স্বৈরাচারী দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন হবে : খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই স্বৈরাচারী এ সরকারের পতন হবে। তখনই দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে। বাংলাদেশের সুনাম ফিরে আসবে। আর এ চোর, দুর্নীতিবাজ সরকারের হাত থেকে দেশ মুক্ত হবে ইনশা আল্লাহ। রোববার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র নির্বাসিত। আইনের শাসন অনুপস্থিত। মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘিত। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রতিনিয়ত মানুষ গুম ও খুন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর জন্য এই জবরদখলকারী সরকার দায়ী। কারণ তারা কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার শুধু মিথ্যা কথা আর বড় বড় বুলি আওরায়। আর বড় বড় প্রকল্পের নামে সব টাকা ও কমিশন নিয়ে থাকে। এই হলো তাদের কর্মকাণ্ড। এসব কাজের সঙ্গে মন্ত্রী-এমপি তাদের পরিবারের লোক এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ জড়িত। এর জন্য তারাই দায়ী। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে চাকরির মাপকাঠি হচ্ছে দলীয় বিচার। প্রার্থীর যোগ্যতা, জেষ্ঠতা কোনো কিছুর মাপকাঠিতে নয়। আজকে সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করেছে। বিচার বিভাগও এর বাইরে নয়। এখানে অাওয়ামী লীগ দলীয় লোক বসানো হয়েছে। বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ সুবিচার পায় না। সরকারি দলের লোকেরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়।
চুরি-দুর্নীতি যাই করুক না কেন তারপরেও তাদের বিচার নেই। খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি দেশে সুশাসন চায়। আইনের শাসন চায়। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সকল জনগণের নিরাপত্তা বিধান করতে চায়। আমরা তা করতে পারবো। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবো, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো। এসবের জন্য প্রয়োজন গণতন্ত্র। তাই দেশবাসীর কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে এই পবিত্র রমজানে প্রতি নামাজের শেষে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবো। আল্লাহ যেন এই জালেমদের অতি দ্রুত বিদায় করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের পুলিশ বাহিনী আজ চরম অত্যাচার ও দুর্নীতির সঙ্গে লিপ্ত। তারা গুম করে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মানুষকে ক্রসফায়ার, না হলে জেলে নিয়ে যাবে।
পুলিশ ছিল জনগণের সেবক। কিন্তু আজ পুলিশ বাহিনীকে দলীয়করণ করে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। পুলিশ এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে। তারা বলে, ‘এ সরকারকে আমরাই টিকিয়ে রেখেছি। বোমা মেরে ও গাড়ি জ্বালিয়ে বিরোধী দলের লোকজনকে আটক করে তাদের আন্দোলনকে দমন করেছি।’ আজ পুলিশের হাত আইনের চেয়েও লম্বা। আগে ছিল আইনের হাত লম্বা। সেই পুলিশের কাছ থেকে আজ জনগণ ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করতে পারে না।
পুলিশের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।” তিনি বলেন, বিচার বিভাগে এই অবৈধ সরকার নিজেদের লোকজনকে বসিয়েছে। তাই সেখানে সাধারণ জনগণ কোনো সুবিচার পায় না। অথচ আওয়ামী লীগের লোক হলে তাদের কিছুই হয় না। তারা পার পেয়ে যায়। এদিকে জ্যামের কারণে ড্যাবের আরেক আমন্ত্রিত অতিথি বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ কি এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইফতার শুরুর প্রায় ৫ মিনিট পর অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছান।
পরে তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রয়োজনে সকল জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। আশা করি, ড্যাব এ ঐক্য প্রচেষ্টায় ভূমিকা পালন করবে। ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার চিকিতসক-পেশাজীবী ইফতারে অংশ নেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ঢাবি শিক্ষক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সদরুল আমিন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এম এ মাজেদসহ বিশিষ্টজনরা। এ ছাড়াও ড্যাবের ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন