শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

হার্ট সুস্থ রাখতে হবে

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ‘হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হৃৎস্পন্দন বাড়াতে হবে।’ আর এই হৃৎস্পন্দন বাড়ানোর ভালো উপায় হচ্ছে ব্যায়াম। প্রযুক্তির উন্নতির কারণে এখন পরিশ্রমহীনতার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই প্রতিবেশীর সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় হয় মোবাইল ফোনে। ব্যস্ত জীবনে ব্যায়াম করার সময় বের করাও একটা কঠিন কাজ। আবার অনভ্যাসেও ব্যায়াম করা হয় না। কিন্তু নিজেকে সুস্থ রাখতে হলে এক-আধটু ব্যায়াম যে করতেই হবে। বিশেষ করে হার্ট যদি সুস্থ রাখতে চান।

ব্যায়ামের উপকারিতা
* দেহে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় ও কোষগুলোকে অক্সিজেন ব্যবহার করতে সহায়তা করে।
* হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে।
* ব্লাডপ্রেশার বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
* হার্ট ফেইলিওরের উপসর্গ কমায়।
* হার্টের পাম্প ক্ষমতা বাড়ায়।
* মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি ও হাড়কে শক্তিশালী করে।
* রক্তনালিতে অতিরিক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল জমা হতে দেয় না।
* রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ও দেহের কোষের ওপর ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
* শরীরের বাড়তি ওজন কমায়।
* কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে সহজে ক্লান্ত হওয়া, হাঁপিয়ে যাওয়া ইত্যাদি কমে যায়।
* ঘুম স্বাভাবিক ও আরামদায়ক হয়, শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূর হয়।
* দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা ও বিষণ্নতা কমে।

ব্যায়াম শুরুর আগে
হঠাৎ করে ব্যায়াম শুরু করলে হীতে বিপরীত হতে পারে। বিশেষ করে যাদের হার্টের অসুখ আছে। নিচের বিষয়গুলো মনে রাখুন।

* কিছু ওষুধ আছে যেগুলো ব্যায়ামের ফলে শারীরিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ, ডায়াবেটিসের ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ বা কোনো হরমোন থেরাপি নেন, তাঁরা ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আবার যাঁরা আগে থেকেই ব্যায়াম করতে অভ্যস্ত, তাঁদের ক্ষেত্রে এ ধরনের অসুখ হলে অবশ্যই ব্যায়ামের বিষয়টি ডাক্তারকে জানান। তাহলে ডাক্তার ব্যায়ামের ধরন, কতক্ষণ ধরে করতে হবে, কখন করতে হবে_এসব বিষয় ঠিক করে দিতে পারবেন।

* কোনো কোনো অসুখে হঠাৎ কোনো ব্যায়াম মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। যেমন_কারো যদি হার্ট ফেইলিওর থাকে বা হার্ট দুর্বল থাকে। এ ক্ষেত্রে অধিক পরিশ্রমের ব্যায়াম করা কোনো অবস্থায়ই ঠিক হবে না। ডায়াবেটিসে ভুগছেন ও ওষুধ খান বা ইনসুলিন নেন, তাঁরা হঠাৎ ব্যায়াম শুরু করলে ব্লাড সুগার আকস্মিকভাবে কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে আকস্মিক বিপদ হতে পারে।

* যেকোনো অপারেশনের পর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম শুরু করবেন। ভালো বোধ করলেই শরীর ব্যায়াম করার উপযুক্ত নাও হতে পারে।

* সব ব্যায়াম সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। অন্য কারো দেখাদেখি বা পরামর্শে যেকোনো ব্যায়ামে লিপ্ত হবেন না। যেমন_কারো যদি কোমরে ব্যথা বা সমস্যা থাকে, তবে ওয়েট লিফটিং জাতীয় ব্যায়াম করা ঠিক নয়। কারো যদি হাঁটুতে ব্যথা থাকে, তবে ট্রেডমিল বা সাইকেল আপনার জন্য উপযুক্ত হবে না।

* সব বয়সে সব ব্যায়াম করা যায় না। কারণ বয়স বাড়লে মাংসপেশির নমনীয়তা কমে ও হাড় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

হার্টের জন্য ব্যায়াম
স্বাভাবিক অ্যারোবিক ব্যায়াম সপ্তাহে ১৫০ মিনিট অথবা কঠিন ব্যায়াম ৭৫ মিনিট হার্টের দক্ষতা বাড়াবে। দৈনিক ২০-২৫ মিনিট ব্যায়াম করলে অথবা কেউ যদি সপ্তাহে পাঁচ দিন ১৫ মিনিট করে কঠিন শারীরিক কসরত করেন, তবে তাঁর হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকবে। অ্যারোবিক ব্যায়াম হচ্ছে হাঁটা, দৌড় বা জগিং, সাইকেল চালনা বা সাইক্লিং, সাঁতার বা ওয়াটার অ্যারোবিক, স্কেটিং ইত্যাদি। পাশাপাশি করতে পারেন কিছু স্ট্রেসিং।
হাঁটা_ শরীরের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এই অ্যারোবিক ব্যায়াম। সম্ভব হলে খোলা মাঠে হাঁটুন। না হলে যেখানে সুবিধা সেখানেই হাঁটার অভ্যাস করুন। প্রথমে স্বাভাবিক গতিতে হাঁটা শুরু করুন। ধীরে ধীরে হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিন। দেখবেন আগে ২০ মিনিটে যতটুকু হাঁটতে পারতেন ১৫ দিনের মাথায় ২০ মিনিটে তার চেয়ে অনেক বেশি হাঁটতে পারছেন ক্লান্ত না হয়েই। হাঁটার সময় অবশ্যই আরামদায়ক পোশাক ও জুতা ব্যবহার করবেন। বাইরে যাওয়ার জুতা বা স্যান্ডেল পড়ে হাঁটা অনেক সময় আরামদায়ক হয় না।

দৌড়_কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা না থাকলে দৌড় খুব ভালো ব্যায়াম, যা হৃদপেশির কর্মদক্ষতা অনেক বাড়ায়। একজন ৭০ কেজির মানুষ এক কিলোমিটার দৌড়ালে ১০০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় হয়। যাঁরা দৌড়ে অভ্যস্ত নন; কিন্তু দৌড়াতে চান তারা প্রথমে হাঁটা দিয়ে শুরু করুন। প্রতি দুই মিনিট হাঁটার পর এক মিনিট দৌড়ান। অতঃপর আস্তে আস্তে দৌড়ের সময় বাড়িয়ে দিন। যাঁরা নিয়মিত দৌড়ান তাঁদের রেস্টিং হার্ট রেট বা স্বাভাবিক সময়কালীন হৃৎস্পন্দন কম থাকে; অর্থাৎ তাঁদের হার্ট অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় রক্ত পাম্প করতে সক্ষম হয়।

সাঁতার_হৃৎপিণ্ডের জন্য খুব কার্যকর একটি ব্যায়াম। যাঁরা হাড় ও অস্থিসন্ধির সমস্যার জন্য হাঁটা বা দৌড়ে অপারগ তাঁদের ক্ষেত্রেও সাঁতার কার্যকর ব্যায়াম। এতে হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে মাংসপেশির নমনীয়তা বৃদ্ধি পায় ও পানির সানি্নধ্যে শরীরের ক্লান্তি এবং অবসন্নতা কেটে যায়। তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই হার্টের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের সাঁতারের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। কারণ সাঁতারের সময় অনেকেই হার্ট অ্যাটাকের শিকার হতে পারেন। তাই একা একা কখনোই সাঁতার কাটতে যাবেন না।
সাইকেল চালানো_সাইকেল চালালে একাধারে ব্যায়াম ও চলাচলের সমস্যারও সমাধান হয়। মাংসপেশি ও হৃদপেশির দক্ষতা বাড়ায়। একসঙ্গে বন্ধুরা মিলে সাইকেল চালালে বা কোনো ক্লাবের সদস্য হলে এ ব্যায়াম উপভোগ করা যায়।

যোগব্যায়াম_যাঁদের কোনো হার্টের সমস্যা নেই অথবা যাঁরা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন উভয়ের হার্টের জন্যই যোগব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী। যোগব্যায়াম শেখার জন্য কোনো সেন্টার, ভিডিও, মিডিয়া ইত্যাদির শরণাপন্ন হতে পারেন। যোগব্যায়াম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, রক্তচাপ কমায়, রক্তকণিকা তৈরি হওয়াকে প্রভাবিত করে, রক্তনালিতে চর্বি জমতে দেয় না ও ইলাস্টিসিটি বা সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বাড়ায়। মানসিক একাগ্রতা, মনোযোগ বাড়ায় এবং বিষণ্নতা দূর করে।
দৈনন্দিন ব্যায়াম_এমন কিছু ব্যায়াম আছে, যা ঠিক ব্যায়ামের তালিকায় পড়ে না; কিন্তু ব্যায়ামের মতোই শরীরে কাজ করে। এতে ব্যায়ামের মতোই উপকার পাওয়া যায়।

* সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা, লিফটের ব্যবহার যথাসম্ভব কম করা।
* অল্প দূরত্বে যেতে হেঁটে যাওয়া।
* বাড়িঘর পরিষ্কারের কাজ নিজেই করা।

ভুল ধারণা
বয়স্কদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই_বয়স্ক, প্রৌঢ় সবারই ব্যায়ামের প্রয়োজন আছে। তবে ব্যায়ামের সময় এত বেশি হাঁপিয়ে ওঠা যাবে না, যাতে কথা বলতে কষ্ট হয়।
হার্টের অসুখ হলে ব্যায়াম করা যাবে না_হার্টের সমস্যা হলেও ব্যায়াম করা যাবে। শুধু তাই নয়, ব্যায়াম করতেই হবে। তবে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ অনুসারে ব্যায়ামের সময়, ধরন ঠিক করে নিতে হবে। এমন স্থানে ব্যায়াম করবেন, যেখানে পরিচিত অনেকেই আছেন।
ব্যায়ামের জন্য জিমে যেতেই হবে_ব্যায়াম করতে হলে জিম বা ব্যায়ামাগারে যেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে কোনো হেলথ ক্লাব বা হাঁটার জন্য বন্ধু বা প্রতিবেশী সঙ্গে থাকলে ব্যায়ামের নিয়মানুবর্তিতা বজায় থাকে। না হলে আলস্যের কারণে অনেক সময় ব্যায়াম বাদ পড়ে।
ব্যায়াম নিয়মিত করলে খাবার নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন নেই_হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালি ভালো রাখতে হলে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না, তেল ও চর্বিজাতীয় খাবার, গরু ও খাসির মাংস, মগজ, ডিমের কুসুম, বেশি মিষ্টি, আইসক্রিম, চকোলেট, ফাস্ট ফুড পরিহার করে ব্যালান্সড ডায়েট খেতে হবে।

সতর্ক থাকুন
ব্যায়াম করার সময় কিছু উপসর্গ হঠাৎ দেখা দিলে তৎক্ষণাৎ ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে। যেমন-
* বুকে চাপ ধরা ব্যথা। বিশেষ করে যাদের ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ আছে তাদের ক্ষেত্রে।
* হঠাৎ মাথা ঘোরা শুরু হলে।
* হঠাৎ চোখে অন্ধকার দেখলে। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে।
* অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো হলে।
* প্রচণ্ড হাঁপিয়ে গেলে ও শ্বাসকষ্ট হলে।
* মাংসপেশিতে টান পড়লে।
* কোমরে হঠাৎ ব্যথা শুরু হলে।
* অন্যান্য দিন ব্যায়াম করার সময় যেমন ঘাম হয় তার চেয়ে অতিরিক্ত বেশি ঘেমে গেলে।
* অতিরিক্ত ক্লান্ত বোধ করলে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন

কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন

জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ

জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন

  • ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • কোন খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
  • ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে সহজ করবে : খাদ্য সচিব
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বিশ্বের শক্তিশালী এমআরআই মেশিনে মস্তিষ্কের প্রথম চিত্র প্রকাশ
  • H5N1 ভাইরাস ছড়াচ্ছে, কোভিডের চাইতে 100 গুণ বেশি বিপজ্জনক
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • তরমুজ খেলে কি সত্যিই ওজন কমে?