হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়েছে যৌতুকলোভী এক পাষন্ড স্বামী!
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্ত্রীকে আগুনে পোড়ালো যৌতুকলোভী পাষন্ড স্বামী। কুমারখালী সদকী ইউনিয়নের কাঠালডাঙি গ্রামের অসহায় লাইলী’র (২১) বিয়ে হয়েছিল তিনবছর আগে কুমারখালীর কয়া গ্রামের সোবাহান শেখের পুত্র আমির শেখের সাথে।
গত ২১ জানুয়ারী লাইলী’র পাষন্ড স্বামী আমির শেখ যৌতুকের দাবীতে তার হাত বেধে কাপড়ে আগুন দিয়ে ঘর বন্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে লাইলির বাবার বাড়ির লোকজন ওই রাতেই লাইলী’কে উদ্ধার করে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এক দিন পর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও দুই দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বজনেরা জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিকেলে থাকতে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে যায় লাইলী’র বাপের বাড়ীর লোকজনের। ওষুধ ও ইনজেকশন কিনতে না পেরে ৩০ জানুয়ারি বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এখন বাড়িতেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন লাইলী।
চোখের সামনে দগ্ধ মেয়ের এমন নিদারুন যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে লাইলীর দরীদ্র অসহায় বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে এই প্রতিবেদককে বলেন ‘ এর চেয়ে মেয়েটা মরে গেলেও হয়তো অনেক শান্তি পেতো’ ।
অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ লাইলি খাতুন বলেন, বিয়ের সময় তাঁর বাবা কোনো টাকাপয়সা দিতে পারিনি বলে শ্বশুর-শাশুড়ি তাঁকে চেহারা খারাপ, কালো বলে গালি দিতেন। সাংসারিক নানা কারণে স্বামীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে স্বামীর পাশাপাশি তাঁর ভাসুর সজল একাধিবার তাঁকে মারধর করে।
গত ২১ জানুয়ারি গভীর রাতে আমির শেখ কয়েক দফায় শারীরিক নির্যাতন করে বাইরে চলে যায়। গভীর রাতে ঘরে আসে। তখনো শারীরিক নির্যাতনের যন্ত্রণায় কান্নাকাটি করছিলেন তিনি। পরে তাঁর গায়ের কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। এ ঘটনা তিনি (লাইলি) নিজেই ঘটিয়েছেন বলে প্রচার করতে বলেন, না হলে তাঁর এক বছরের মেয়ে অহনাকে হত্যার হুমকি দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক আকুল উদ্দিন বলেন, লাইলির অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর শরীরে ইনজেকশন পুশ করার মতো কোনো জায়গা নেই। প্রথমে থানায় মামলা না নিতে চাইলেও পরে লাইলির স্বামী আমির শেখকে (২৭) প্রধান আসামি করে নারী নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন রবিউল ইসলাম।
মামলায় শ্বশুর সোবাহান শেখ (৬৫), শাশুড়ি নুরজাহান খাতুন (৫২) ও ভাসুর সজলকে (২৯) আসামি করা হয়েছে। মামলা নং ১। তারিখ ০১/০২/২০১৭ ইং।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় লাইলী’কে তাঁর বাবার বাড়িতে দেখতে যাওয়া হয়েছিল। থানায় মামলা দিতে বলা হয়েছে। ওসিকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, যৌতুক ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। রাতেই আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হয়েছিল। বাড়িতে তাঁদের পাওয়া যায়নি।
এই পাষন্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছেন অসহায় লাইলীর পরিবার। অপরদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ (শুক্রবার) বিকাল ৩ টার সময় কুমারখালী বাসষ্ট্যান্ডে মহিলা পরিষদের উদ্যোগে এক মানব বন্ধনের আহবান করেছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঢাকা-খুলনা রেল আংশিক চালু হয়েছে সুদীর্ঘ্য ১২ ঘণ্টা পর !
অবশেষে প্রায় ১২ ঘন্টা পর কুষ্টিয়ার পোড়াদহে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ারবিস্তারিত পড়ুন
১৫ হাজার কলাগাছ কেটে ফেলল দুর্বৃত্তরা
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় হিজলাবট এলাকায় গড়াই নদের চরে কলাগাছ লাগিয়েছিলবিস্তারিত পড়ুন
কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু
বজ্রপাতে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খোলা মাঠে শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন