হতদরিদ্রদের চাল স্বচ্ছলদের পেটে
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ করা ১০ টাকা কেজি দরের চাল যাচ্ছে স্বচ্ছলদের পেটে। এই ইউনিয়নে এক হাজার ২০১ জন কার্ডধারীর মধ্যে অন্তত ৪০০ জনই স্বচ্ছল বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে অন্তত ৬০ জনের রয়েছে নিজস্ব দালান অথবা পাকা বাড়ি। এ ছাড়া আরো ২৫-২৬ জনের রয়েছে পাঁচ থেকে ছয় বিঘা করে নিজস্ব জমি যাঁরা বর্গাদার দিয়ে জমি চাষ করান।
এ ছাড়া মাজপাড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকাভুক্ত পরিবারের মধ্যে ৭০টিই ভুয়া। এ সব নামে কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)চেয়ারম্যান আবদুল গফুর মিয়া এবং কয়েকজন ডিলার এসব অস্তিত্বহীন মানুষের নামে বরাদ্দ করা চাল উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি করে ভাগ বাটোয়ারা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া অন্য সাতটি ওয়ার্ডে ১০ টাকা দরের চাল নিয়ে চলছে নয়-ছয়।
এদিকে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে তারা প্রায় সবাই যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা। তাঁরা প্রকৃত খাদ্য ব্যবসায়ী নন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, মাজপাড়া ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে মোটামুটি প্রকৃত সুফল ভোগীদের তালিকা করা হয়েছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রোকনপুর গ্রামের নবির উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম, মৃত রওশন মণ্ডলের ছেলে স্বপন মণ্ডল, রাব্বান মণ্ডল, আবদুর রাজ্জাক, হেলাল প্রামাণিক, মোশারোফ বিশ্বাস, আবদুল হাই প্রামাণিকসহ অন্তত ৪০ জন পাকাবাড়ি এবং নিজস্ব জমির মালিক ও স্বচ্ছল। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ৯০ জন স্বচ্ছল এবং পাকাবাড়ির মালিক। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩২ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ জনের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ এদের নামে নিয়মিত ১০ টাকা কেজি দরের চাল উত্তোলন করা হচ্ছে। এই ওয়ার্ডে অস্তিত্ব পাওয়াদের একজন বাদশা সরদার। তাঁর পাকা বাড়ি রয়েছে। বাড়ির ছাদে তিনি মুরগির খামার গড়েছেন।
একই অবস্থা ৬ , ৭ , ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডেরও।
এ ব্যাপারে পারখিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জিন্নাত আলী শেখ বলেন, সরকার দুঃস্থদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি করছে। অথচ মাজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুল গফুর মিয়া ভুয়া লোকের নাম তালিকাভুক্ত করে এসব চাল উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি করছেন।
আটঘরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ওমর হোসেন বলেন, ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী তারা শুধু ডিও দেন। এর চেয়ে তাঁদের বেশি কিছু করার নেই।
মাজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর মিয়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এখনকার গরিব মানুষও দালান বাড়িতে বসবাস করে থাকেন। তাই পাকা বাড়ি আছে এমন কিছু লোক এই সুবিধা পেয়ে থাকতে পারে।’
আবদুল গফুর মিয়া আরো বলেন, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর হয়ে বিগত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত এক প্রার্থী তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ১০ টাকা কেজির চাল পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকা হয়েছে। এখানে কোনো ভুয়া লোক নেই। বা চেয়ারম্যানের নিজস্ব কোনো পছন্দ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলিমুল রাজিব বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন