হারবাল চিকিৎসা
স্বামী কবিরাজ ছিলেন তাই স্ত্রীও কবিরাজ!
নীলফামারী: ইউনানী বা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ না নিলেও তিনি এখন জাদরেল কবিরাজ। স্বামী কবিরাজ ছিলেন সেই সুবাদে কবিরাজ সেজে দেদারসে চালাচ্ছেন বিশাল হারবাল চিকিৎসা কেন্দ্র! ঢাল নেই তলোয়ার নেই, তবুও নিধিরাম সর্দারের মত চর্ম, যৌন, এলার্জি, জেনারেল ফিজিশিয়ান ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা।
প্রতিষ্ঠানের সামনে ডিজিটাল সাইনবোর্ড, স্যাটেলাইট সিডি চ্যানেলে সেলুলয়েড বিজ্ঞাপন আর আকষর্ণীয় লিফলেট। পোস্টার জাতীয় প্রচারপত্রের মাধ্যমে নানামুখী তৎপরতা এই হারবাল চিকিৎসা কেন্দ্রে সেবা নিতে এসে প্রতারণা আর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। অথচ সংশ্লি¬ষ্ট প্রশাসন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা নির্বিকার।
জানা যায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের দিনাজপুর রোডস্থ সিদ্দিক মিল সংলগ্ন রাস্তার সঙ্গে গড়ে ওঠেছে এই হারবাল চিকিৎসা কেন্দ্র। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে এখানে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি প্রকৃত অর্থে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হারবাল চিকিৎসক না হলেও দীর্ঘদিন থেকে নানাদিক ম্যানেজ করে প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে আসছিলেন। সাধারণ মানুষ ভেতরের খবর না জানায় তাজুল ইসলাম হেকিম বা কবিরাজ হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেন। সৈয়দপুরসহ আশপাশের এলাকার জমজমাট হারবাল চিকিৎসা একচেটিয়াভাবে চলতে থাকে। ড্রাগ ইন্সপেক্টর, পুলিশ প্রশাসন, সাংবাদিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাসোহারা প্রদানের মাধ্যমে ম্যানেজ করে লুটে নিতে থাকে রোগীদের টাকা। কিন্তু হঠাৎ করেই গত বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাজুল ইসলাম। সচেতন মহল ভেবেছিল এবার বুঝি প্রতারকের খপ্পর থেকে বাঁচবে সাধারণ রোগীরা। ভুল প্রমাণিত হল তাদের ধারণা। বরং আগের মতই জমজমাট হারবাল চিকিৎসা কেন্দ্র।
এবার হাল ধরেছেন মৃত তাজুল ইসলামের স্ত্রী নারগিস আক্তার। স্বামী বেঁচে থাকতে যাকে কেউ কখনই এখানে দেখেননি। তিনি এখন পুরোদস্তুর কবিরাজ সেজে চালাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো রকম প্রশিক্ষণ বা সনদপত্র না থাকলেও তিনি চর্ম, যৌন, এলার্জি বিষয়ে জেনারেল ফিজিশিয়ান ও ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক হারবাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে রোগী দেখছেন। ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে চলেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হারবাল বা ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিষয়ে স্বীকৃতি কোনো চিকিৎসা শাস্ত্রেই তার কোনো রকম প্রশিক্ষণ বা সনদপত্র নেই। ইউনানী বা আয়ুর্বেদিক হোমিও বা এলোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির ন্যূনতম শর্ট কোর্সও করেননি। এমনকি স্বামীর সঙ্গে থেকে ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা গ্রহণ করেছেন বলেও কেউ জানে না। যে কারণে বাংলাদেশ ইউনানী মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের রেজিস্ট্রার চিকিৎসক সনদপত্র নাই তার। শুধুমাত্র রাজশাহী এসবি ল্যাবরেটরিজ নামে একটি অখ্যাত ইউনানী ওষুধ কোম্পানির ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি একাই বিশাল চিকিৎসা কেন্দ্র চালাচ্ছেন ওই মহিলা। এমনকি ড্রাগ লাইসেন্সটুকুও নাই তার।
এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা ড্রাগ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, চিকিৎসক হিসেবে কারও কোনো প্রশিক্ষণ বা সনদপত্র আছে কিনা তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। ওষুধ বিক্রেতারা নকল, মেয়াদ উত্তীর্ণ ভেজাল ওষুধ বিক্রি করছে কিনা তাই আমরা তদারকি করি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

নাতনিকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দাদা আটক নীলফামারীতে
নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ৬০ বছর বয়সীবিস্তারিত পড়ুন

নীলফামারীর জলঢাকায় ট্রাক চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু !
এম ইসলাম সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ- নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ডোমার সড়কের দুন্দিবাড়িবিস্তারিত পড়ুন

নীলফামারীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ইটবোঝাই ট্রলির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে নিহতবিস্তারিত পড়ুন