারে।
একপর্যায়ে নূর বেগম ও তাঁর শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। কংকালসার অসুস্থ শিশুকে নিয়ে বাংলাদেশে আসার জন্য নাফ নদের তীরে যান নূর বেগম। কিন্তু দালালকে অর্থ দিতে না পারায় বাংলাদেশে আসতে পারেননি। এরপর অসুস্থ শরীর নিয়েই হাঁটতে হাঁটতে উত্তরে তুমরু চলে যান। বৃহস্পতিবার রাতে তুমরু সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর গতকাল সন্ধ্যার দিকে শিশুসন্তানকে নিয়ে টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে পৌঁছান।
ইলিয়াছ মাঝি জানান, আজ সকাল হলে শিশুটিকে ক্যাম্পে অবস্থানরত বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত চিকিৎসাক্যাম্পে দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ভোরে শিশুটি তার মাসহ সবাইকে কাঁদিয়ে চিরতরে চলে যায়।
পরে ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা শিশুটিকে শেষ গোসল করায় এবং জানাজা শেষে তাকে দাফন করে।
ইলিয়াছ মাঝি জানান, শীতের মধ্যে ঝোপে-জঙ্গলে থাকায় এবং ঠিকমতো খাবার ও চিকিৎসা না পাওয়ায় শিশু জানে আলম নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে তাঁদের ধারণা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন