স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি : ৬ লাখ টাকায় খুনের চুক্তি
সিলেটের বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর স্ত্রী সুজিনা বেগম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার গয়াছ মিয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে শনিবার। শুক্রবার গয়াছকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। সে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী গ্রামের মৃত জহির উল্লার ছেলে।
এ সময় তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরাও উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর ঘাতক আয়াজকে নিহত সুজিনার মা রেজিয়া বেগম ও ছোট ভাই জহির উদ্দিনের সামনে আনা হলে তারা তাকে চার ঘাতকের একজন হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গয়াছ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। আদালতে জবানবন্দিতে গয়াছ জানায়, প্রবাসী মুরাদ আহমদের প্রথম স্ত্রী সাবিনা বেগমের নির্দেশে তার সৎভাই ডাকাত সর্দার জুনাব আলী ও একই গ্রামের আওলাদ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে। ৬ লাখ টাকার চুক্তিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানায় গয়াছ।
জবানবন্দিতে গয়াছ আরও জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আত্ময় সেজে মিষ্টি নিয়ে সুজিনার বাড়িতে যাই। বাড়ির ভিতরে আমি, জুনাব আলী, সজলু ও আওলাদ প্রবেশ করি। বাইরে ছিল আরো ৩ জন। সুজিনা আমাদেরকে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে রান্না ঘরে যায়। এ সময় জুনাব আলী, সজলু ও আওলাদ রান্না ঘরে গিয়ে সুজিনাকে ছুরি দিয়ে কোপায়। আমি সুজিনার মাকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যাই।
এ ব্যাপারে সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হোসেন বলেন, গয়াছের স্বীকারোক্তিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে ঘটনার সাথে জড়িত সজলুকে জগন্নাথপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের সুন্দর আলীর কন্যা যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবিনা বেগমের সাথে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী শ্রীরামসি সাতহাল গ্রামের মুরাদ হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের পরিবারে জন্ম নেয় ৩টি সন্তান। বিয়ের প্রায় ৫ বছর পর থেকে সাবিনা-মুরাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় মনোমালিন্য। এক পর্যায়ে পৃথকভাবে বসবাস শুরু করেন সাবিনা ও মুরাদ।
কয়েক বছর ধরে এই বিরোধ আরো জটিল হয়ে উঠে। সাড়ে ৩ মাস পূর্বে দেশে এসে সুজিনাকে বিয়ে করেন মুরাদ। আর এই বিয়েটাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি মুরাদের প্রথম স্ত্রী সাবিনা। মুরাদ বিয়ে করে লন্ডন চলে যাবার পর দেশে আসেন সাবিনাও। এ সময় মুরাদ-সুজিনার বিয়ে ভেঙ্গে দিতে মুরাদের পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করেন সাবিনা। কিন্ত এই চাপের কাছে কিছুতেই রাজি হননি মুরাদের পরিবার। প্রায় এক মাস দেশে অবস্থান করে লন্ডন চলে যান সাবিনা। সুজিনার মামা আব্দুন নূরের অভিযোগ-পথের কাঁটা দূর করতেই সুজিনাকে হত্যা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যার পর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মৃত হাজী আবদুর রউফের বাড়িতে আত্মীয় পরিচয়ে মিষ্টি হাতে নিয়ে আসা চারজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে নিহত হন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মুরাদ আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী সুজিনা বেগম (২১)। এসময় গুরুত্বর আহত হন সুজিনার মা রেজিয়া বেগম ও ছোট ভাই জহির উদ্দিন। এ ঘটনায় প্রবাসীর প্রথম স্ত্রী সাবিনা বেগমসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে গত মঙ্গলবার নিহত সুজিনার মামা ক্বারী আবদুন নুর বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন