হিরোর চেয়েও দামি-চিত্রনাট্য
একসঙ্গে এমন কথাই বললেন ‘পাওয়ার’ ছবির দুই নায়িকা সায়ন্তিকা ও নুসরত জাহান। রাজীবকুমারের পরিচালনায় আগামী বাংলা নববর্ষে মুক্তি পাবে এই ছবি। দুই নায়িকারই বিপরীতে আছেন নায়ক জিৎ। ছবি মুক্তির আগে নানা কথায় সায়ন্তিকা ও নুসরত।
আগামী বাংলা নববর্ষে মুক্তি পাচ্ছে জিতের নতুন ছবি ‘পাওয়ার’। একদিকে যেমন এই প্রথম রাজীবকুমারের পরিচালনায় অভিনয় করলেন জিৎ তেমনি ছবিতে জিতের বিপরীতে অভিনয় করেছেন দুই নায়িকা-নুসরত জাহান ও সায়ন্তিকা। ইন্ডাস্ট্রির বাইরেও যাঁরা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নুসরত সম্পর্কে সায়ন্তিকার মন্তব্য, ‘নুসরত আমার বোন। প্রথমে আমরা ছিলাম বন্ধু। কিন্তু এখন আমরা মনে হয় এক পরিবারের সদস্য। আমরা পরস্পরের সম্পর্কে নানা ব্যক্তিগত সমস্যাও শেয়ার করি।’ আবার সায়ন্তিকা সম্পর্কে নুসরতের মন্তব্য, ‘মুম্বাইতে কী হয় বলতে পারব না। তবে টালিগঞ্জে আমি আর সায়ন্তিকা একটা উদাহরণ তৈরির চেষ্টা করেছি। ওই যে সবাই বলেন না, নায়িকারা কেউ কারও বন্ধু বা শুভাকাঙ্ক্ষী হয় না, আমরা সেই ধারণা ভেঙে দিতে চেষ্টা করছি। শুধু সায়ন্তিকা কেন, তনুশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি এবং আমরা সবাই মিলে টালিগঞ্জের মহিলা ব্রিগেডের মতো।’ ছবি মুক্তির আগে তাঁদের এই নতুন ছবি ও অভিনীত চরিত্র নিয়ে নানা কথা বললেন এই দুই নায়িকা- সায়ন্তিকা ও নুসরত জাহান।
• ছবিতে আপনাদের দু’জনের অভিনীত চরিত্র কেমন?
সায়ন্তিকা : আমি অভিনয় করেছি ‘অঞ্জলি’-র ভূমিকায়। অঞ্জলি গ্রহরত্ন বিক্রি করে। তার সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে ঠকাতেও সিদ্ধহস্ত। আর এই ব্যাপারে তার গুরু বলুন বা পার্টনার বলুন, সে হল কাঞ্চন মল্লিক অভিনীত চরিত্রটি। কাজেই একবার কল্পনা করুন, কাঞ্চনদার মতো একজন তুখোড় অভিনেতার সঙ্গে কমেডি অভিনয়ে পাল্লা দেওয়া কীরকম কঠিন। ছবি জুড়ে আমাকে সেটাই করতে হয়েছে।
নুসরত : আমার অভিনীত চরিত্রের নাম শ্রুতি। বেশ সিরিয়াস চরিত্র। একটা বৃদ্ধাবাস চালায় আর যেখানে যা অন্যায় ঘটে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বেশ শক্ত ধাতের মেয়ে। তবে তার সঙ্গে সঙ্গে শ্রুতির মধ্যে কোথাও একটা নরম জায়গাও আছে। আর সেটা আছে বলেই তো মানুষের প্রতি মানুষের বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে।
• আপনারা দুজনেই এর আগেও জিতের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। আগের জিৎ এবং এই ছবির অভিনেতা জিৎ- কোনো পার্থক্য চোখে পড়েছে?
সায়ন্তিকা : আমার প্রথম হিট ছবি ‘আওয়ারা’-তেই আমি আর জিৎদা একসঙ্গে কাজ করেছি। কাজেই এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে আওয়ারা-র নানা টুকরো স্মৃতির কথা মনে এসেছে। আমি আর জিৎদা তো শুটিংয়ের ফাঁকে সেইসব নিয়েই আলোচনা করে গেছি। আওয়ারা-তে একটা স্টেডিয়ামে আমরা একটা গানের দৃশ্য শুট করেছিলাম। আর এই ছবিতেও সেরকমই একটা সিকোয়েন্স আছে। তাই আওয়ারা-র স্মৃতিগুলো বড় বেশি মনে পড়ছিল। তবে একটা কথা বলতেই হয়, জিৎদার মধ্যে কোনও পরিবর্তন হয়নি। শুধু অভিনেতা হিসেবে আরও জমজমাট হয়েছে। বাকিটা সেই একই রকম আছে। অবশ্য জিৎদা বলেছে, অভিনেত্রী হিসেবে আমিও নাকি উন্নতি করেছি।
নুসরত : সেই পাঁচ বছর আগের কথা। আমার প্রথম ছবি ‘শত্রু’–তেই অভিনয় করেছি জিৎদার সঙ্গে। এই পাঁচ বছরে কতটা পাল্টেছে জিৎদা? খুব কঠিন প্রশ্ন। মানুষটা তো একই আছে। সহ-অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে ব্যাবহারটাও একইরকম। তবে অভিনয় নিয়ে জিৎদা এখন অনেক বেশি খুঁতখুঁতে। প্রত্যেকটা শট দেওয়ার পরেই সেটা বিশ্লেষণ করে। পারফেকশনের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছে যেতে চেষ্টা করে। অভিনয় করতে গিয়ে অনেক টিপস পেয়েছি জিৎদার কাছে। বলেছে আমারও নাকি অভিনয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে।
• এই ছবিতে তো দুই নায়িকা। এরকম ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে মনে হয় না আমার চেয়ে অমুকের অভিনীত চরিত্র বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে? এরকম তো শোনা গেছে, অতীতে অনেকেই এরকম মাল্টিস্টারার ছবিতে নিজের চরিত্রের গুরুত্ব বাড়াতে প্রভাব খাটিয়ে চিত্রনাট্যেও বদল এনেছেন।
সায়ন্তিকা : এইসব নিয়ে আমি একদমই ভাবি না। আওয়ারা-য় তো আমি একাই নায়িকা ছিলাম। সেই ছবিও ছিল সুপারহিট। আসলে এরকম মাল্টিস্টারার ছবিতে কাজ করতে আমার মোটেই আপত্তি হয়নি কোনওদিন। আর সাম্প্রতিক মুম্বই ছবির দিকে তাকিয়ে দেখুন সেখানেও তো বেশিরভাগই এরকম মাল্টিস্টারার ছবি। আসলে ছবির ভাবনাটাই এখন বদলে যাচ্ছে।
নুসরত : আমিও যখন অন্য কোনও নায়িকার সঙ্গে কোনও ছবিতে কাজ করি, ভাবি না কে একটা গানের দৃশ্য বেশি পেল বা আমার চেয়ে সে কতখানি স্ক্রিন স্পেস বেশি পেল। আমি শুধু কলটাইম মেনে কাজে যাই আর নিজের কাজটা মন দিয়ে করে ফিরে আসি।
সায়ন্তিকা : আর এটাই তো প্রথম নয়। এর আগে ‘হিরোগিরি’ ছবিতে আমি ছাড়াও আর এক নায়িকার ভূমিকায় ছিল কোয়েল মল্লিক। কিন্তু আমার অভিনীত চরিত্রটা ভাল লেগে গিয়েছিল। বেশ সিরিয়াস ক্যারেকটার। তখন আমার কাছে এই ধরনের সিরিয়াস ক্যারেকটার ছিল একটু নতুন। একটা ছবিতে মোট কতজন নায়ক বা নায়িকা থাকল তা মোটেই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না একজন অভিনেত্রীর পক্ষে। তাই অভিনেত্রী হিসেবে আমার কাছে প্রথম প্রায়োরিটি ছবির কনটেন্ট। হিরোর চেয়েও বেশি দামি-চিত্রনাট্য।
নুসরত : ঠিক তাই। আমিও মনে করি ছবির কনটেন্ট বা চিত্রনাট্যই আসল। আসলে যেই মুহূর্তে আপনি চিন্তা করবেন, আমার চেয়ে ও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বা ওকে কেন এটা দেওয়া হল, আমি পাচ্ছি না কেন- ঠিক সেই মুহূর্তে আপনি কিন্তু আপনার অভিনীত চরিত্র থেকে দূরে সরে যাবেন। যত বেশি ভাববেন, ততটাই দূরে সরে যাবেন। এই সব নেগেটিভ চিন্তার কোনও জায়গা নেই আমার জীবনে।
• সায়ন্তিকাকে জিজ্ঞেস করছি, এর আগে ২০১৪-তে মুক্তি পেয়েছে একটাই ছবি- ‘বিন্দাস’। ২০১৫-তেও একটা-‘হিরোগিরি’। এরকম একটা একটা কেন? এতে তো ছবির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। লোকে তো বলতেই পারে, সায়ন্তিকার হাতে কাজ কম?
সায়ন্তিকা : সে অনেকেই অনেক কথা ভাবতে পারেন। তবে আমি এইভাবে একটা একটা করেই এগোতে চাই। একসঙ্গে একাধিক ছবির কাজের চাপ আমি নিতে পারি না। আসলে ছবির চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার জন্য আমার কিছুটা সময় লাগে। শুটিংয়ের আগে অভিনীত চরিত্র নিয়ে হোমওয়ার্ক করতে পারলে কাজটা অনেক ভাল হয়। ওই যে একটা কথা আছে না, স্লো বাট স্টেডি উইন দ্য রেস, আমি সেভাবেই এগোতে চাই।
• নুসরতকে প্রশ্ন। বাংলা মূলধারার ছবি ছাড়াও অভিনয় করেছেন ‘হর হর ব্যোমকেশ’-এ। আপনার অভিনীত শকুন্তলাদেবী প্রশংসা পেয়েছে। পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জুলফিকার’-এ। এখন কি দুই ধারার ছবিতেই অভিনয় করে যেতে চান?
নুসরত : আমি মনে করি টিকে থাকতে গেলে একজন অভিনয় শিল্পীকে নিত্যনতুন এক্সপেরিমেন্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তার চেনা জগৎটাকে তাকে অতিক্রম করতেই হবে। অচেনা মাঠে খেলতে নামতে হবে। তাই সিনেমার প্রয়োজনে আইটেম নাচে অংশ নিতেও যেমন আমার আপত্তি নেই, তেমনি আপত্তি নেই অন্যধারার ছবিতে অভিনয় করতেও। শকুন্তলাদেবীর ভূমিকায় অভিনয় করে যেমন তৃপ্তি পেয়েছি তেমনি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি ‘জুলফিকার’-এ অভিনয় করতে গিয়ে। বলতেই হবে আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন ভূমিকায় অভিনয় করে ফেলেছি এই ‘জুলফিকার’-এ।
সূত্র: আজকাল
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন