ফরিদপুরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
স্বার্থবাদী সমাজ ব্যবস্থা মানুষকে মানবিকতা ভুলিয়ে দিচ্ছে
বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, ‘বর্তমান স্বার্থবাদী সমাজ ব্যবস্থা মানুষকে মানবিকতা ভুলিয়ে দিচ্ছে। এতে মানুষ পারিবারিক স্নেহ-মমতার বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এমনকি মা ও বাবার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিচ্ছে না।
এ ধরনের আচরণ আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি বিরুদ্ধ চরম মানসিক দীনতার পরিচয় দিচ্ছে। মায়া-মমতার চিরন্তন সম্পর্ক অনিশ্চিয়তার চোরাবালিতে হারিয়ে যেতে বসেছে। এ হীন মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে মানবিক অনুভূতিশূন্য এক জড় পদার্থে পরিণত হবে মানুষ। ’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ব্যাসদী গ্রামে ছেলের কাছ থেকে ভরণপোষণ না পাওয়া দম্পতি পাঁচু সরদার ও জহুরা বেগমের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিুবর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতীক ও যুগ্মসম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গাড়ি তেকে নেমে মেঠো পথ পেরিয়ে কাদের সিদ্দিকী ওই গ্রামের জহুরার বাড়িতে যান। গিয়ে কাদেও সিদ্দিকী জহুরা বেগমকে মা সম্বোধন করে তার পরিচয় দিতে বলেন,এ দেশের এক নেতা ছিলেন। এটুকু বলার পর সেখানে উপস্থিতরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাম উচ্চারণ করেন। তখন কাদের সিদ্দিকী বলেন,আমি তার পোলা। আপনাকে দেখতে এসেছি। আজ থেকে আমিও আপনার আরেক ছেলে হলাম। এখন প্রতি মাসে অপনাকে তিন হাজার করে টাকা পাঠাব। আপনারা স্বামী ও স্ত্রী দু’জনে মিলে পেট ভরে ভাত খাবেন। জবাবে আবেগাপ্লুত জহুরা বেগম বলেন, বাবা আমার ছেলে আমাকে ভাত দেয় না। আমি মোটা চালের ভাত পেলেই খুশি। তাকে সান্তনা জানিয়ে বলেন, সন্তানরা ইচ্ছে করলেই মা বাবাকে অপমান করতে পারেন না। সেজন্য সরকার, রাষ্ট্র ও সমাজের সকলে মিলে কাজ করতে হবে।
পরে বঙ্গবীর নিজে জহুরা বেগমকে তার দলীয় প্রতীক গামছা পড়িয়ে দিয়ে তার হাতে টাঙ্গাইলের বিখ্যাত চমচম, নগদ ১০ হাজার টাকা অর্থ ও শাড়ি-কাপড়, পাঞ্জাবীসহ বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়। বঙ্গবীরকে কাছে পেয়ে উপস্থিত সকলেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
পরে তিনি জহুরা বেগমের স্বামী পাঁচু সরদারের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। এরপর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ঘুরে ঘুরে এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কুশল জানতে চান। জবাবে তারাও বঙ্গবীর কেমন আছেন তা জানতে চান। এর মধ্যে কয়েকজন গাছ থেকে ডাব পেরে নিয়ে আসেন। বঙ্গবীর খুশি মনে তাদের দেওয়া ডাবের পানি পান করেন। গ্রামবাসী কাদের সিদ্দিকীকে তাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আবার বেড়াতে আসার দাওয়াত দেন। এরপর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগে স্ত্রীকে ভরণপোষণ না দেওয়ার জন্য স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু এই প্রথম সন্তানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগে মামলা হল। এটা দুঃখজনক। তিনি বলেন, আমরা ব্যর্থ, সমাজপতিরা ব্যর্থ, রাষ্ট্র ব্যর্থ। রাষ্ট্রের কোথাও কারো কোনো সম্মান নেই। যদি বড়দের সম্মান না করার কারণে কেউ শাস্তি পেত। তাহলে আজ এ অবস্থা হত না। এটা সামাজিক অবক্ষয় উল্লেখ করে বঙ্গবীর বলেন, সমাজ ভাল না থাকলে কিছুতেই শান্তি আসবে না।
উল্লেখ্য, ছোট ছেলে সেলিম সরদারকে জমি লিখে দেওয়ার পর সে মা জহুরা বেগম (৬৫) ও বাবা পাঁচু সরদারকে (৭৫) ভরণপোষণ দিতে অস্বীকার করায় প্রতিকার পেতে গত ১৭ এপ্রিল ফরিদপুরের চার নম্বর আমলি আদালতে আরজি জানান জহুরা বেগম।
আদালতের বিচারক মো. সুমন হোসেন আরজিটি আমলে নিয়ে সেলিম সরদার ওরফে মধুর প্রতি সমন জারি করে আগামী ২৩ মে তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এটি ২০১৩ সালের পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইনে ফরিদপুরে দায়ের করা প্রথম মামলা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন