স্বামীর শেষকৃত্য করতে দুই সন্তানকে বন্ধক!
দীর্ঘ রোগভোগের পর মৃত স্বামীর শেষকৃত্যের খরচ জোগাড় করতে গিয়ে দুই সন্তানকে বন্ধক রাখলেন এক নারী। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটছে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে কেওনঝড়ে। গ্রামের মোড়লের কাছে সন্তানদের বন্ধক রেখে সেই টাকা দিয়েই স্বামীর শেষকৃত্য ব্রাক্ষণভোজন করিয়েছেন তিনি।
কেওনঝড়ের বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর সূত্রে জানা গেছে, উড়িষ্যার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে কেওনঝড় জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম জাম্পুয়া। এই গ্রামেই পাঁচ সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন সাবিত্রী নায়েক। সাবিত্রীর স্বামী রাইবা ছিলেন তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। দিনমজুরি করে কোনোমতে সংসার চলত তাঁদের।
কিন্ত তিন বছর আগে রাইবা নায়েক অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর ধীরে ধীরে অচল হতে থাকে পরিবারের অবস্থা। একদিকে সংসারের খরচ, অন্যদিকে স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় পরিবারটি। সবশেষে গত ৮ জানুয়ারি অভাব অনটনে জর্জরিত পরিবারকে রেখে মারা যান রাইবা নায়েক।
স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার মতো অর্থ ছিল না সাবিত্রীর হাতে। ফলে স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য এলাকায় দরজায় দরজায় গিয়ে হাত পাতেন সাবিত্রী। কিন্ত সাবিত্রীর সেই আবেদনে এগিয়ে আসেননি কেউ-ই। উপরন্তু গ্রামের পুরোহিতরা বলেন, স্বামীর শেষকৃত্যে ব্রাক্ষণভোজন না করালে পরকালে কষ্ট পাবেন মৃত স্বামী।
অবশেষে এক প্রতিবেশী সাহায্যের হাত নিয়ে এগিয়ে এলেন বটে, তবে সেই সাহায্য নিঃস্বার্থ নয়। সাহায্যের পরিবর্তে ওই প্রতিবেশীর কাছে সাবিত্রীকে বন্ধক রাখতে হলো নিজের দুই ছেলেকে। স্বামীর শেষকৃত্যের খরচ বাবদ পাঁচ হাজার রুপির বিনিময়ে সাবিত্রী ওই প্রতিবেশীর কাছে বন্ধক রাখলেন তার ১৩ বছরের মুকেশ ও ১১ বছরের সুকেশ নামের দুই নাবালক ছেলেকে।
যত দিন পর্যন্ত সাবিত্রী সুদে আসলে ওই টাকা প্রতিবেশীকে ফিরিয়ে না দেবেন তত দিন পর্যন্ত প্রতিবেশীর কাছে ক্রীতদাস হয়ে থাকবে মুকেশ ও সুকেশ। এই শর্তেই দুই ছেলেকে বন্ধক রেখে স্বামীর শেষকৃত্যের অর্থ জোগাড় করলেন সাবিত্রী। এদিকে বাবার শেষকৃত্যের অর্থ জোগাড় করতে নাবালক মুকেশ ও সুকেশ একরকম বাধ্য হয়ে ক্রীতদাসের জীবন বেছে নেয় হাসিমুখেই।
সাবিত্রী বলেন, ‘অর্থের অভাবে ছেলেদের পড়াশোনা আর স্কুলের পাঠ তো চুকে গেছে অনেক আগেই। এখন সন্তানদের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার সামর্থ্যও নেই আমার।’ মুকেশ এবং সুকেশ ছাড়াও ঘরে রয়েছে তিন সন্তান। যারমধ্যে ৮ ও ৪ বছরের দুই মেয়ে এবং ৯ বছরের এক ছেলে। এখন কীভাবে তাদের বাঁচিয়ে রাখবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না সাবিত্রী।
এদিকে এই ঘটনা গণমাধ্যমে জানাজানি হওয়ার পরই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, সাবিত্রী নায়েক যাতে বিধবা ভাতাসহ সরকারি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পান তার চেষ্টা করবেন তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন