হাঁটুর জয়েন্টে সাধারণত কী ধরনের সমস্যা হয়?
প্রশ্ন : হাঁটুর জয়েন্টে সাধারণত কী ধরনের সমস্যা হতে পারে? কী কী সমস্যা হলে হাঁটাচলায় জীবনযাপন ব্যাহত হতে পারে?
উত্তর : হাঁটু হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জয়েন্ট। যেটা ওজন বহন করে। এর মধ্যে আমরা দেখি যে তিনটি হাঁড় নিয়ে এই জয়েন্টটি গঠিত। ওপরের দিকে থাকে উরুর হাড় বা ফিমার, নিচের দিকে টিবিয়া, আর আছে প্যাটলা বা বাটি। এই তিনটি হাড়ই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। এই হাঁটুর যে হাড়গুলো সেগুলো আবার আশপাশে ভেতরে লিগামেন্ট দেওয়া।
আমার কাছে সাধারণত দুই ধরনের রোগী আসে। একজন ধরেন হাঁটু ব্যথা নিয়ে আসে। আরেক ধরনের রোগী আঘাতের জন্য আসে। এখন বয়স্কজনিত রোগ বা যেকোনো রোগ যখন হাঁটু ব্যথা নিয়ে আসে, তার যখন কোনো আঘাতের ইতিহাস থাকে না, তখন আমরা চিন্তা করি এটি একধরনের আরথ্রাইটিস হতে পারে। একেক বয়সে একেক ধরনের আরথ্রাইটিস হয়। যদি সে তরুণ হয়, আমরা চিন্তা করি গাউটের কারণে আরথ্রাইটিস হয়েছে কি না, টিউবার কলোসিস আরথ্রাইটিস হয়েছে কি না। ইনফেকটিভ আরথ্রাইটিস হয়েছে কি না।
যদি বয়স বেশি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে আমরা জানি যে ডিজেনারেটিভ আরথ্রাইটিস বা অস্টিওআরথ্রাইটিস। আরথ্রাইটিস মানে জয়েন্টের প্রদাহ। যেমন হাড় কিছুটা ক্ষয় হয়, তেমন বৃদ্ধি পায়, এ ধরনের উপসর্গ নিয়ে আসে। আর যদি আঘাতের জন্য ব্যথা নিয়ে আসে, তখন আমি প্রশ্ন করি আপনি কী করতে গিয়ে আঘাত পেয়েছেন। আঘাত পাওয়ার পর হাঁটুটা কি ঘুরে যাচ্ছে, ছুটে যাচ্ছে বা আটকে যাচ্ছে, এই ধরনের কাহিনী আমরা রোগীর মুখে শুনতে পাই।
প্রশ্ন : একজন রোগীর এই পুরো ইতিহাস জানা এবং পরীক্ষা করা নিজেদের এর গুরুত্ব কতখানি?
উত্তর : চিকিৎসক হিসেবে আমি একটি রোগের চিকিৎসা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ তার কথা শুনে, তাকে শারীরিকভাবে রোগ নির্ণয় করে করতে হবে। বাকি ১০ থেকে ১৫ ভাগের ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ওপর নির্ভর করবে। যেমন : একটি হাঁটুর জন্য আমি এক্সরে করতে পারি, আবার একটি এমআরআই করে দেখতে পারি, তারপর তার রোগটি আমি নির্ণয় করতে পারি।
প্রশ্ন : হাঁটুর কোন কোন গঠনে আঘাতটি বেশি হয়?
উত্তর : আমাদের কাছে সাধারণত আঘাত পেয়ে শৌখিন খেলোয়াড়রা লিগামেন্ট ইনজুরি নিয়ে আসে আর আঘাতের জন্য সমস্যা নিয়ে আসে। ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে আমাদের কাছে আসে অ্যান্টি ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট। এরপর হলো মিনিস্কাস।
প্রশ্ন : ক্রুশিয়েট লিগামেন্ট যদি আহত হয়, সে ক্ষেত্রে তার কী সমস্যা হবে?
উত্তর : যদি লিগামেন্ট ইনজুরি হয়, আমাদের কাছে প্রায়ই বলে ডাক্তার সাহেব আমি তাড়াতাড়ি হাঁটতে পারি না। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে বা নামতে অসুবিধা হয়। নামতে যখন অসুবিধা হয়, আমি তখন চিন্তা করি অ্যান্টেরিওক্রুশিয়েট লিগামেন্ট আহত হয়েছে। বলে, ডাক্তার সাহেব আমার হাঁটু ঘুরে যাচ্ছে, উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটতে গেলে হাঁটতে পারি না। মনে হচ্ছে হাঁটু ঘুরে যাবে। বসার পর উঠতে গেলে দেখা যায় কী যেন আটকে গেছে। তখন নাড়াচাড়া করতে গেলে হাঁটু ঠিক করতে হয়। এই ক্ষেত্রে আমি চিন্তা করি অ্যান্টিওক্রুশিট লিগামেন্ট বা মিনিস্কাট ইনজুরি হয়েছে। এগুলো হলো আমাদের ক্লিনিক্যালই ধারণা।
প্রশ্ন : এই জিনিসটি ঠিক করার জন্য আর্থোস্কোপির ভূমিকা কী?
উত্তর : আমরা অনেক সময় কোথাও ছিঁড়েছে কি না। না ছেঁড়া নিয়েও রোগী আসতে পারে। এতে তার অবস্থার কথা শুনে হাঁটুতে পরীক্ষা করে বুঝতে পারি। তখন এমআরআই করে শারীরিক ইতিহাস নিয়ে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাই এটা কমপ্লিট অথবা পারশিয়াল টিয়ার রয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন
কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন
জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন