মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

‘হাসিনা পাগলি’র কান্নায় মুখ লুকায় স্বাধীনতা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা তুলতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন হাসিনা পাগলি। সেই যুদ্ধের সময় থেকে তিনি এ নামেই এলাকায় পরিচিত। কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হলেও যুদ্ধের সময় অনেক মুক্তিযোদ্ধার প্রাণ বাঁচিয়েছেন কৌশলে। অনেক সময় নিজের নিরাপত্তা ও সম্ভ্রমের কথা না ভেবে পাকসেনাদের আসার খবর জানাতেন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। ঝিনাইদহের মহেশপুরের যাদবপুর এলাকার যুদ্ধে অংশে নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান কোথা থেকে ডেকে নিয়ে আসলেন হাসিনা বেগমকে। বসালেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসের বারান্দায়।

বাজার সংলগ্ন বর্ডারগার্ড ক্যাম্পের পাশেই তার আবাস। পাশেই বেতনা নদী, যেখানে সংঘঠিত হয়েছিল ভয়াবহ যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধের স্থানটিতেই বসবাস করতে পচ্ছন্ন হাসিনার। পারিবারিক নানান কারণে যুদ্ধের আগ থেকেই হাসিনা ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন। কাজে ও কথায় অসংলগ্নতার কারণে যাদবপুর এলাকার মানুষ তাকে আদর করে হাসিনা পাগলী নামেই ডাকেন। তাদেরই সাহায্য সহযোগিতায় বেঁচে আছেন হাসিনা। সম্প্রতি তার জন্য বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধের ময়দানে রণ কৌশল বা সাধরণ জ্ঞান ছিল না হাসিনার। তারপরও দেশের স্বাধীনতার কথা হয়তো তিনি বুঝতেন। তা না হলে কেনই বা মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি পাক বাহিনী ও রাজাকারদের হাত থেকে বাঁচাবেন ? এ কারণেই মুক্তিযোদ্ধারা তাকে শ্রদ্ধা করেন, ভালবাসেন।

অনেকবার হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠলেও তা হয়নি। রণাঙ্গনের সেই ভয়াবহ স্মৃতির কথা জিজ্ঞেস করতেই হাসিনা অঝোরে কেঁদে বুক ভাসিয়ে দেন। উগরে দিলেন একরাশ কষ্ট। হাসিনা জানালেন, নদী তীরবর্তী গ্রাম যাদবপুর ভারতের সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম। পাশে আছে মধুপুর, ধন্যহাড়িয়া ও গোপালপুর। মহেশপুর দিয়ে সর্পিল গতিতে এঁকেবেঁকে ভারতের বনগাঁয় ঢুকেছে বেতনা নদী। যুদ্ধ হয় বেতনার দু’পাড়েই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। পাকিদের আক্রমণে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় মুক্তিবাহিনী। বেতনা নদীতীরের সেই দীর্ঘ যুদ্ধে প্রাণে বাঁচতে কচুরিপানা ভরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধা মো. সায়েদ আলী।

মাথায় পরা ছিলো হেলমেট। হাতে ছিল এলএমজি। এলএমজিটি আগে ফেলে দেন পানিতে। তারপর ঝাঁপিয়ে পড়েন নিজে। কিন্তু রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা বিষয়টি বুঝতে পারে। খোঁজ করতে থাকে সায়েদ আলীকে। এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় পাগলী হাসিনাকে পানিতে নামিয়ে খোঁজার। কারণ ওই এলাকায় সব সময় পাওয়া যেত হাসিনাকে। তাকে পানিতে নামিয়ে কেউ আছে কিনা খুঁজতে বলে। হাঁটুপানিতে নেমেই হাতড়ে সায়েদ আলীর মাথার ছোঁয়া পান পাগলী। তাৎক্ষণিক পাগলী তার পরনের সাদা ধুতির মতো শাড়ির নিচে লুকিয়ে ফেলেন সায়েদকে। বলেন, ‘এখানে কেউ নেই। তোমরা চলে যাও।’

কিন্তু পানির নড়চড়া দেখে সন্দেহ হয় রাজাকারদের। কিন্তু হাসিনা তাদের বোঝাতে থাকেন এখানে কেউ নেই। রাজাকাররা একটু সরে গেলে হাসিনাও উঠে পড়েন পানি থেকে। তখন সায়েদ ডুব দিয়ে দূরে সরে যাচ্ছিলেন। এমন সময় রাজাকাররা আবার উঁকি দিয়ে দেখতে পায় সায়েদকে। গুলি করতে উদ্যত হলে সায়েদ হাত উঁচিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় তিনমাস। পরে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে মিত্রবাহিনী যখন বিমান হামলা শুরু করে তখন কারাগারে আটক অন্যদের মতো সায়েদও কারাগার ভেঙে মুক্ত হন।

হাসিনা পাগলী যেভাবে শাড়ির নিচে লুকিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সায়েদকে প্রাণে বাঁচান, তার কোন স্বীকৃতি তিনি পান নি। হাসিনা পাগলীর কাহিনী নোবেল সাহিত্য বিজয়ী গ্যুন্টার গ্রাসের ধ্রুপদী উপন্যাস ‘টিন ড্রাম’ এর সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই হাসিনা পাগলীকে নিয়মিত সাহায্য সহযোগিতা করেন বর্তমানে কুয়েত প্রবাসী সায়েদ আলী। পাগলী তাকে দেখলেই বলে ওঠেন ‘তুই আমার ছেলে নাহ!’ একই যুদ্ধে পায়ে গুলি লেগে আহত হওয়া খলিলুর রহমান, মো. আব্দুর রহমানও জানেন সেদিনের ঘটনা। পাগলীকে তাই শ্রদ্ধা করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্যমতে, পাগলী ওই সময় নিয়মিত এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। সবসময় থাকতেন পথে প্রান্তরে। ফলে কখন পাকিস্থানীরা আসছেন তার খবর পৌছে দিতো দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। যুদ্ধের সময় গুলির খোসা কুড়ানো ছিল তার অন্যতম কাজ। ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতেন গুলির খোসা। তবে আশ্চর্য জনক হলেও সত্য যুদ্ধের সময় এতো গুলি তার আশপাশ দিয়ে চলে গেছে, তবুও তার গাঁয়ে কখনো লাগেনি। হাসিনার নাম ওঠেনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়, এতে তার দু:খ নেই। কিন্তু নিরন্তন সংগ্রাম তার অভাবের সাথে।

তিন বেলা তিনি দ’ুমুঠো খেতে চান। আর পরণে চাই সাদা সফেদ ধুতি। তাহলে এতেই তিনি খুশি। হাসিনা পাগলীর বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিসে কোন তথ্য নেই। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন জানান, বিষয়টি মহেশপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মালেকক গাজী ভাল বলতে পারবেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন

  • কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
  • সিলেটে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
  • চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • সিলেটে ৯ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
  • সকাল থেকে ঢাকায় বৃষ্টি
  • রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
  • ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
  • সিলেট বিভাগের বন্যা ভয়ঙ্কর রুপ নিচ্ছে
  • সবুজবাগে পরিবেশমন্ত্রীর সেলাই মেশিন বিতরণ